‘বিভক্তি ও গুম-খুন দ্বারা কোনো জাতিকে দমিয়ে রাখা যায় না’
ইসলাম
পবিত্র রমজানের ১৭তম তারাবিতে তেলাওয়াত করা হবে ২০তম পারা। অর্থাৎ সূরা নমলের ৬০ নম্বর আয়াত থেকে সূরা আনকাবুতের ৪৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। আজকের তারাবির তেলাওয়াতকৃত অংশের বিশেষ প্রসঙ্গ হচ্ছে আল্লাহর নবী হজরত মুসা আলাইহিস সালাম।
সূরা কাসাসের শুরু থেকে ৪২ নম্বর আয়াত পর্যন্ত হজরত মুসা (আ.)-এর জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ আলোচনায় স্থান পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পবিত্র কোরআন হজরত মুসা (আ.)-এর বৃত্তান্ত শুরু করেছে তার জন্মের প্রেক্ষাপট দিয়ে। ইরশাদ হয়েছে, ‘ফেরাউন তার দেশে পরাক্রমশালী হয়েছিল এবং সে দেশবাসীকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে তাদের একটি দলকে দুর্বল করে দিয়েছিল। সে তাদের পুত্র সন্তানদের হত্যা করতো এবং নারীদের জীবিত রাখতো। নিশ্চয় সে ছিল অনর্থ সৃষ্টিকারী।’ -সূরা কাসাস: ৫
আলোচ্য আয়াতে ফেরাউনের চরিত্র বর্ণার মাধ্যমে মহান আল্লাহ যুগ-যুগান্তরের অত্যাচারী শাসকদের চরিত্র চিত্রায়িত করেছেন। সকল দেশের, সকল যুগের গণবিচ্ছিন্ন অত্যাচারী শাসক তাদের শোষণ চিরস্থায়ী করতে এ দুই চরিত্র ধারণ করে থাকে। জাতিকে বিভক্ত করে আর বিরুদ্ধবাদীদের হত্যা করে। একজন সফল, জনদরদী, প্রজাহিতৈষী ও কল্যাণকামী শাসকের লক্ষ্য থাকে জাতীয় সংহতি সুদৃঢ় করা। কিন্তু জনকল্যাণের পরিবর্তে নিজের কল্যাণে বিভোর শাসক জাতীয় সংহতি ও ঐক্য সুদৃঢ় করার পরিবর্তে বিদ্যমান সংহতি ও ঐক্যকে আরও বিনষ্ট করে। প্রজাদের পরস্পরের মধ্যে বিভেদ উসকে দিয়ে প্রজাদের বহু ধারায় বিভক্ত করে। বিভক্তিকে আরও সুদৃঢ় করে, দীর্ঘস্থায়ী করে। কখনও তা করে চেতনার নামে, কখনও তা করে দলের নামে, কখনও তা করে ভাষার নামে।
বিজ্ঞাপন
‘ভাগ করো, শাসন করো’-এটা মূলত ফেরাউনের মতবাদ। অপরদিকে একজন কল্যাণকামী শাসকের বৈশিষ্ট্য হলো- সমালোচকদের কথা শোনা, শত্রুকে আপন করে নেওয়া, নিরপেক্ষতার সঙ্গে পক্ষের বিপক্ষের সব নাগরিককে সমান রাষ্ট্রীয় সুযোগ ও অধিকার প্রদান করা। কিন্তু অত্যাচারী শাসক সবসময়ে থাকে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তটস্থ, গণবিদ্রোহে উৎখাতের ভয় তাকে সর্বদা তাড়া করে ফেরে তাই সে নিজেকে ক্ষমতায় চিরস্থায়ী করতে হত্যা ও গুমের পথ বেছে নেয়। নামে-বেনামে বিপক্ষের মানুষদের, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের, সমালোচকদের গুম ও হত্যার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এটা পৃথিবীতে নতুন নয়। সেই ফেরাউন থেকে এর সূচনা।
দুর্বল শাসকরা গুম করাকে সহজ মনে করে। আর সবল শাসকরা গুমের ঝামেলায় না যেয়ে প্রকাশ্যে হত্যার পথে হাঁটে। ফেরাউন বনী ইসরাইলদের দমন করার জন্য হত্যার পথ বেছে নেয়। এক দুই নয় হাজার হাজার ছেলে শিশুকে ফেরাউন হত্যা করতে থাকে। বনী ইসরাইলদের ঘরে কোনো নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ামাত্রই ফেরাউনের রাজসৈনিক চলে আসতো। নবজাতক দেখতো। ছেলে সন্তান পেলে সঙ্গে সঙ্গে হত্যা করতো।
আল্লাহতায়ালা তো আল্লাহই। তিনি একক, তিনি অমুখাপেক্ষী। তার ইচ্ছে কেউ বানচাল করতে পারে না। ‘দেশে যাদের দুর্বল করা হয়েছিলো, আমার ইচ্ছা হলো- তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার, তাদেরকে নেতা করার এবং তাদেরকে দেশের উত্তরাধিকারী করার এবং তাদেরকে দেশের ক্ষমতায় আসীন করার।’ -সূরা কাসাস: ৬
তিনি বনী ইসরাইলের এক শিশু মুসাকে ফেরাউনের ঘরে ফেরাউনের স্ত্রী ও দাসীদের মাধ্যমে ফেরাউনের অর্থায়নে ফেরাউনকে দ্বারাই লালন-পালন করালেন, সুবহানাল্লাহ।
আল্লাহতায়ালা দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে রাখলেন, ক্ষমতায় কেউ চিরস্থায়ী নয়, জুলুম করে কাউকে দমন করে রাখতে চাইলে আল্লাহতায়ালা তাকে ওপরে উঠাবেন, গুম-হত্যার দ্বারা দমন সফল হয় না। পৃথিবীর সকল জালেম শাসকদের জন্য এ সূরা একটি চূড়ান্ত নোটিশ।
দেওবন্দের ওলামায়ে কেরাম পূর্বসূরিদের অনুসৃত পন্থাকে গ্রহণ করেন। তাদের কাজ কেবল মাদরাসার চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো না। তারা শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। যেখানে ইসলামকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন পড়েছে, সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। বেদআতের প্রতিবাদে মুখ খুলেছেন। মানুষ তাদের কাফের বলেছে, কিন্তু তারা কাউকে কাফের বলেননি। দেশকে স্বাধীন করার প্রয়োজন হলে ইংরেজদের জেলে গিয়েছেন। যেকোনো প্রয়োজনে তারা ইসলামকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করেছেন।
‘দারুল উলুম দেওবন্দ কী জামে ওয়া মুখতাসার তারিখ’-এর বঙ্গানুবাদ ‘দারুল উলুম দেওবন্দ: ইতিহাস, ঐতিহ্য, অবদানের গৌরবদীপ্ত দেড় শতাব্দী’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আমিরুল হিন্দ আল্লামা সাইয়্যেদ আরশাদ মাদানি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করেন হজরত নানুতবী (রহ.) এবং দেওবন্দের একদল বিশিষ্ট বুজুর্গ। তাদের মধ্যে ছিলেন হজরত সাইয়্যেদ হাজী আবেদ হোসাইন (রহ.) এবং হজরত শায়খুল হিন্দ (রহ.)-এর পিতা মাওলানা যুলফিকার আলী (রহ.)। হজরত নানুতবী (রহ.)-এর যে ইলমী মর্যাদা ছিল, তা কারও ছিল না। তিনিই প্রথমে দেওবন্দে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দেওবন্দের আলেমদের সংগ্রামের ইতিহাস শুধুমাত্র এক-দু দিনের নয়, এটি প্রায় ১৫০ বছরের ইতিহাস- ১৮৬৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত। ইতিহাসে রয়েছে তাদের ত্যাগ ও কুরবানির কথা। তবে এসব ইতিহাস উর্দু ভাষায় লিখিত। যেহেতু বাংলাদেশে দেওবন্দের উলামায়ে কেরামের বড় একটি পরিমণ্ডল রয়েছে, যারা দেওবন্দে গেছেন বা দেওবন্দের ছাত্রদের থেকে জ্ঞানার্জন করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দেওবন্দের প্রকৃত ইতিহাস জানে না।
অনেকের ধারণা, দেওবন্দের ইতিহাস কেবল মাদরাসার মধ্যে পাঠদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বিষয়টি এমন নয়। যদি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনকে দেখা হয়, তবে দেখা যাবে তিনি শুধু শিক্ষকই ছিলেন না। তিনি কোরআন-হাদিসের জ্ঞান প্রচার করেছেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিয়েছেন।
‘দারুল উলুম দেওবন্দ কী জামে ওয়া মুখতাসার তারিখ’ এমনই উর্দুতে লিখিত একটি গ্রন্থ। দেওবন্দ মাদরাসার পক্ষ থেকে এটি বাংলায় অনুবাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যাতে দেওবন্দের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই ইতিহাস জানতে পারেন।
আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়াকে আমি এ গ্রন্থের একটি কপি এনে দিয়েছি। তিনি এই বইয়ের অনুবাদ করিয়েছেন। আল্লাহ তাকে এবং অনুবাদকদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুন, তাদের এই খেদমত কবুল করুন।
বইটি প্রকাশিত হয়েছে, এই বইয়ের মাধ্যমে দেওবন্দের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানা যাবে। আমাদের পূর্বসূরিদের খেদমতের কথা জানা জানা যাবে। তারা মাদরাসার চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ না থেকে ইসলাম যেখানে যে খেদমতের প্রয়োজন হয়েছে, সেখানেই জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।
আপনারা জানেন, ১৮৫৭ সালে যখন ভারতের দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ সংঘটিত হয়, প্রথমটি হয়েছিল ১৮৩২ সালে। ওই যুদ্ধে হজরত সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ (রহ.) এবং হজরত শাহ ইসমাঈল শহীদ (রহ.) উভয়ই শহীদ হন। এরপর ১৮৫৭ সালে দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। এই সময় দিল্লিতে তেত্রিশ হাজার আলেমকে ফাঁসি দেওয়া হয়। মীরাঠ, সাম্ভল, এবং এলাহাবাদসহ যেসব জায়গায় স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেখানেও আলেমদের হত্যা করা হয়।
হজরত গাঙ্গুহি (রহ.) এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাকে বন্দি করে জেলে পাঠানো হয়। হজরত নানুতবী (রহ.) ব্রিটিশদের হাত থেকে কোনোক্রমে রক্ষা পান। হজরত হাজী ইমদাদুল্লাহ (রহ.) কে গোপনে মক্কা মোকাররমায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়, কারণ তিনি ছিলেন সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ।
এমতাবস্থায় যখন সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলো, তখন আলেমরা বুঝতে পারলেন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গেছে। তেত্রিশ হাজার আলেমকে হত্যা করা হয়েছে। শহীদদের স্ত্রীরা ঘরে বিধবা হয়ে বসে আছেন, ছোট ছোট সন্তানরা এতিম হয়ে গেছে। বাবার অনুপস্থিতিতে মায়েরা সন্তানদের ভিক্ষা করতে পাঠাচ্ছেন, যাতে তারা ভিক্ষার খাবার নিয়ে এলে পরিবারের মুখে অন্ন জোটে।
এই সুযোগে ব্রিটিশ চার্চের লোকেরা এগিয়ে এসে মায়েদের বলত, ‘আপনার সন্তানকে আমাদের হাতে দিন। আমরা তাকে বিনামূল্যে পড়াশোনা করাবো, কাপড় দেবো, থাকার জায়গা দেবো। সে পড়াশোনা শেষ করার পর আমরা তাকে সরকারি চাকরি দেবো। এতে সে নিজেও ভালো থাকবে এবং আপনারাও ভালো থাকবেন।’ এই প্রলোভনে পড়ে অনেক মা সন্তানদের ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতেন।
আলেমরা লক্ষ্য করলেন, যাদের বাবারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহীদ হয়েছেন, ব্রিটিশরা এখন সেই সন্তানদের নিজেদের অনুগত বানাতে চাচ্ছে। তখন আলেমরা বসে চিন্তা করলেন এবং ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের নয় বছর পর, ১৮৬৬ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করলেন।
তারা বললেন, ‘আপনাদের সন্তানদের আমাদের কাছে দিন। আমরাও বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করব। আমরা তাদের পড়াবো, খাওয়াবো, পরিধানের বস্ত্র দিব এবং সেই শহীদদের সন্তানদের পুনরায় মুজাহিদ বানাবো।’
ব্রিটিশদের কাছে ছিল ক্ষমতা। তারা বলত, ‘আমাদের সাম্রাজ্যের কোথাও সূর্য অস্ত যায় না।’ তারা অর্থ-সম্পদ দিয়ে শিক্ষা দিলে দিতে পারত। কিন্তু দেওবন্দের আলেমরা ছিলেন আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তাদের কাছে এই কাজের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ ছিল না। তারা শুধু জাতিকে একটি বার্তা দিলেন- ‘আমরা একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছি। এটি যদি টিকে থাকে, তবে তোমরা টিকে থাকবে। তোমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম টিকে থাকবে। এটি যদি ধ্বংস হয়ে যায়, তবে তোমরাও ধ্বংস হবে, তোমাদের প্রজন্মও ধ্বংস হবে এবং ঈমানও অবশিষ্ট থাকবে না।’ ফলে দেখা গেল, যার যা ছিল, তা মাদরাসায় দান করে দিল।
এই একটি মাদরাসা থেকে আজ লক্ষাধিক মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে যাওয়া হয়, সেখানেই মাদরাসা দেখা যায়। এই মাদরাসাগুলো হয় দারুল উলুম দেওবন্দের সন্তান, নয়তো তার সন্তানের সন্তান। বাংলাদেশেও অসংখ্য মাদরাসা রয়েছে, যার প্রকৃত সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। এ সব মাদরাসা দারুল উলুম দেওবন্দের ঐতিহ্যের ধারক।
দেওবন্দের আলেমরা একটি নীতি স্থির করেছিলেন- কোনো সরকার বা ক্ষমতাশালী ব্যক্তির অর্থে মাদরাসা পরিচালিত হবে না। এটি হজরত গাঙ্গুহি (রহ.), হজরত নানুতবী (রহ.), এবং হজরত শায়খুল হিন্দ (রহ.)-এর অনুপম নীতি-আদর্শ। এই নীতির কারণেই দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষাপদ্ধতি আজও অক্ষত। তাদের শিক্ষাব্যবস্থা আজও সংরক্ষিত।
দারুল উলুম দেওবন্দের দীর্ঘ গৌরবময় এই ইতিহাস এই বইয়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে। যারা এই বই রচনায় ও অনুবাদে অবদান রেখেছেন, আল্লাহ তাদের কাজ কবুল করুন।
মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সে ১০ মাস সময়ে মায়ের কাছে কোরআন মাজিদের হেফজ সম্পন্ন করার বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। বর্তমানে তার বয়স ৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন।
বিস্ময়কর এই হাফেজে কোরআনের শিক্ষক তারই মা। হেফজের সময় আহমাদ কোরআন মাজিদের বাংলা অর্থও শিখেন, যা তার প্রতিভার আরও একটি প্রমাণ।
বিশ্বখ্যাত কারি শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আজহারীর মতে, এই বয়সে হেফজ সম্পন্ন করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। ইরান বা আলজেরিয়ায় ৫ বছর বয়সে হিফজের দৃষ্টান্ত থাকলেও আহমাদের মতো সাড়ে চার বছরে এ অর্জন অভূতপূর্ব। আহমাদ তার হেফজ সম্পন্ন করতে সময় নিয়েছে মাত্র ১০ মাস ১৮ দিন।
আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুমের বাবা টিভি উপস্থাপক মাসুম বিল্লাহ বিন রেজা। সন্তানের এমন সাফল্যে আল্লাহতায়ালার দরবারে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, সন্তানের এ অর্জন শুধু গর্বের নয়, দায়িত্বেরও।
হাদিস ফাউন্ডেশন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আবদুল্লাহ ছাকিব বলেন, বাবা-মায়ের সঙ্গে এই বিস্ময় শিশু যখন আমার মারকাযে (মাদরাসা) বেড়াতে আসে, তখন আমি নিজেই স্তব্ধ হয়ে যাই। শুধু কোরআন হেফজ নয়, সে কোরআনের শব্দার্থও শিখে নিয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় ঝরঝরে রিডিং করতে পারে। আরবিতে তার স্পিকিং দক্ষতা অসাধারণ। সব মিলিয়ে এটি এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা।
ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ শায়খ শরিফ আবু হানিফ বলেন, আল্লাহর বড় মেহেরবানি। বিনয়ের সঙ্গে আল্লাহর শোকর আদায় করি। কারও বদনজর যেন না পড়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ সংবাদ শুনেই সবাই মাশাআল্লাহ পড়বেন। তার জন্য দোয়া করবেন। সকল জ্বীন-ইনসানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ ওকে হেফাজত করুন।
রাজধানীর গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী বলেন, কোরআনে কারিম আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য শ্রেষ্ঠ মুজেজা ও অলৌকিক বিষয়। আল্লাহর বিশেষ তওফিকের ফলেই এই ছোট্ট শিশুটি অতি অল্প বয়সে অল্প সময়ে কোরআনের কারিমের হেফজ করতে পেরেছে। আমার জানামতে এত অল্প বয়সে ও অল্প সময়ে কোরআন হেফজ করার সৌভাগ্য বিশ্বের মাঝে আমাদের বাংলাদেশের এই ছোট্ট শিশুটি করেছে। আল্লাহ তাকে বিশ্বসেরা আলেম হিসেবে কবুল করেন।
আহমাদের ছবি পরিবার প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক, তাই তার ছবি প্রকাশ করা হলো না।
হজ করা ফরজ হওয়া সত্ত্বেও শরিয়ত নির্দিষ্ট কারণে অপারগ হলে অন্য কাউকে পাঠিয়ে যে হজ আদায় করা হয়, তা ইসলামের পরিভাষায় বদলি হজ নামে পরিচিত। বদলি হজ শর্তসাপেক্ষে বৈধ। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে।
বদলি হজ কখন করাবেন ধরুন, হজ ফরজ ছিল কিন্তু শারীরিকভাবে সমর্থ থাকতে হজ করেননি। এখন শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন, এখন আপনার পক্ষ থেকে অন্য কাউকে হজ করতে পাঠানো আপনার জন্য ফরজ। তা করতে না পারলে মৃত্যুর সময় বদলি হজের অসিয়ত করে যাওয়া আবশ্যক।
এক নারী নবী কারিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার বাবার হজ ফরজ হয়েছে, কিন্তু বুড়ো হয়ে যাওয়ায় তিনি স্থির হয়ে বসতেই পারেন না, এখন আমি তার পক্ষে হজ করতে পারব? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ।’ -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
কখন অক্ষম বিবেচিত হবেন চার কারণে আপনি হজ করতে অক্ষম বলে বিবেচিত হবেন। তখন আপনার পক্ষে অন্য কাউকে হজ করতে পাঠাতে পারবেন। এক. বেশি অসুস্থ কিংবা বুড়ো হয়ে গেলে, নিজের শক্তিতে বাহনে ওঠার সক্ষমতা হারিয়ে ফেললে এবং তা থেকে মুক্তির কোনো সম্ভাবনাই না থাকলে। দুই. জোর করে কেউ আপনাকে আটকে রাখলে এবং হজ করতে না দিলে। তিন. যাওয়ার পথ অনিরাপদ হলে। চার. নারীর ক্ষেত্রে হজে যাওয়ার জন্য মাহরাম পুরুষ সঙ্গে না পেলে। -মানাসিক লি-মোল্লা আলি কারি
তবে শেষোক্ত তিন কারণের ক্ষেত্রে শর্ত হলো- এসব বাধা মৃত্যু পর্যন্ত স্থায়ী হতে হবে। কারণ, এসব সমস্যা মৃত্যুর আগে সমাধা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং আপনি যদি এই তিন কারণে বদলি হজ করিয়ে ফেলেন এবং পরে সেই বাধা দূর হয়, তাহলে আপনার বদলি হজটি নফল হয়ে যাবে এবং আবার হজ করতে হবে। -আল বাহরুর রায়েক
মৃত্যুর আগে অসিয়ত না করলে আপনার জন্য হজ ফরজ ছিল, কিন্তু আদায় করেননি। বদলি হজ করার জন্য অসিয়তও করেননি। এখন আপনার মৃত্যুর পর যদি ওয়ারিশেরা আপনার পক্ষে বদলি হজ করে, তবে তা আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট হবে কি না নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে তা আপনার পক্ষ থেকে কবুল হওয়ার আশা করা যায়। ওপরে বর্ণিত হাদিসে থেকে বিষয়টি আঁচ করা যায়।
তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো- ওয়ারিশদের সবার স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদন লাগবে এবং কেউ অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকলে তার ভাগের সম্পদ থেকে কিছুই নেওয়া যাবে না। -আদ্দুররুল মুখতার
বদলি হজের খরচ কে বহন করবে যার পক্ষ থেকে হজ করা হবে, তাকেই খরচ বহন করতে হবে। অসিয়ত করে গেলে প্রথমে তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ আদায় করতে হবে। এরপর অসিয়তের বিধান অনুযায়ী বাকি সম্পদ তিন ভাগ করতে হবে। এর মধ্যে এক ভাগ থেকে অসিয়তের অংশ নিতে হবে। হজের অসিয়ত করে গেলে সেই খরচও এই অংশ থেকে নিতে হবে। হজরত আলী (রা.) অশীতিপর বৃদ্ধ সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি তার পক্ষ থেকে খরচ দিয়ে কাউকে হজ করাবেন।’ -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা
বদলি হজের জন্য মজুরি নেওয়া বদলি হজের জন্য মজুরি নেওয়া নাজায়েজ। কারণ ইবাদতের বিনিময়ে কোনো মজুরি নেওয়া যায় না। কেউ দিলে এবং নিলে দুজনেই গোনাহগার হবেন। হজের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের বাইরে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। অবশ্য মজুরি নিয়ে হজে গেলে হজ আদায় হয়ে যাবে। -আল বাহরুল আমিক
অবশ্য যার হয়ে বদলি হজ করা হচ্ছে তিনি অধিকাংশ খরচ দিলে এবং বদলি হজকারী কিছু নিজের পকেট থেকে খরচ করলেও অসুবিধা নেই। তবে এ ক্ষেত্রে বদলি হজকারী খরচের পুরোটা বহন করলে বদলি হজ আদায় হবে না। -সুনানে বায়হাকি
খরচের টাকা বদলি হজকারীকে হাদিয়া দিলে টাকা-পয়সার হিসাবের ঝামেলা এড়ানোর জন্য হজে পাঠানো ব্যক্তি যদি বদলি হজকারীকে বলেন- আপনাকে পুরো টাকা হাদিয়া হিসেবে দিলাম, তাহলে এই টাকা দিয়ে বদলি হজ আদায় হবে না। কারণ হাদিয়া দেওয়ার কারণে বদলি হজকারী ওই টাকার মালিক হয়ে যান। আর তার টাকা দিয়ে বদলি হজ সহিহ হবে না। তাই প্রেরকের মালিকানায় রেখেই তাকে হজে পাঠাতে হবে। আর টাকা-পয়সার ঝামেলা এড়াতে বড়জোর বলা যেতে পারে- কিছু টাকা বাকি থেকে গেলে ফেরত দিতে হবে না। -যুবদাতুল মানাসিক
বদলি হজকারী নিজ দেশের হতে হবে যিনি বদলি হজ করবেন, তিনি প্রেরকের নিজ দেশের বাসিন্দা হতে হবে। অন্য দেশে অবস্থানকারী কাউকে বদলি হজের জন্য পাঠালে হজ আদায় হবে না। -গুনইয়াতুন নাসিক
তবে মৃতের অসিয়ত না থাকলে বা অসিয়ত আছে কিন্তু তার রেখে যাওয়া সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে নিজ দেশ থেকে হজে পাঠানোর মতো খরচ জোগাড় না হয়, তাহলে যে দেশের বাসিন্দাকে দিয়ে হজ করা সহজ হয়, সেই দেশ থেকে কাউকে নিয়োগ করতে পারবেন। -আল বাহরুল আমিক
নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে অসিয়ত করলে বদলি হজ করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির নাম বলে গেলে এবং তাকে ছাড়া অন্য কাউকে না পাঠানোর অসিয়ত করলে সেই ব্যক্তিকে দিয়েই হজ করাতে হবে। তবে অন্য কাউকে পাঠানো যাবে না- এমনটি না বললেও যার নাম বলা হয়েছে, তাকে পাঠানোই উত্তম। তাকে পাঠানো সম্ভব না হলে অন্য কাউকে পাঠাতে হবে। অবশ্য প্রথম ব্যক্তি রাজি থাকা সত্ত্বেও অন্য কাউকে পাঠালেও হজ আদায় হয়ে যাবে। -আল বাহরুল আমিক
বদলি হজে কেমন ব্যক্তি পাঠানো উচিত হজ করেছেন এমন নেককার ব্যক্তিকেই বদলি হজের জন্য পাঠানো উচিত। হজ করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানোও বৈধ। তবে হজ ফরজই হয়নি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহে তানজিহি। আর হজ ফরজ হয়েও আদায় করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহ তাহরিমি তথা নাজায়েজ। তবে এমন কাউকে পাঠালেও হজ আদায় হয়ে যাবে। -সুনানে আবু দাউদ
মানত হজের বদলি করা হজ করার মানত করেছেন, কিন্তু শারীরিক অক্ষমতার কারণে যেতে পারছেন না, তার জন্যও বদলি হজ করানো যাবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, জুহাইনা গোত্রের এক নারী রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘আমার মা হজের মানত করেছিলেন। কিন্তু হজ আদায় করার আগেই মারা গেছেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব? রাসুল (সা.) জবাবে বললেন, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ করো। যদি তোমার মায়ের কোনো অনাদায়ি ঋণ থাকত, তাহলে তুমি কি তা পরিশোধ করতে না? আল্লাহর ঋণও আদায় করো। আল্লাহর ঋণ আরও বেশি আদায়যোগ্য।’ -সহিহ বোখারি
অনেকেই জানতে চান, গোনাহ থেকে বাঁচার জন্য কাজি অফিসে না গিয়ে দুজন সাক্ষীর সামনে বিয়ে পড়িয়ে ঘর-সংসার করা বিষয়ে। অর্থাৎ পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করে গোপনে সংসার করা শুদ্ধ কিনা? অনেকেই আরও বলেন, পরবর্তীতে কর্মজীবনে গিয়ে জানাবো বিয়ের কথা ইত্যাদি ইত্যাদি।
ইসলামি স্কলাররা বলেন, বিয়ের সঠিক সময় এবং সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে- উপযুক্ত বয়সে স্ত্রীর ভরণ পোষণের ক্ষমতা অর্জনের পর পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত পাত্রীকে বিয়ে করা।
সময়ের পূর্বে পিতা-মাতার অজান্তে বিয়ে করা একেবারেই অনুচিত। কেননা তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনে। এক্ষেত্রে এখন করণীয় হচ্ছে, পরিণত বয়সে পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিয়ে করা এবং সকল প্রকার অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকা।
তবে কেউ যদি কমপক্ষে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করে ফেলে, তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।
কিন্তু সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা সম্পূর্ণ অনুচিত। কারণ এমন সম্পর্ক বকে সময় ভেঙে যায়, পরে এটা নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা থেকে শুরু করে নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। অনেক সময় হত্যার মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটে। তাই সাবধান হওয়া জরুরি। এমন বিয়ের দায়িত্বহীন কাজ।
আর দায়-দায়িত্বহীনভাবে গোপনে বিয়ে করা শরিয়তের দৃষ্টিতে পছন্দনীয় নয়। তাছাড়া মেয়ের অভিভাবকদের না জানিয়ে বিয়ে করা তার জন্যও চরম ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ইসলামি-শরিয়তে ছেলে এবং মেয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার একটাই পদ্ধতি–বিয়ে। আর বিয়ের সঠিক সময় এবং সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে উপযুক্ত বয়সে স্ত্রীর ভরণ পোষণের ক্ষমতা অর্জনের পর পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত পাত্রীকে বিয়ে করা।
পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সময়ের পূর্বে অভিবাবকের অজান্তে বিয়ে করা একেবারেই অনুচিত। ইসলামি-শরিয়তে এ ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কেননা তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনে। এক হাদিসে ইরশোদ হয়েছে, ‘তোমরা বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করো এবং প্রস্তাবনার বিষয়টি গোপন রাখো।’
অন্য হাদিসে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা বিয়ের ঘোষণা করো।’ ‘বিয়ের ঘোষণা করা’ মানে ‘বিয়ের সাক্ষী রাখা’ অধিকাংশ আলেমের নিকট ওয়াজিব। বরং এটি বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম একটি শর্ত। যেহেতু নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অভিভাবক ও দুইজন ন্যায়বান সাক্ষী ব্যতীত কোনো বিয়ে নাই।’ -সুনানে বায়হাকি
অন্যদিকে কিছু কিছু আলেম হিংসুটে মানুষের ভয়ে বিয়ের প্রস্তাবনার বিষয়টি গোপন রাখাকে মোস্তাহাব বলেছেন, যারা প্রস্তাবকারী ও পাত্রীর পরিবারের মাঝে কুৎসা রটনার চেষ্টা করে- যেমনটি এসেছে। এ অভিমতের পক্ষে সমর্থন যোগায় নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ হাদিস। ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজনগুলো সফল হওয়ার ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষার মাধ্যমে সাহায্য চাও। কেননা প্রত্যেকটি নেয়ামত হিংসার পাত্র।’
তবে এ বিধানটি কেবল বিয়ের প্রস্তাবনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। বরং যে ব্যক্তি কারও প্রতি আল্লাহর কোনো নেয়ামত দেখলেই তাকে হিংসা করে তার সামনে সেটি প্রকাশ করা উচিত নয়।