কমল কর্মঘণ্টা: সপ্তাহে চার দিন কাজ, ৩ দিন ছুটি!

  • ফিচার ডেস্ক,বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যে কর্মসপ্তাহকে ঢেলে সাজানোর এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। দেশটির শতাধিক প্রতিষ্ঠান কোনো বেতন না কেটেই সব কর্মীদের জন্য সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবস চালু করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ৫ হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতি নির্ধারকেরা আশা করছেন, তাদের এ উদ্যোগ দেশে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবসের সমর্থকেরা বলেছেন, সপ্তাহে পাঁচ দিন কর্মদিবসের প্রথাটি বহু পুরোনো। এ প্রথা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। চার দিন কর্মদিবস চালু হলে বরং প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা বাড়বে।

ফোর ডে উইক ফাউন্ডেশনের প্রচারণা পরিচালক জো রাইল বলেছেন, শত শত ব্রিটিশ কোম্পানি ও একটি লোকাল কাউন্সিল ইতিমধ্যেই সপ্তাহে চার কর্মদিবসের রীতি চালু করেছে। এতে করে কর্মী ও মালিক কারোই ক্ষতি হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, হাতে ৫০ শতাংশ বেশি অবসর সময় থাকা মানে সপ্তাহে তিন দিন মানুষ সুখী ও পরিপূর্ণ জীবনযাপনের স্বাধীনতা পাবে।

গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের নানা দেশে কর্মক্ষেত্রে সপ্তাহে কার্যদিবস কমানো নিয়ে আলোচনা চলছে। করোনা মহামারি চলাকালীন লাখো কর্মী ঘরে বসে কাজ করায় কার্যদিবস কমানোর বিষয়টি আরও জোরদার হয়ে উঠেছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হয়।

বিজ্ঞাপন

করোনাকালীন সময়ে পরীক্ষামূলকভাবে ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করেছিল যুক্তরাজ্য। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই এখন চার দিন কর্মসপ্তাহের নিয়মটিকে স্থায়ী করেছে।

ফোর ডে উইক ক্যাম্পেইন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি চলতি বছরের শেষের দিকে সরকারিভাবে স্পেন ও স্কটল্যান্ডেও একই ধরনের প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে।

গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত বছর যুক্তরাজ্যের ৬১টি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলকভাবে ৬ মাসের জন্য সপ্তাহে চার দিনের কর্মদিবস চালু করেছিল। এক বছর পর এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪টি প্রতিষ্ঠান নিয়মটি এখনো চালু রেখেছে। অন্যদিকে ৩১টি প্রতিষ্ঠান ছয় মাস পরই নিয়মটিকে স্থায়ী করেছে।

পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ৫৫ শতাংশ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেছেন, সপ্তাহে চার দিন অফিস চালু করার পর দেখা গেছে, কর্মীরা ৮০ শতাংশ সময়ের মধ্যেই তাদের শতভাগ কাজ সেরে ফেলেন। এই নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

এছাড়া ৮২ শতাংশ কর্মী বলছেন, তারা আগের চেয়ে বেশি সুস্থতা বোধ করেন। এই নতুন নিয়ম তাদের স্বাস্থ্যের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তাদের কর্মীদের চাকরি ছাড়ার হার কমেছে। ৩২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তাদের কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উন্নতি হয়েছে। আর ৪৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তাদের কর্মীদের উৎপাদনশীলতার উন্নতি হয়েছে।