রাতে ফেসবুক বন্ধ করার চেষ্টা করছি: রওশন

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছেন বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ এমপি/ছবি: বার্তা২৪.কম

আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছেন বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ এমপি/ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকা: বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ এমপি বলেছেন, আমি রাতে ফেসবুক বন্ধ করার চেষ্টা করছি। চেষ্টা করছি, যাতে রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ফেসবুক বন্ধ থাকে।

আমাদের ছেলে-মেয়েরা সারারাত ফেসবুকিং করে ঠিকমতো পড়ালেখা করছে না, এতে ফলাফলও ভালো করতে পারছে না। এতে আমরা মুর্খজাতি হিসেবে গড়ে উঠছি। আমাদের অনেক চাকরিতে যোগ্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। বিদেশিরা এসে চাকরি করে লাখ লাখ ডলার নিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় ছাত্র সমাজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

রওশন এরশাদ বলেন, পড়ালেখা না করলে নিজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তোমরা বড় হও, মানুষ হও। তোমার বাবা-মাকে কিছু না দিলেও তারা তোমার ভালো দেখলে খুশি হন। তোমরা আজ শপথ করো- রাতে ফেসবুক দেখবে না। দিনে এক ঘণ্টা দেখবে। আমি তোমাদের মুখ দেখে বলতে পারি, কে রাত জেগে ফেসবুক দেখে।

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে রওশন বলেন, স্কুলে যদি ছেলে-মেয়েরা নিরাপদ না থাকে, তাহলে কীভাবে স্কুলে যাবে। তোমাদের সজাগ থাকতে হবে, এ রকম ঘটনার আঁচ পেলে প্রতিরোধ গড়তে হবে। তোমাদের মধ্যে মানিবক বোধ জাগ্রত করতে হবে। আমি সংসদে চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব করেছি। এটাতে আরও জোর দেবো। তোমাদের দক্ষ হয়ে উঠতে হবে চাকরির বাজারের জন্য।

জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই। কোনো গৃহবিবাদ নেই। পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে দল চলছে। তিনি যে নির্দেশ দেন সেই নির্দেশ পালন করি। এটা নিয়ে কেউ যাতে কিছু করতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে বলেও উল্লেখ করেন রওশন।

জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি মাখন সরকার বলেন, ছাত্র সমাজ আজ অনাথ সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কোনো নেতা ছাত্র সমাজের খোঁজ নেন না। এভাবে সংগঠন চলে না। চাকরির জন্য অনেক দ্বারে দ্বারে গেছি, সহায়তা পাইনি।

জবাবে রওশন বলেন, তোমাকে যদি ইংরেজিতে দরখাস্ত লিখতে বলি পারবে না। বাংলাতেও পারবে না। কীভাবে চাকরি পাবে?

সাবেক ছাত্র নেতা মাতলুব হোসেন লিয়ন বলেন, ছাত্র সংগঠন হচ্ছে একটি পার্টির হৃদপিন্ড। একে হাওয়া-বাতাস দিয়ে বাঁচাতে না পারলে দল টিকবে না। আমাদের সময়ের মতো ছাত্র সমাজকে অবহেলা করবেন না।

নেতাদের এসব বক্তব্যের জবাবে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, আমি সব সময় সাধ্যমতো হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। ঢাকসু নির্বাচনে সহায়তা দিয়েছি, আজকের অনুষ্ঠানের জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সহায়তা করেছি। কিন্তু একজন একটি দল বাঁচাতে পারে না। আমরা প্রেসিডিয়াম সভায় আলোচনা করবো। ছাত্রলীগের গ্রুপিং রয়েছে। বঞ্চিত গ্রুপকে কাছে টেনে নিতে হবে পার্টিকে সংগঠিত করার জন্য।

জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক মোড়ল জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম আবদুল মান্নান, এসএম ফয়সল চিশতী, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি ও সাবেক ছাত্র নেতা বেলাল হোসেন।

সভা পরিচালনা করেন ছাত্র সমাজের সদস্য সচিব ইয়াসিন মিসবাহ। সভায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা, রাজশাহী জেলাসহ বেশ কিছু জেলার নেতারা তাদের জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের অনুরোধ করেন। ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কমিটির দ্রুত কাউন্সিলের তারিখ দেওয়ার অনুরোধ জানান।