যে দোয়ার ওজন কেয়ামতের দিন সবচেয়ে ভারী হবে
পবিত্র কোরআন-হাদিসে কেয়ামতের ঘটনাগুলো বর্ণিত হয়েছে। আলেমরা কেয়ামতের ঘটনাবলির ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়েছেন। এদিন মানুষ কবরে পুনর্জীবন লাভ করে হাশরের মাঠে জমায়েত হবে। তখন তাদের অবয়ব হবে খুবই দীর্ঘ। ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পিপাসায় কাতর হয়ে পড়বে অনেকে। তাদের অন্তরজুড়ে ভয়ভীতি বিরাজ করবে। কারণ আল্লাহর হিসাব গ্রহণ ও প্রতিদান সম্পর্কে তারা সন্ত্রস্ত থাকবে।
তখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহতায়ালার কাছে দ্রুত পুরো সৃষ্টিজগতের হিসাব গ্রহণের সুপারিশ করবেন। দীর্ঘ এক হাদিসে এই বিষয়ে বর্ণিত হয়েছে।
এরপর মানুষের আমল উপস্থাপন করা হবে। পরে প্রাথমিক পর্যায়ে হিসাব নেওয়া শুরু হবে। আমলনামা দেওয়া হবে। সব ধরনের আমল ওজন করা হবে। এর পর মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হবে। মুমিনদের আল্লাহ পথ চলার আলো দেবেন। মুনাফিকদের জন্য কোনো আলো থাকবে না। তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়ে কাফেরদের সঙ্গে বসবাস করবে।
কেয়ামতের এমন কঠিন দিনে একটি দোয়ার ওজন সবেচেয়ে ভারী হবে বলে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে অসংখ্য দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন। বিভিন্ন সময় তিনি এমনকিছু আমলের কথা বলেছেন যা আকারে খুবই কম ও সংক্ষিপ্ত হলেও এর সওয়াব অনেক বেশি। এটি তেমনই একটি দোয়া। দোয়াটি হলো-
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খালকিহি, ওয়ারিদা নাফসিহি, ওয়াজিনাতা আরশিহি, ওয়ামিদাদা কালিমাতিহি।
অর্থ : আমি আল্লাহতায়ালার পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি, তার সৃষ্টির সংখ্যা সমপরিমাণ, মহান সত্ত্বার সন্তুষ্টির পরিমাণ, তার আরশের ওজন পরিমাণ এবং তার বাক্যগুলোর কালির পরিমাণ।
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুল (সা.) উম্মুল মুমিনিন জুয়াইরিয়া (রা.)-এর ঘর থেকে বের হন। তখন জুয়াইরিয়া (রা.) নিজের নামাজের স্থানে ছিলেন। অতঃপর রাসুল (সা.) ফিরে আসেন। তখনও জুয়াইরিয়া (রা.) নামাজের স্থানে ছিলেন।
অতঃপর রাসুল (সা.) আবার বের হন এবং আবার ফিরে আসেন। তখনও জুয়াইরিয়া (রা.) নামাজের স্থানে ছিলেন। তখন রাসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি কি এখনো তোমার নামাজের স্থানে রয়েছ!’
জুয়াইরিয়া (রা.) বলেন, হ্যাঁ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তোমার স্থান থেকে গিয়ে চারটি বাক্য তিনবার পড়েছি।
এ সময়ে তুমি যা পড়েছ তার সঙ্গে ওইসব বাক্যের ওজন করা হলে তাই ভারি হবে।’ অতঃপর তিনি দোয়াটি পড়েন। -সুনানে আবু দাউদ : ১৫০৩