রমিজ উদ্দিনের দুই শিক্ষার্থীর মামলার রায় রোববার

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাস চাপায় নিহত রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী,  ছবি: সংগৃহীত

বাস চাপায় নিহত রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী, ছবি: সংগৃহীত

বাসচাপায় নিহত শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় জাবালে নূরের মালিক ও বাসচালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় রোববার ঘোষণা করবেন আদালত।

গত ১৪ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক গ্রহণ শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ রায়ের জন্য রোববার (১ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেন। মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনার ১ বছর ৪ মাস পর রায় ঘোষিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত করতে সক্ষম হয়েছি বলে আমরা মনে করি। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ আইনে শাস্তি দাবি করছি। সড়ক দুর্ঘটনায় মামলার বাদি নিহত মিমের পিতা জাহাঙ্গীর আলমও আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী টিএম আসাদুল সুমন। তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। তাই আসামিরা খালাস পাবে বলে আমরা মনে করি।

মামলার আসামিরা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের সেই বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও তার সহকারী এনায়েত হোসেন এবং বাসটির মালিক শাহাদাত হোসেন। আর অন্য বাসের চালক জোবায়ের সুমন ও চালকের সহকারী কাজী আসাদ এবং বাসটির মালিক জাহাঙ্গীর আলম।

আসামিদের মধ্যে শাহদাত হোসেন, মাসুম বিল্লাহ ও জোবায়ের সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দণ্ডবিধির ৩০৪, ২৭৯, ৩২৩, ৩২৫ ও ৩৪ ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর কাজী শরিফুল ইসলাম। চার্জশিটে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, আসামি মাছুম বিল্লাহ ও জোবায়ের সুমনের হালকা যান কার, জীপ ও মাইক্রোবাস চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স সঠিক থাকলেও ৪১ সিটের বাস চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এছাড়া জব্দকৃত ৩টি বাসের কোনটিতেও কোন প্রকার যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না।

চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, বাসের ড্রাইভার ও হেলপার নিয়োগের এখতিয়ার বাস মালিকের। অত্র মামলার আসামি ড্রাইভার ও হেলপারদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বুদ্ধিমত্তা যাচাই ছাড়াই মালিক শাহদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম তাদের নিয়োগ প্রদান করেন।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই সকালে জাবালে নুরের দুটি বাস আব্দুল্লাহপুরের উদ্দেশ্যে যাবার সময় পাল্লাপাল্লি ও রেশারেশি করে বেশি যাত্রী ও বেশি ভাড়া পাওয়ার আশায় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে বাস চালাতে শুরু করে। ড্রাইভার জোবায়েরের বাসটি ড্রাইভার মাসুম বিল্লাহ বাসটিকে পেছনে ফেলে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ঢালের সামনে রাস্তার ব্লক করে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠাতে থাকে। এসময় মাসুম বিল্লাহ’র বাসটি ডান দিক দিয়ে যেতে না পেরে বাম দিক দিয়ে যাবার সময় ড্রাইভার ইচ্চাকৃতভাবে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪/১৫ জন ছাত্র ছাত্রীর উপর তুলে দেয়। যার ফলে ১৩/১৪ জন ছাত্র ছাত্রী গুরুত্বর আহত হয়। যাদের মধ্যে উক্ত কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬) ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজীব (১৭) মারা যায়। এছাড়া কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়।

এ ঘটনায় নিহত একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম গত ২৯ জুলাই ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা দায়ের করেন।