লকডাউনে সরকার ক্র্যাকডাউন চালাচ্ছে: ফখরুল

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

বিরোধী দলকে দমন করতে লকডাউনের সুযোগে সরকার ক্র্যাক ডাউন চালাচ্ছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপের এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে দেশের মানুষের ভাল-মন্দ তোয়াক্কা না করে কেবলমাত্র নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতেই সরকার বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালানোকে দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত করেছে। লকডাউনের এই সুযোগে সরকার যেন ক্র্যাক ডাউন চালাচ্ছে। ভয়াবহ করোনা, রমজান এবং লকডাউনের মধ্যেও গ্রাম-শহর, পাড়া-মহল্লায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে। সর্বত্র আতঙ্ক ও ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে টু শব্দ উচ্চারণ করতে না পারে সেজন্যই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালানোকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়েছে সরকার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় আক্রমণে বাংলাদেশের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। দুর্যোগের কাছে মানুষের অর্থ, অস্ত্র, ক্ষমতা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। করোনা সংক্রমণে মৃত্যুভয় সবাইকে জড়োসড়ো করে ফেলেছে। প্রতিদিন মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে মানুষের দুয়ারে হাজির হচ্ছে প্রাণঘাতী করোনা। দ্বিতীয় ধাপের করোনা সংক্রমণে গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে মানুষের মৃত্যুর তালিকা লম্বা হয়েই যাচ্ছে। গতকাল করোনা আক্রান্ত হয়ে ৯৬ জনের মৃত্যু সংবাদে আঁতকে উঠেছে দেশের মানুষ। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসকে যদি এখনি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।

ফখরুল বলেন, করোনা ভাইরাসের এই মহাদুর্যোগের মধ্যেও বাগাড়ম্বর বক্তব্য প্রদান ছাড়া সরকার জনকল্যাণে কোন কাজ না করে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর বেপরোয়া গতিতে জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা মোকাবেলায় সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী সরকার আরো বেশি আগ্রাসী নাৎসীবাদী পথ অবলম্বন করে বিরোধী দলকে নি:শেষ করার কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।

গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সরকার নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে সরকারের এই ফ্যাসিবাদী নিষ্ঠুর আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করতে গিয়েও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে সরকারের সাঁড়াশী আক্রমণে পড়তে হয়েছে।নির্যাতন-নিপীড়ণ, গুম-খুন ইত্যাদি অপকর্মের মাধ্যমে দেশকে এক ভয়াবহ অরাজকতার দিকে ঠেলে দিয়েছে তারা। এর মাধ্যমে দেশকে তারা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। দেশকে বিএনপিশুন্য করাই যেন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর এখন প্রধান লক্ষ্য। বিএনপি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক কাহিনী তৈরী করে মামলা দায়ের ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই সরকারের নিষ্ঠুর থাবা থেকে অন্যান্য বিরোধী দল ও মতের মানুষরাও রেহাই পাচ্ছেন না। বর্তমান সরকার পরিকল্পিতভাবে নিজেদের সৃষ্ট অনাচার এবং করোনার মহামারীর অভিঘাতে তাদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, এই সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই দেশের ভয়াবহ সংকটে বা জনগণের দুর্দশা লাঘবে তাদের কোন উদ্যোগ নাই। তারা নিজেদের অনৈতিক শাসন টিকিয়ে রাখতে দমন-নিপীড়ণের স্টিম রোলার অব্যাহত রেখেছে।

হেফাজতে ইসলাম বা তাদের কোন কর্মসূচির সাথে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, উদ্দেশ্য- প্রণোদিতভাবে হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলাতেও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে তাদেরকে গ্রেফতার ও হয়রানী করা হচ্ছে।