বিরোধী দলকে দমন করতে লকডাউনের সুযোগে সরকার ক্র্যাক ডাউন চালাচ্ছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপের এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে দেশের মানুষের ভাল-মন্দ তোয়াক্কা না করে কেবলমাত্র নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতেই সরকার বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালানোকে দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত করেছে। লকডাউনের এই সুযোগে সরকার যেন ক্র্যাক ডাউন চালাচ্ছে। ভয়াবহ করোনা, রমজান এবং লকডাউনের মধ্যেও গ্রাম-শহর, পাড়া-মহল্লায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে। সর্বত্র আতঙ্ক ও ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে টু শব্দ উচ্চারণ করতে না পারে সেজন্যই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালানোকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়েছে সরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় আক্রমণে বাংলাদেশের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। দুর্যোগের কাছে মানুষের অর্থ, অস্ত্র, ক্ষমতা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। করোনা সংক্রমণে মৃত্যুভয় সবাইকে জড়োসড়ো করে ফেলেছে। প্রতিদিন মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে মানুষের দুয়ারে হাজির হচ্ছে প্রাণঘাতী করোনা। দ্বিতীয় ধাপের করোনা সংক্রমণে গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে মানুষের মৃত্যুর তালিকা লম্বা হয়েই যাচ্ছে। গতকাল করোনা আক্রান্ত হয়ে ৯৬ জনের মৃত্যু সংবাদে আঁতকে উঠেছে দেশের মানুষ। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসকে যদি এখনি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।
ফখরুল বলেন, করোনা ভাইরাসের এই মহাদুর্যোগের মধ্যেও বাগাড়ম্বর বক্তব্য প্রদান ছাড়া সরকার জনকল্যাণে কোন কাজ না করে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর বেপরোয়া গতিতে জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা মোকাবেলায় সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী সরকার আরো বেশি আগ্রাসী নাৎসীবাদী পথ অবলম্বন করে বিরোধী দলকে নি:শেষ করার কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সরকার নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে সরকারের এই ফ্যাসিবাদী নিষ্ঠুর আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করতে গিয়েও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে সরকারের সাঁড়াশী আক্রমণে পড়তে হয়েছে।নির্যাতন-নিপীড়ণ, গুম-খুন ইত্যাদি অপকর্মের মাধ্যমে দেশকে এক ভয়াবহ অরাজকতার দিকে ঠেলে দিয়েছে তারা। এর মাধ্যমে দেশকে তারা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। দেশকে বিএনপিশুন্য করাই যেন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর এখন প্রধান লক্ষ্য। বিএনপি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক কাহিনী তৈরী করে মামলা দায়ের ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই সরকারের নিষ্ঠুর থাবা থেকে অন্যান্য বিরোধী দল ও মতের মানুষরাও রেহাই পাচ্ছেন না। বর্তমান সরকার পরিকল্পিতভাবে নিজেদের সৃষ্ট অনাচার এবং করোনার মহামারীর অভিঘাতে তাদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, এই সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই দেশের ভয়াবহ সংকটে বা জনগণের দুর্দশা লাঘবে তাদের কোন উদ্যোগ নাই। তারা নিজেদের অনৈতিক শাসন টিকিয়ে রাখতে দমন-নিপীড়ণের স্টিম রোলার অব্যাহত রেখেছে।
হেফাজতে ইসলাম বা তাদের কোন কর্মসূচির সাথে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, উদ্দেশ্য- প্রণোদিতভাবে হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলাতেও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে তাদেরকে গ্রেফতার ও হয়রানী করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে গণ অধিকার পরিষদের একাংশ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত ৮ টার দিকে গাছের ডাল, লতাপাতা ও কাঠ জ্বালিয়ে নানা স্লোগান দেয় সংগঠনটি। এসময় নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা তারেক রহমান। এরপর গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সঙ্গে যুক্ত হয় অন্যান্য সংঠনের অনেকেই।
এর আগে সকাল থেকেই রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছে বিভিন্ন সংগঠন। বিকেল ৩ টার পর থেকে বাড়তে থাকে আন্দোলনের মাত্রা। সাথে জনসমাগমও বাড়ে বঙ্গ ভবন এলাকায়। সন্ধ্যার পর স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থী, জনতা ও রাজনৈতিক সংগঠন গুলো।
এসময় সড়ক অবরোধ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। তবে এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তৎপরতা দেখা যায় নি।
সন্ধ্যার পর বেশ কয়েকটি সংগঠন আন্দোলন স্থগিত করলেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের নেতা কর্মীরা।
গণ অধিকার পরিষদের নেতা তারেক রহমান বলেন, আমাদের একটি দাবি আজ রাতের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে৷ অন্যথায় আমরা আমরা বঙ্গভবনের পানির লাইন বন্ধ করে দিব, বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিব। সে আওয়ামী লীগের দোসর। সে শেখ হাসিনাকে পা ছুঁয়ে সালাম করতে চেয়েছিল। যে রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করতে চায়। আমরা তাকে রাষ্ট্রপতি চাই না।
এদিকে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সম্পৃক্ততা ও নানাবিধ অসংগতিপূর্ণ স্লোগান এবং কর্মকাণ্ডের জন্য বিতর্ক এড়াতে রাষ্ট্রপতি আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছে জুলাই আন্দোলনে আহতদের একটি সংগঠন।
সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলেই কেবল মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের দায় নেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বলে দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংগঠনটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন।
দেশের প্রাচীনতম ইসলামী এই দলের আমির জোর দিয়ে বলেছেন, তারা স্বীকার করেন যে তার দল 'এক পাকিস্তানের' পক্ষে ছিল এবং দলের কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তবে এর জন্য সাংগঠনিকভাবে জামায়াতকে দায়ী করা যাবে না।
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, ওই সময়ের আমি সাক্ষী থাকি আর না থাকি, এটা জামায়াতে ইসলামী না। যদি সন্দেহাতীতভাবে এ ধরনের কোনো ভুল বা অপরাধ প্রমাণিত হয়, আমি দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমা চাইব জাতির কাছে। আমার কোনো রিজার্ভেশন নেই এ ব্যাপারে।
'কিন্তু কোনো গোঁজামিল বা মিথ্যা চাপিয়ে দেওয়া হবে, আমি মিথ্যাকে সত্য বলব, এটা আমার পক্ষে সম্ভব না। আগে স্পষ্ট হতে হবে, কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা', যোগ করেন তিনি।
রাজাকার, আল বদর, আল শামসের মতো সংগঠনগুলো জামায়াত ও এর ছাত্রসংগঠন ছাত্র সংঘের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল, বিভিন্ন ঐতিহাসিক নথিতে এর উল্লেখ রয়েছে বলে স্মরণ করিয়ে দিলে জামায়াতের আমির বলেন যে, 'একটা কথা আছে, ইতিহাস বিজয়ীর পক্ষে।
তিনি বলেন, সেখানে সকল দলের মানুষ ছিল। বাংলাদেশে, পূর্ব পাকিস্তানে তখন যারা ছিল, যারা ভালো মনে করেছে, সরকারের ডাকে সাড়া দিয়েছে। এটাকে দলের দায়বদ্ধতা বলা যাবে না। এটা ব্যক্তির দায়বদ্ধতা।
হ্যাঁ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বা পূর্ব পাকিস্তান জামায়াত ইসলামীর কোনো রেজ্যুলুশনের মাধ্যমে যদি এরকম (মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী) কোনো দল গঠন হয়ে থাকে, আর সেই রেজ্যুলুশনের ডকুমেন্ট যদি আওয়ামী লীগের কাছে যায়, সেটা অবশ্যই জাতি গ্রহণ করবে। আমিও গ্রহণ করব, বলেন এই রাজনীতিবিদ।
এটা নথিভুক্ত যে, ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে জামায়াতের আমির ছিলেন অধ্যাপক গোলাম আজম। তার নামে চাঁদা তোলা হয়েছে, তিনি বিভিন্ন জায়গায় ভাষণ দিয়ে বলেছেন পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিতে। রাজাকার সম্মেলন বা বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানের পক্ষে সক্রিয় অবস্থান নেওয়াকে তিনি উৎসাহিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুর রহমান বলেন, আমি এটা বলেছি আগেই, তারা এক পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। আমি তো বলিনি, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে চলে গিয়েছিলেন। তারা যেহেতু এক পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন, সুতরাং দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য, স্থিতিশীলতার জন্য যেটা দরকার বলেছেন। তারা তো অস্বীকার করেনি তারা এক পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন না।
সহিংসতা যদি কেউ করে থাকে, স্বয়ং গোলাম আজম করে থাকলেও তার বিচার হোক। আমার কোনো আপত্তি নেই, বলেন তিনি।
কিশোর বয়স থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া শফিকুর রহমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীন জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচারের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, ৪২ বছর পর এসে সবকিছু জামায়াতের ঘাড়ে ফেলে দেওয়া হলো। এটা কতটুকু জাস্টিস? যে ট্রায়ালটা হলো, সেটাও টোটালি ব্লারড। একটা ক্যাঙ্গারু ট্রায়াল।
জামায়াতের আমির জানান, মুক্তিযুদ্ধের পরপরই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ২৪ হাজার মামলা হয়েছে এবং অনেকে জেলে গেছেন।
তার ভাষ্য, ৪২ বছর পর যে লোকগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলো, তাদের বিরুদ্ধে তখন একটা অভিযোগ দিতে পারল না কেন? কোনো একটা থানায় তাদের বিরুদ্ধে সামান্য একটা অভিযোগের ছোঁয়া থাকল না কেন?
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির একাংশ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকালে শহরের পরিবহন কাউন্টার এলকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি সাতক্ষীরা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এর আগে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শেখ তারিকুল হাসানের সভাপতিত্বে ও জেলা কৃষক দলের সাবেক আহবায়ক আহসানুল কাদির স্বপনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য আবুল হাসান হাদী, জেলা যুব দলের সাবেক সমন্বয়ক আইনুল ইসলাম নান্টা, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন রাজু, জিয়া পরিষদের সদস্য সচিব প্রভাষক মনিরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সমন্বয়ক ফরিদ উদ্দিন, ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি শেখ শরিফুজ্জামান সজিব, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন, রুহুল আমিন পাড়, আসাদুজ্জামান খোকা, সাইদুল ইসলাম হিমু, শিপলুর রহমান, মো. জাকির হোসেন, শামীম কবির সুমন, ফিরোজ শাহ, রেজাউল ইসলাম রেজা প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহাববুদ্দিন চুপ্পু মিথ্যাচার করেছেন। সাংবিধানিক রীতিকে উপেক্ষা করে তিনি দেশ ও জাতিকে সংকটে ফেলার চেষ্টা করছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে রক্ষার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, পদত্যাগ নিয়ে নতুন করে প্রসঙ্গ তোলাটা সন্দেহজনক। এটা একটা দুশ্চিন্তার বিষয় যে কেন হচ্ছে এটা। সরকারের দায়িত্ব এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টির ৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা টিভিতে দেখেছি রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানকে পাশে নিয়ে বলেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি (রাষ্ট্রপ্রতি) সেই পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রপ্রতি নিজে যখন জাতির সামনে তিন বাহিনীর প্রধানকে পাশে দাঁড় করিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন তারপরে এই নিয়ে আর কোন কথা থাকে ? আর তো কোন কথা থাকে না। তারপরে দেখলাম প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বলেছেন 'মা পদত্যাগ করেননি'। আবার শেখ হাসিনার এক টেলিফোন কনভারসেশনে আমরা শুনলাম যেখানে তিনি (শেখ হাসিনা) নিজে বলেছেন 'যেভাবে পদত্যাগ করার কথা আমি সেভাবে পদত্যাগ করি নাই।' অর্থাৎ পদত্যাগ করেছেন তিনি। কিন্তু যেভাবে করার কথা ওইভাবে করেননি; তাই তো? তাহলে পদত্যাগ না করার প্রশ্ন তো থাকছে না। পদত্যাগ তো হয়েছে। আর যিনি পালিয়ে যায় তার পদত্যাগ করা বা না করায় কি আসে যায়। তিনি তো পলাতক।
তিনি বলেন, দেশের দ্রব্যমূল্যের যে অস্থিতিশীল অবস্থা এবং ক্রমশ বর্তমান যে প্রবৃদ্ধি আমি মনে করি এটা সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক তারা স্থায়ী বা অস্থায়ী এটা কোন কথা না। তাদের দায়িত্ব হলো জনগণের স্বস্তি নিশ্চিত করা। কাজেই আমরা অনুরোধ করবো সরকারের কাছে যেন খুব দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হোক যাতে মানুষের জীবনে স্বস্তি আসে। জিনিসপত্রের দাম যেনো স্থিতিশীল হয়।
আওয়ামী লীগ সমস্যার সৃষ্টির চেষ্টা করছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আমি জানি এই সরকারের যতটা শক্তি থাকার কথা ততটা নাই। প্রশাসন এবং পুলিশ বিশেষ করে তা পূর্ণাঙ্গ শক্তি এই সরকার প্রয়োগ করতে পারছেনা। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নাই বলে তাদের লোকেরা এই দেশে নাই, ব্যবস্যা-বাণিজ্যের মধ্যে নাই, সমস্যা সৃষ্টি করার সক্ষমতা নাই এই কথা বলা ভুল, আছে। নানাভাবে তারা সমস্যার সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কিন্তু অন্যায় দমনের দায়িত্বতো ফাইনালি সরকারের উপরে। আমরা সহযোগিতা করতে পারি কিন্তু আমরা সরকারের পক্ষ হয়ে অন্যায় দমন করতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, এই দেশটা আমাদের। মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা এই দেশটা স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু দেশটা দখল করে ফেলা হয়েছে। স্বার্থবোধ, ক্ষমতার লোভ এই দেশটাকে দখল করে ফেলেছে। আমাদের সহকর্মীরা আমাদের সন্তানরা এই দেশটা দখলমুক্ত করেছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে নাই। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। এইসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সরকারকেও সহযোগিতা করতে হবে। কারণ আমরা জানি এই সরকার খুব সবল না। সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। আমাদের সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, গণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জানিপপের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ প্রমুখ।