হিন্দুসেনার আপত্তি সত্ত্বেও আজমীরে চাদর পাঠালেন মোদি
আজমীর শরীফে খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহির দরগায় চাদর চড়ানো হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া চাদর।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর হয়ে এই চাদর চড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা দিয়ে রিজিজুর হাতে সেই চাদর তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই চাদর দরগায় গিয়ে চড়ান রিজিজু। এ সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- বিজেপির রাজস্থানের সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি হামিদ খান মেওয়াতি, সংখ্যালঘু মোর্চার জাতীয় সভাপতি জামাল সিদ্দিকীসহ অন্যরা।
রিজিজু বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাঠানো চাদর নিয়ে দরগায় এসেছিলাম। আমার সৌভাগ্য হয়েছে খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী দরগায় আসার। আমি শান্তির জন্য প্রার্থনা করেছি।’
আজমীর শরীফের মোতাওয়াল্লী নাসিরুদ্দিন চিশতী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দরগায় চাদর পাঠিয়েছেন। বিষয়টিকে অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখা উচিত। প্রধানমন্ত্রীদের স্বেচ্ছায় আজমীর শরীফে চাদর চড়ানোর যে দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও সেই পথ অনুসরণ করেছেন।’
২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতীর দরগায় চাদর চড়িয়ে আসছেন। তবে হিন্দুসেনা সম্প্রতি দাবি করেছে, আজমীর শরীফের দরগার জায়গায় একটি শিব মন্দির রয়েছে। এই নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। সেই আবহে প্রধানমন্ত্রীর এবার আজমীরে চাদর পাঠানো যথেষ্ট তাৎপর্যপূণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কারণ মামলাকারী হিন্দুসেনার প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত আলাদা করে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি লিখে বার্ষিক উরসে (৮১৩তম উরস) চাদর না চড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন মোদিকে। কিন্তু মোদি সেই আর্জিতে কান না দিয়ে প্রতিবছরের মতো এবারও দরগায় চাদর পাঠালেন। এর পেছনে বিশেষ রাজনৈতিক সংকেত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছুদিনের মধ্যেই দিল্লি বিধানসভার ভোট হবে। তার আগে হিন্দুসেনার আর্জি মেনে চাদর না চড়ালে তা ভুল বার্তা পৌঁছে দেবে মুসলিমদের মাঝে। সে কারণে মুসলিমদের জন্য সৌহার্দ্যের বার্তা দিতেই প্রধানমন্ত্রী চাদর পাঠালেন।
ভারতের জয়পুর থেকে প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার দূরে দরগার অবস্থান। এখানে বিভিন্ন সময়ে চাদর চড়িয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন সময় দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, শীর্ষ রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক থেকে শুরু করে তারকাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। শুধু মুসলমান নয়, হিন্দুসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ আসেন নিজেদের মত দোয়া-মোনাজাত ও প্রার্থনা করতে।
প্রচলিত আছে প্রতিদিন কমপক্ষে সাত কওমের (সাত সম্প্রদায়) মানুষ আসেন এই দরগায়।