বদলি উমরা আসলে কী?

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

উমরা যাত্রী, ছবি: সংগৃহীত

উমরা যাত্রী, ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে হজ একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। হজের পাশাপাশি উমরাও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত। তবে শারীরিক বা আর্থিক অক্ষমতার কারণে কেউ যদি নিজে হজ বা উমরা পালন করতে অক্ষম হন, তাহলে তার পক্ষ থেকে বদলি হজ বা উমরা করার বিধান সম্পর্কে ইসলামে বিশেষ আলোচনা রয়েছে।

ফিকাহশাস্ত্র মতে, মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে বদলি হজ ও উমরা করা বৈধ। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা একেবারে বৃদ্ধ। তিনি হজ ও উমরা করার শক্তি রাখেন না। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার পিতার পক্ষ থেকে তুমি হজ ও উমরা করো।’ -জামে তিরমিজি : ৮৫২

বিজ্ঞাপন

বর্ণিত হাদিস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, জীবিত বা মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে উমরা করা যায়। একইসঙ্গে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.) বলেন, ‘যে কোনো নেক আমল সম্পাদন করে যদি তার সওয়াব জীবিত বা মৃতের জন্য দান করা হয়, তবে তা বৈধ এবং উপকারে আসে। তবে এক্ষেত্রে, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করাকেই বেশি ফজিলতপূর্ণ মনে করা হয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে এসেছে, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তিনটি আমল ছাড়া তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়- সদকায়ে জারিয়া, উপকারী ইসলামি বিদ্যা এবং সৎ সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। -সহিহ মুসলিম : ১৬৩১

এ হাদিসে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করাকেই বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও অন্য নেক আমল তার জন্য দান করা যায়, তবে দোয়া করার গুরুত্ব এখানে প্রাধান্য পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া মতে, জীবিত ব্যক্তির পক্ষ থেকেও বদলি উমরা করা যায়। তবে এক্ষেত্রে ইহরাম বাঁধার সময় যার পক্ষ থেকে উমরা করা হচ্ছে, তার জন্য নিয়ত করতে হবে এবং তালবিয়াও তার পক্ষ থেকে পড়তে হবে।

করাচির জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়ার ফতোয়া বিভাগ অনুযায়ী, ইসলামে বদলি হজের স্পষ্ট বিধান থাকলেও উমরা করার ক্ষেত্রে সরাসরি নির্দেশনা নেই। তবে নিজের পক্ষ থেকে উমরা করে এর সওয়াব যে কাউকে পৌঁছানো সম্ভব।

আর তা মৃত ও জীবিত উভয়ের জন্যই করা যায়। তবে শরিয়া মোতাবেক সঠিক নিয়ম ও নিয়ত অনুযায়ী এটি পালন করতে হবে। পাশাপাশি, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করাকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়েছে।

তাই জীবিতদের জন্য উচিত, নেক আমল করার পাশাপাশি দোয়া ও ইস্তেগফার বেশি বেশি করা।

ইসলামি স্কলাররা বলেন, যখন কোনো কাজ কোনো ব্যক্তির ওপর বাধ্যতামূলক হয়ে যায় কিন্তু সে কোনো ওজরের (সমস্যা) কারণে করতে পারছে না তখন অনেক ক্ষেত্রে তাকে বদলি কাউকে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু যে কাজ বাধ্যতামূলক নয় বরং ঐচ্ছিক তাতে তো বদলী দেওয়ার কোনো রেওয়াজ নেই বা ভাষাগতভাবেও সে সুযোগ নেই।

হজ বাধ্যতামূলক ইবাদত, তাই তার বদলি হয়। আবার নামাজ, রোজা বাধ্যতামূলক হলেও তার বদলির নিয়ম নেই। উমরা তো বাধ্যতামূলক কোনো ইবাদত নয় তাই এর বদলিও হতে পারে না।

তবে যাদের সামর্থ্য আছে তারা অন্যকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে উমরা করার সুযোগ করে দিতে পারে। যা একটি মহৎ কাজ, এটা মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের একটি বড় মাধ্যম হতে পারে।