গোপনে বিয়ে করা যাবে?

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গোপনে বিয়ে অনুচিত, ছবি: সংগৃহীত

গোপনে বিয়ে অনুচিত, ছবি: সংগৃহীত

অনেকেই জানতে চান, গোনাহ থেকে বাঁচার জন্য কাজি অফিসে না গিয়ে দুজন সাক্ষীর সামনে বিয়ে পড়িয়ে ঘর-সংসার করা বিষয়ে। অর্থাৎ পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করে গোপনে সংসার করা শুদ্ধ কিনা? অনেকেই আরও বলেন, পরবর্তীতে কর্মজীবনে গিয়ে জানাবো বিয়ের কথা ইত্যাদি ইত্যাদি।

ইসলামি স্কলাররা বলেন, বিয়ের সঠিক সময় এবং সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে- উপযুক্ত বয়সে স্ত্রীর ভরণ পোষণের ক্ষমতা অর্জনের পর পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত পাত্রীকে বিয়ে করা।

বিজ্ঞাপন

সময়ের পূর্বে পিতা-মাতার অজান্তে বিয়ে করা একেবারেই অনুচিত। কেননা তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনে। এক্ষেত্রে এখন করণীয় হচ্ছে, পরিণত বয়সে পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিয়ে করা এবং সকল প্রকার অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকা।

তবে কেউ যদি কমপক্ষে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করে ফেলে, তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা সম্পূর্ণ অনুচিত। কারণ এমন সম্পর্ক বকে সময় ভেঙে যায়, পরে এটা নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা থেকে শুরু করে নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। অনেক সময় হত্যার মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটে। তাই সাবধান হওয়া জরুরি। এমন বিয়ের দায়িত্বহীন কাজ।

আর দায়-দায়িত্বহীনভাবে গোপনে বিয়ে করা শরিয়তের দৃষ্টিতে পছন্দনীয় নয়। তাছাড়া মেয়ের অভিভাবকদের না জানিয়ে বিয়ে করা তার জন্যও চরম ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ইসলামি-শরিয়তে ছেলে এবং মেয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার একটাই পদ্ধতি–বিয়ে। আর বিয়ের সঠিক সময় এবং সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে উপযুক্ত বয়সে স্ত্রীর ভরণ পোষণের ক্ষমতা অর্জনের পর পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত পাত্রীকে বিয়ে করা।

পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সময়ের পূর্বে অভিবাবকের অজান্তে বিয়ে করা একেবারেই অনুচিত। ইসলামি-শরিয়তে এ ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কেননা তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনে। এক হাদিসে ইরশোদ হয়েছে, ‘তোমরা বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করো এবং প্রস্তাবনার বিষয়টি গোপন রাখো।’

অন্য হাদিসে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা বিয়ের ঘোষণা করো।’ ‘বিয়ের ঘোষণা করা’ মানে ‘বিয়ের সাক্ষী রাখা’ অধিকাংশ আলেমের নিকট ওয়াজিব। বরং এটি বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম একটি শর্ত। যেহেতু নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অভিভাবক ও দুইজন ন্যায়বান সাক্ষী ব্যতীত কোনো বিয়ে নাই।’ -সুনানে বায়হাকি

অন্যদিকে কিছু কিছু আলেম হিংসুটে মানুষের ভয়ে বিয়ের প্রস্তাবনার বিষয়টি গোপন রাখাকে মোস্তাহাব বলেছেন, যারা প্রস্তাবকারী ও পাত্রীর পরিবারের মাঝে কুৎসা রটনার চেষ্টা করে- যেমনটি এসেছে। এ অভিমতের পক্ষে সমর্থন যোগায় নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ হাদিস। ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজনগুলো সফল হওয়ার ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষার মাধ্যমে সাহায্য চাও। কেননা প্রত্যেকটি নেয়ামত হিংসার পাত্র।’

তবে এ বিধানটি কেবল বিয়ের প্রস্তাবনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। বরং যে ব্যক্তি কারও প্রতি আল্লাহর কোনো নেয়ামত দেখলেই তাকে হিংসা করে তার সামনে সেটি প্রকাশ করা উচিত নয়।