সমস্যার কথা মানুষকে নয়, আল্লাহকে বলুন
সমস্ত প্রতিক্রিয়া মনোযোগের যোগ্য নয়। কিছু গঠনমূলক এবং আপনার জন্য ভালো। পক্ষান্তরে কিছু প্রতিক্রিয়া বিষাক্ত আর আপনার সুস্থতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং বিচক্ষণ হতে শিখুন; সর্বদা আপনার মানসিক শান্তি এবং সুস্থতা রক্ষা করুন।
সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সর্বদা সৎ পথে রাখুন। আমাদের ঈমানের ওপর অটল রাখুন। আমাদেরকে কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত না করুন। আমাদেরকে আগুন ও কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন। সর্বোচ্চ জান্নাতকে আমাদের শেষ আবাস করুন।
বিষয়গুলো অন্ধকারে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নির্জন রাতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন। যে আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, তার কাছে কাতরকণ্ঠে অভাব-অভিযোগের কথা জানান। মনের কথাগুলো খুলে বলুন, তিনি ফিরিয়ে দেবেন না। তিনি আপনাকে আলোর পথ দেখিয়েছেন এবং হৃদয়ের ভারাক্রান্ততাকে হালকা করেছেন। সবসময় আপনার জন্য তিনি আছেন, তাকে পরমভাবে বিশ্বাস করুন।
আপনি যা তা দিয়েই আপনি আকৃষ্ট করবেন। এটাই বাস্তব সত্য। ভালো কাজ করুন তা আবার আপনার কাছেই ফিরে আসবে। সদয় হোন এবং আপনার প্রতিও সদয় হবার একই প্রস্তাব দেওয়া হবে। আপনি যখন ইতিবাচক শক্তির প্রতিফলন ঘটান তাহলে আপনি অবশ্যই ইতিবাচকতাকেই আকৃষ্ট করবেন।
অতএব ভালো কিছু করার জন্য প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হোন, কারণ আপনি যা দেবেন সেটিই আপনি ফিরে পাবেন!
সব কিছু সবার জানার দরকার নেই। কেউ সেভাবে করে না। মনে রাখবেন, আমরা সবাই এক একটা কাজ করছি। প্রতিদিন, আমরা আরও শিখতে এবং আরও ভালো হতে চেষ্টা করি। এটাই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার ভাবনা চিন্তায় যারা জগাখিচুড়ি সৃষ্টি করে তাদেরকে না বলু্ন। যারা আপনাকে বিরক্ত করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে কাজ করতে থাকে তাদেরকেও। যারা সবসময় শিকারের ভূমিকা পালন করে যদিও এটা স্পষ্ট যে তারা ভুল করছে সেসব ব্যক্তিকেও না বলুন। যারা আশা করে যে আপনি তাদের অগ্রাধিকার দেবেন কিন্তু আপনার জন্য একই কাজ করবে না- তাদেরও এড়িয়ে চলুন।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার জন্য যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা অনুসরণ করে আপনি যখন সঠিক কাজটি করেন এবং যা তিনি নিষিদ্ধ করেছেন তা পরিত্যাগ করেন তখন এটি কখনই কোনো বিঘ্নতার দিকে আপনাকে নেবে না। এটি প্রকৃতপক্ষে আপনাকে তার সন্নিকটেই নিয়ে আসবে। সুতরাং আপনি নিজে কী নিজের মধ্যে রাখছেন সে সম্পর্কে সচেতন থাকুন, কারণ এটি তার সঙ্গে আপনার সংযোগে প্রভাব ফেলতে পারে।
দয়াবান হওয়ার জন্য কোনো খরচ করতে হয় না। সদয় কাজ এবং সদয় শব্দগুলো কাউকে তাদের পথে ফিরিয়ে আনতে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে। শক্তি, অনুপ্রেরণা, আত্মসম্মান এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর অন্তর্নিহিত ক্ষমতা তাদের রয়েছে। আপনি পেছনে কী ফেলে এসেছেন?
মনে রাখবেন, এমন একটি পৃথিবীতে আপনি আছেন যেকোনো কিছু এখানে করতে পারেন, সদয় হওয়াকেই বেছে নিন।
মানুষের সঙ্গে আপনার সমস্যার বিবরণ শেয়ার করা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। বেশিরভাগই এসবকে পাত্তা দেয় না এবং এটি নিয়ে গসিপ করতে পছন্দ করে। এ নিয়ে বরং সর্বশক্তিমানের কাছে যান। তাকে বলুন, মন হালকা হবে, সমস্যারও সমাধান হবে। ভালো কাজ করুন। ভালো ভাবুন, ভালো বলুন।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে একটি সৎকর্ম করবে, সে তার দশগুণ পাবে এবং যে একটি মন্দ কাজ করবে, সে তার সমান শাস্তিই পাবে। বস্তুতঃ তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।’ -সুরা আনয়াম : ১৬০
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি একটি সৎকাজ করে, সে দশটি সৎকাজের সওয়াব পায় বরং আরো বেশি পায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একটি গোনাহ করে সে তার শাস্তি এক গোনাহর সমপরিমাণ পায় কিংবা তাও আমি মাফ করে দেব। যে ব্যক্তি পৃথিবী ভর্তি গোনাহ করার পর আমার কাছে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আমি তার সঙ্গে ততটুকুই ক্ষমার ব্যবহার করব। যে ব্যক্তি আমার দিকে অর্ধহাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই এবং যে ব্যক্তি আমার দিকে একহাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে বা (অর্থাৎ দুই বাহু প্রসারিত) পরিমাণ অগ্রসর হই। যে ব্যক্তি আমার দিকে লাফিয়ে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।’ -মুসনাদে আহমাদ : ৫/১৫৩