আ.লীগের ভয়ভীতিতে বাধ্য হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেই: বাবুল
জাতীয় পার্টি থেকে পাঁচ আগে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য এবং সিলেট মহানগর কমিটির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল। গত বছরের ১৭ আগস্ট জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে (জি এম কাদের) পাঠানো এক চিঠিতে তিনি তার পদত্যাগ পত্র জমা দেন।
পদত্যাগের পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের তিনি এ বিষয়টি জানান।
জাতীয় পার্টিতে কীভাবে যোগ দিয়েছিলেন সেই বিয়ষটিও তিনি খোলাসা করেন। বাবুলের দাবি-আওয়ামী লীগের হামলা-মামলার ভয়ভীতি এবং নিজের ভবিষৎ নিরাপত্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশের বড় বড় ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের টার্গেট করে জোরপূর্বক, হামলা-মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে আসামি বানিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে বাধ্য করে। আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করতে বাধ্য করে। তাই একটা পর্যায় আমার ভবিষ্যত নিরাপত্তা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষা এবং ২ হাজারের বেশি শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে জাতীয় পার্টির সাথে যুক্ত হতে বাধ্য হই।
তিনি বিএনপি ঘরনার মানুষ হিসেবে বিগত দিনে সিলেট মহানগর তাঁতী দলের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন বলে দাবি করেন। এমনকি তাঁতী দলে থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালে লামাবাজার এলাকার একটি গায়েবি মামলায় তিনি এক মাস কারাগারে ছিলেন।
বাবুল বলেন, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই আমি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে লন্ডনের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করি। লন্ডন অবস্থানকালীন সময়ে বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের লক্ষ্যে দেশের ছাত্র সমাজের ১ জুলাই থেকে ৪ দফা দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ব্যানারে পরিচালিত ন্যায্য আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করি। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য সরকারের অনুগত পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী দিয়ে ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ গণহত্যা সংঘঠিত করে। পূর্বে এ দেশে কোন আন্দোলনে এ ধরণের গণহত্যা সংঘঠিত হয়নি। তৎকালীন সংসদের বিরোধী দল হিসাবে জাতীয় পার্টি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হয়। দলের একজন দায়িত্বশীল সদস্য হয়ে আমি এদায় এড়াতে পারি না। ফ্যাসিবাদী সরকারের অনুগত বাহিনীর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে নিরস্ত্র ও নিরাপরাধ মানুষ হত্যা কোনভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এই ঘৃণ্য অপরাধের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে আমি জাতীয় পার্টির সকল দলীয় পদ হতে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাবুল বলেন, এখন আমি কোন দলে সাথে যুক্ত নই। আমি আমার ব্যবসা ও পত্রিকা নিয়ে থাকতে চাই। আপাতত কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা নেই।