নাটোরের তেবাড়িয়া হাটের ঐতিহ্য ১ কেজি ওজনের নৌকারুটি

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসে আছেন পাউরুটি নিয়ে। তবে এটি যেমন তেমন রুটি নয় একেকটা রুটির ওজন ১ কেজির উপরে। দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও বেশ মজাদার।

বিজ্ঞাপন

নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া হাটে প্রতি সপ্তাহের শুধু রোববার দেখা মিলবে এমন অদ্ভুত রুটির। আশেপাশের মানুষের পছন্দের তালিকায় আছে এই ঐতিহ্যবাহী নৌকারুটি। কেউবা হাটের মধ্যেই খাচ্ছেন আবার কেউবা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

বাপ-দাদার হাত ধরে হাটে এসে এই রুটি খেয়েছেন অনেকেই, এখনো হাটে এলে রুটির সাথে মিষ্টি খান মানুষ । এক সময় প্রচুর পরিমানে পাওয়া যেত এই রুটি কিন্তু কালের বিবর্তনে শুধুমাত্র রোববারে তেবাড়িয়া হাটেই দেখা মিলে এই রুটির। বাপ দাদার শেখানো রুটি ও মিষ্টি বিক্রি ব্যবসা করে যাচ্ছেন এখানকার দোকানিরা।

বিজ্ঞাপন

একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, ভোর থেকেই শুরু হয় তেবাড়িয়ার হাট, প্রতি রোববারের হাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে আগেরদিন থেকে প্রস্তুত করা হয় এক কেজি ওজনের এই নৌকা রুটি। বাবা-দাদাদের কাছ থেকে শেখা এই পেশা আর ছাড়তে পারেনি অনেকেই আর এভাবেই চলে সংসার। তারা জানায়,আগের মত আর বিক্রি হয়না ফলে এখন সংসার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

আরিফ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ছোটবেলায় বাবার সাথে এই হাটে অনেক এসেছি এখন একা একা আসি এই হাটে বন্ধুদের নিয়ে। রুটির পাশাপাশি এই হাটে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র পাওয়া যায়। ১ কেজি ওজনের এই রুটি খেতে বেশ সুস্বাদু ও মজাদার।

তেবাড়িয়া এলাকার বৃদ্ধ শামসুল হক ( ৬০) বলেন, এই নৌকা রুটি অনেক আগে থেকে এ হাটে নিয়ে আসে দোকানিরা। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই বাবার হাত ধরে হাটে এসে এই রুটি খেয়েছি। এ হাটে অনেক বয়স্ক বিক্রেতা আছে যারা আমাকে চিনে। কতদিন এই রুটি থাকবে জানিনা যতদিন বেঁচে আছি নিয়মিত খাবো।

আধুনিক ফাস্টফুডের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খাবার গুলো, একদিন হয়তো বিলীন হয়ে যাবে সেদিন আর বেশি দূরে নয় তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।