গণতন্ত্র ফেরাতে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে: রিজভী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বক্তব্য রাখছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বক্তব্য রাখছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সাভারের ব্যাংক কলোনী এলাকায় শহীদ শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনের বাসা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলছে। সংস্কার করুক, তবে এটা যেন উপসংহারহীন না হয়। একটা ইতি টানতে হবে, এটা যদি অনন্তকাল চলতে থাকে, তাহলে প্রশ্ন দেখা দেবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম ও প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল, প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারে হতাহত ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তিনি। এ সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের সহায়তা করতে গঠিত ’আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা ও আহতদের ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। সাভারের আটটি পরিবারকে এসব অনুদান দেয় বিএনপি।

রিজভী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া, তাদের পাশে থাকা ও সবসময় খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য একটি সংগঠন করে দিয়েছেন তারেক রহমান। 

বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনাদের সামনে রেখে আমাদের একটাই কথা, তা হলো, এখনও সেই ভয়ঙ্কর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা তাদের কালো টাকা ও বেআইনি অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছে। গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা গোলাগুলি করেছে, অস্ত্র নিয়ে তারা সেখানে গুলি করেছে। জনঅরণ্যের মধ্যে তারা লুকিয়ে আছে। প্রয়োজন মতো তারা দেশকে অস্থিতিশীল করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা অল্প কিছু প্রচেষ্টা দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু ব্যাপক প্রচেষ্টা আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি না। গণতন্ত্র শান্তির পক্ষে যাতে মানুষ বসবাস করতে পারে, খোলা গলায় যাতে মানুষ সমালোচনা করতে পারে, কথা বলতে পারে। আইনের শাসন থাকবে, কে কোন দল করে সেটা বড় কথা নয়। যে অপরাধ করবে, পুলিশ তাকে ধরবে, বিচারের আওতায় আনবে৷ এটাই তো গণতন্ত্র।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র মানে শুধু নির্বাচন নয়, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বড় একটা উপাদান। যে ভোটাররা ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তারা যেন পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, এটিই গণতান্ত্রিক পরিবেশ। এটি নিশ্চিত করাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব। 

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, তারেক রহমান কাজ করে যাচ্ছেন। তার নির্দেশে আজকে এ আন্দোলনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা শটগান, যুবলীগ, ছাত্রলীগের গুলিতে যারা হাত হারিয়েছে, পা হারিয়েছে, অন্ধ হয়েছে তারা এবং তাদের পরিবার যেন হতাশায় না থাকে, তাদের খোঁজ খবর নিতে যতটা সম্ভব তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছি, তাদের বাসায় যাচ্ছি। তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহায়তা করছি।

এদিকে অনুদান পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শহীদদের স্বীকৃতির জন্য বিএনপিকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

শহীদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দিন বলেন, যে অনুদান পেয়েছি, সেটি আমরা আমার ছেলের নামে গঠিত ফাউন্ডেশনে দিব। তবে এই আর্থিক অনুদানের চাইতেও শহীদদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।

একই কথা বলেন শহীদ নাফিসা হোসেন মারওয়ার মা কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, বিএনপির রুহুল কবীর রিজভী আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাকে বলেছি, আমাদের সন্তানদের যেন তারা ভুলে না যান। তাদের আত্মত্যাগ যাতে সবাই মনে রাখেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপিরসহ পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু বলেন, শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, আহতদের চিকিৎসাসেবা ও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পেতেও বিএনপি তাদের পাশে থাকবে।