আবার কবে জিতবে বাংলাদেশ এই বিশ্বকাপে?

  • এম. এম. কায়সার, পুনে থেকে
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বড় জয়। বড় হার। বড় হার। ...
পরের ঘর এখন পর্যন্ত শূন্য। সেখানে কি যোগ হবে? জয় নাকি আরেকটি বা আরো কয়েকটি হার। এই বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে বড় হারের পর বাংলাদেশ দলের অবস্থা দাঁড়িয়েছে একদিনে শেয়ার মার্কেটে সর্বস্ব পুঁজি হারানো বেচারার মতো!

তিন ম্যাচে দুই হারে বাংলাদেশ দলের মাঝে সব হারানোর অসহায়ত্ব স্পষ্ট। বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই দলের খেলোয়াড়রা এই টুর্নামেন্ট কাভার করতে আসা সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। ভাবভঙ্গি এমন যেন মিডিয়ার সামনে কথা বললে বোধকরি আইসিসি পুরো দলকে এই টুর্নামেন্ট থেকে বের করে দেবে!

বিজ্ঞাপন

অথচ ঠিক উল্টো চিত্র অন্যান্য দলগুলোর ক্ষেত্রে। প্রায় সবগুলো দল মিডিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে। কথা বলছে। সমস্যাগুলো কি সেটা অকপটে জানাচ্ছে। মাঠে নামার আগে নিজেদের সাহস আর আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর সব-চেষ্টাই করছে তারা। আর বিশ্বকাপ শুরুর প্রথমদিন থেকে বাংলাদেশ দলকে দেখে মনে হচ্ছে অনেককিছু এড়িয়ে বাঁচতে চাইছে তারা!

একটা দল বড় টুর্নামেন্টে হারতেই পারে। উদাহরণ তো চোখের সামনেই রয়েছে। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার এবারের বিশ্বকাপে তাদের প্রথম দুটো ম্যাচেই হেরেছে। কিন্তু হারলেও তারা কিন্তু হারিয়ে যায়নি। কারণ তারা জানে কিভাবে ঘুরে দাড়াতে হয়। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের টপ ফেভারিট দল হিসেবে খেলতে এসে আজ এই অবস্থায় পড়েছে। চাপের কথা যদি বলি তাহলে তো শুরুর দুই ম্যাচে দলটা যেভাবে হেরেছে তাতে পুরো দলটাই এখন পিষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু দলটা অস্ট্রেলিয়া বলেই এমন হারের পরেও তারা আশা বাঁচিয়ে রাখে।

বাস্তবতা হলো বাংলাদেশ এই বিশ্বকাপের ট্রফি জিতে বাড়ি ফিরবে-এতো দূরের স্বপ্ন কেউ দেখেনি। আগের সব বিশ্বকাপের সাফল্যকে বাংলাদেশ এবার পেরিয়ে যেতে পারবে কিনা; স্বপ্ন-সৌধ ছিল অতটুকুই। কিন্তু শুরুর তিন ম্যাচে দুই হার পুরো দলকে এমনভাবে নড়িয়ে দিয়েছে যে এখন স্বপ্নের কথা বলতেও যেন ভয় পাচ্ছে দল। সেই হতাশা থেকেই মুস্তাফিজুর রহমান বলে ফেলেছেন-‘কে জানে, সামনের ছয় ম্যাচের ছয়টাতে জিততেও পারি!’

মুস্তাফিজের সেই অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে ১৯ অক্টোবর থেকে। পুনেতে সেদিন বাংলাদেশ লড়বে শক্তিমান ভারতের বিরুদ্ধে। যে ভারত এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচের তিনটিতে দারুণ দাপট নিয়ে জিতেছে।

অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত। এই তিন ম্যাচে ব্যাটে-বলে স্বাগতিক ভারত যে আক্রমণাত্মক এবং পরিকল্পিত ক্রিকেট খেলেছে তাতে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে পুরানো সেই সুরটা বেজে উঠছে-‘ইটস কামিং হোম’!

পুনেতে ১৯ অক্টোবরের ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের প্রেডিক্টশানের পারসেন্টিজের হার কি হতে পারে সেটা আপনি এতক্ষণে জেনে গেছেন নিশ্চয়ই। ওই ম্যাচে ভারতের জয়ের সম্ভাবনায় বাজির হার ফুলে-ফেঁপে একাকার।

পুনের পরে বাংলাদেশ দলের পরবর্তী গন্তব্য মুম্বাই। শাহরুখ খানের শহরে বাংলাদেশ ২৪ অক্টোবর লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা যে শক্তি দেখাচ্ছে তাতে এরমধ্যেই অনেকেই তাদের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্টও বলে ফেলেছেন। শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দুইয়ে দুই। এই দুই ম্যাচে তাদের সেঞ্চুরি সংখ্যা চারটি। দুই ম্যাচে স্কোরবোর্ডে রান তুলেছে তারা তিনশ ছাড়িয়ে। দুটো ম্যাচই তারা জিতেছে পুরোদুস্তর একতরফা ভঙ্গিতে।

আত্মবিশ্বাসের আয়নায় চকচকে করছে পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা দল। ২৪ অক্টোবর মুম্বাইয়ের সেই ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে আপাতত একটাই সন্তুষ্টি; গেল বিশ্বকাপের ফল। সে দফায় বাংলাদেশ বিশ্বকাপ শুরুই করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে। এবারো সেই দলের বিরুদ্ধে একটি সম্ভাব্য জয়ে বাংলাদেশ খড়কুঁটো খুঁজছে! যা হতে পারে এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টিকে থাকার ঠিকানা!