চাঁদপুর পৌরসভায় সিএনজি-অটোরিক্সা প্রবেশে নিষেধজ্ঞা তুলে নিতে স্মারকলিপি
চাঁদপুর যানযট এড়াতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক চাঁদপুর পৌরসভার মধ্যে সিএনজি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। এতে হতাশার মধ্যে পড়েছেন ১৫ হাজার সিএনজি চালকরা।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নিষেধজ্ঞা তুলে নিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন এর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন সিএনজি-অটোরিক্সা চালক শ্রমিক দল।
স্মারকলিপিতে থাকা লেখা হুবহু তুলে ধরা হলো:- সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবৎ এই সেক্টর এর মালিক শ্রমিকদের বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় এবং যাত্রী সাধারনের সুবিধার্থে চাঁদপুর শহর থেকে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের মালিক শ্রমিকরা দিবানিশি যাত্রী সেবায় নিয়োজিত থাকে। বর্তমান শহরের যানজট নিরশনে আপনার বিভিন্ন উদ্যোগে আমরা ধন্যবাদ এবং সাধুবাদ জানাই। আপনি নিশ্চই জানেন এই ছোট শহরের রাস্তা ঘাটের তুলনায় অধিক অটো বাইক এবং ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচলের কারনে দীর্ঘ বৎসর যাবৎ অটো বাইকের শহর হিসাবে সর্বত্র প্রচারিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আপনার উদ্যোগে যানজট নিরশন করার জন্য অটো বাইককে কালার করে দুই ভাগে চলাচল করার ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি যানজট নিরশন করার জন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবৈধ ভাবে ফুটপাতে দোকান এবং ভ্যানগাড়ি রাখার কারনে ও দিনের বেলায় শহরে ট্রাক ট্যাংলরী প্রবেশের কারনে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য যে, চাঁদপুর শহরের পশ্চিম অঞ্চল নদী মাতৃক হওয়ায় আমাদের ছোট এই শহরের মধ্যে লঞ্চ টার্মিনাল সেখানে বিআইডব্লিউটিএ থেকে প্রায় ১৫০০ সিএনজি অটোরিক্সা পার্কিং এর স্থান রাখা হয়েছে এবং শহরের মধ্যে ট্রেন স্টেশন, চাঁদপুর সদর হাসপাতাল, চাঁদপুর সদর মডেল থানা, ট্রাফিক অফিস, চাঁদপুর বাস টার্মিনাল, সিএনজি পেট্রল ও গ্যাস পাম্প এবং আদালত প্রাঙ্গন গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠান গুলো রয়েছে। যার কারনে আমাদের সিএনজি অটোরিক্সা গাড়িগুলো শহরের মধ্য থেকে যাত্রী সেবায় চলাচল করে যাচ্ছে। কিন্তু শহরের যানজট নিরশনের কথা বলে জেলা প্রশাসক কর্তৃক সিএনজি স্ট্যান্ড শহরের বাহিরে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবের কারনে মালিক শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তীব্র আকার ধারন করছে।
তারই ধারাবাহিকতায় গেলো ২৪ জানুয়ারি জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের কার্যালয়ে সিএনজি অটোরিক্সা মালিক শ্রমিক সংগঠনের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী ১ জানুয়ারির পর থেকে শহরে সিএনজি প্রবেশ না করতে দেওয়ার প্রতিবাদে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
দাবী দাওয়া সমূহ নিম্নে পেশ করা হইল : শহরে নির্বিঘ্নে সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা করাতে হবে। স্থায়ী ভাবে প্রস্তাবিত ২টি স্থানে ছায়াবানির মোড় ও বাইতুল আমিন মসজিদের পিছনে সিএনজি স্ট্যান্ড নির্মাণ করতে হবে। পৌরসভা কর্তৃক অন্যান্য ৫টি সিএনজি স্ট্যান্ডের পার্কিং সাইনবোর্ড স্থাপন করা। যেমন, পাল বাজার সম্মুখে সিএনজির নির্ধারিত ষ্ট্যান্ডে, লেকের পাড় সিএনজি স্ট্যান্ডে যাত্রী ছাউনি ও চালকদের বিশ্রামাগার নির্মাণ করা, ওয়ারলেছে অনুমদিত সিএনজি স্ট্যান্ডে সাইনবোর্ড স্থাপন করা, বাবুর হাট মতলব রোডের মাথায় সিএনজি স্ট্যান্ডে পার্কিং সাইনবোর্ড স্থাপন করা, আদালত/কোর্টের সামনে সিএনজি স্ট্যান্ডে পার্কিং সাইনবোর্ড স্থাপন করা সহ অন্যান্য সকল উপজেলায় সিএনজি অটোরিক্সার জন্য স্থানে ষ্ট্যান্ড নির্মাণ করা। বাসষ্ট্যান্ড বিষ্ণুদী রোডের মাথায় সড়ক ভবন সংলগ্ন সিএনজি পার্কিং স্ট্যান্ড সাইনবোর্ড স্থাপন করা, রিকোজিশান/থানায় ডিউটিরত সিএনজি চালকদের বেতন খোরাকি প্রদান করা। ইদানিং কালে ব্যাপক চুরি ছিনতাই বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে আমাদের সিএনজি অটোরিক্সা মালিক শ্রমিকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। চুরি হওয়া সিএনজি দ্রুত উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন, বিআরটিএ কর্তৃক আমাদের সিএনজি অটোরিক্সা চালক ও অন্যান চালকদের সহজ শর্তে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা, স্ট্যান্ড টার্মিনাল ব্যতিত ফরিদগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক অবৈধ টোল আদায় বন্ধ করা, মতলব ব্রিজ টোল আদায় বন্ধ করার অনুরোধ করা হইল।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয়তাবাদী সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিকদলের সভাপতি মো. মুকবুল হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ছোটন, সাধারন সম্পাদক মো. হালিম মাতাব্বর, সহ-সাধারন সম্পাদক মো. জুয়েল, জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. রিপন হোসেন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আলমগীর হোসেন পাঠান, জেলা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. মঞ্জুর আলম, সাধারন সম্পাদক মো. হাবিবুল ইসলাম সুমন, চাঁদপুর সদর সিএনজি মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি মো. লিটন গাজী, পৌর সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক মো. মনির মিয়াজী, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর আলম খান, সদস্য সচিব মো. খোকন ফরাজী প্রমুখ।