মাদরাসা শিক্ষকদের উপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল
জাতীয়
চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রতিবাদে মশাল মিছিল করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধা ৭টার পর 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাবৃন্দ' ব্যনারে হাতে মশাল জ্বালিয়ে রাজধানীর টিএসসি এলাকা থেকে শাহবাগে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের আন্দোলনে এসে যোগাযোগ দেয় মিছিলটি।
বিজ্ঞাপন
এ সময় পুলিশের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সুপারিশের আলোকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের ঘোষণাসহ ছয় দফা দাবিতে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক ঐক্যজোট।
বিজ্ঞাপন
অবস্থান কর্মসূচি থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণাও দেন তারা। এরপর তারা জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করে। এরপর দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।
ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে 'বুচাই পাগলার' মাজার ভাঙচুর এবং ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার চার মাস পর পুলিশকে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার ধামরাই আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদ এ আদেশ দেন।
আদেশে আগামী ২৯ জানুয়ারি নিয়মিত মামলা রুজু সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং ৬ মার্চ পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার, ঢাকাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার ধামরাই উপজেলায় বুচাই পাগলার' মাজারে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রকাশ্য দিবালোকে আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, যা পেনাল কোড ১৮৬০ এর ২৯৫/২৯৫এ/৪৩৫/৪৪১/৪২৭/১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩৮০/৫০৬/১০৯ ধারার অধীনে আমলযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ। উক্তরূপে গুরুতর ফৌজদারি সংঘটিত হলেও উল্লেখিত অপরাধ সংক্রান্ত কোনো মামলা এ পর্যন্ত অত্র আদালত সিন করেনি।
CrPC, ১৮৯৮ এর ১৫৪ ধারা এবং PRB, ১৯৪৩ এর ২৪৩/২৪৪ বিধি অনুযায়ী, প্রতিটি আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ পাওয়া মাত্রই বিলম্ব না করে ওসি কর্তৃক থানায় মামলা রুজু করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু উল্লেখিত অপরাধের ক্ষেত্রে ওসি ধামরাই কর্তৃক কোনোকিছু করা হয়নি, যা ফৌজদারি কার্যবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আদেশে আদালত এ ঘটনায় পুলিশকে নিয়মিত মামলা রুজুর নির্দেশ দেন এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলার বিশেষ পুলিশ সুপারকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে তার নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম সোমবার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের যমুনা নদীর দুর্গম অঞ্চলের শীলদহ এলাকায় আয়োজিত অসামাজিক অশ্লীল যাত্রা ও জুয়ার আসরের প্যান্ডেল পুড়িয়ে দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, কয়েকদিন থেকেই রাত ১২টার পর যাত্রা পালার নামে এখানে অশ্লীল নাচ এবং জুয়ার আসর চলছিল। প্রশাসনের কোনো অনুমতি না নিয়েই তারা এমন কান্ড করছিলো। স্থানীয়রা বাঁধা দিলেও তারা কোনো কর্ণপাত না করে আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছিল। এতে যুবসমাজ নষ্টসহ এলাকায় মাদক কারবারী, চুরি, ডাকাতি বৃদ্ধি সম্ভাবনা রয়েছে বলে সচেতন এলাকাবাসী অভিযোগ তুলে। পরে তারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে সোমবার দিবাগত গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে যাত্রার প্যান্ডেল পুড়িয়ে দেয়।
ইসলামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল্লাহ (সাইফ) বলেন, আমাদের কাছে সংবাদ ছিল রাত ১২টার পর যাত্রার নামে দুর্গম চর এলাকার যমুনা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে টগারচর এলাকায় অশ্লীল নৃত্য, অসামাজিক কার্যকলাপ হয়। এ জন্য আমি ও আমার দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে যুব সমাজকে রক্ষার্থে অসামাজিক যাত্রাপালার কার্যক্রম যাতে না চলে এ কারণে নির্মিত যাত্রা প্যান্ডেল এবং স্টেজ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর রহমান বলেন, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বেলগাছা ইউনিয়নের শীলদহ এলাকায় যাত্রার নামে জুয়া এবং অশ্লীল নাচ গান হচ্ছে এমন অভিযোগ আসে। থানা-পুলিশকে তা বন্ধের ব্যবস্থা নিতে বললে এ অভিযান চালানো হয়। এ ধরনের নৃত্য যাত্রাপালা সমাজের অপকর্মকে বাড়িয়ে দেয় এবং যুবসমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এ সমস্ত কার্যকলাপ থেকে রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন (গালিব) এর আদালত এই আদেশ দেন।
গত ২১ জানুয়ারি মতিউরকে ৭ দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে দুদক। ওইদিন আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য ২৭ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করা হয়েছিল।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান লিটন এতথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ৬ জানুয়ারি মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এজাহারে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অসৎ উদ্দেশে মিথ্যাও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯০ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অসঙ্গিপূর্ণ ১৩ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১০৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন ও মালিকানা ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এসব সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন মতিউর রহমান।
আরেকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে মতিউরকন্যা ফারজানা রহমান ইস্পিতা, মতিউর রহমান এবং স্ত্রী লায়লা কানিজকে। এই মামলার এজাহারে দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং ৫৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়াও অন্যটি মামলায় মতিউরপুত্র ছাগলকাণ্ডের আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব এবং মতিউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার এজাহারে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যপ্রমাণসহ ৪২ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার ২৭১ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি ভোরে বসুন্ধরার আবাসিক এলাকা থেকে মতিউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
চট্টগ্রামের চকবাজার প্যারেড ময়দানে দীর্ঘ ১৮ বছর পর আজ (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল। পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজন চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এ মাহফিল চট্টগ্রামের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
মাহফিলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হচ্ছেন জনপ্রিয় ইসলামি চিন্তাবিদ ড. মিজানুর রহমান আজহারী। মাহফিলের শেষদিন তিনি প্রধান মুফাসসির হিসেবে তাফসির পেশ করবেন। একইসঙ্গে উপস্থিত থাকবেন আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী। আয়োজকরা জানিয়েছেন, পাঁচ দিনব্যাপী এই মাহফিলে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে।
প্যারেড ময়দান ছাড়াও আশপাশের এলাকায় প্যান্ডেল ও পর্দার মাধ্যমে তাফসির শোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নারী শ্রোতাদের জন্য মহসিন কলেজ মাঠ, কাজেম আলী হাই স্কুল, গুলজার বেগম হাই স্কুল, কিশলয় কমিউনিটি সেন্টার এবং কাপাসগোলা কলেজে বিশেষ প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই মাহফিলের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর স্মৃতি। ১৮ বছর আগে তার উপস্থিতিতে পুরো প্যারেড ময়দান পরিণত হতো জনসমুদ্রে। তার কণ্ঠে তাফসির শুনতে হাজারো মানুষ ভিড় জমাতেন। আল্লামা সাঈদী প্রতি বছর এখানে এসে কুসংস্কার, বেদাতসহ ইসলামবিরোধী নানা বিষয়ের ওপর কোরআন ও হাদিসের আলোকে বক্তব্য দিতেন।
চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, আল্লামা সাঈদী ছিলেন এই মাহফিলের হৃদয়ের স্পন্দন। তিনি এ মাহফিলের মাধ্যমে চট্টগ্রামের মানুষকে কোরআন ও হাদিসের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরতেন। এত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও ১৮ বছর পর আবার এই মাহফিল আয়োজিত হচ্ছে, যা আমাদের জন্য গৌরবের।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, মাহফিল সফল করতে ইতোমধ্যে স্যানিটেশন, খাবার পানি, মেডিকেল টিমসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন চট্টগ্রাম নগর জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। মাহফিলের প্রতিটি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন টিম গঠন করা হয়েছে।
আয়োজক কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ তাহের বলেন, এই মাহফিল কেবল ধর্মীয় আলোচনা নয়, এটি চট্টগ্রামের ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রতীক। আমরা আশা করছি, মাহফিলে লাখো মানুষের সমাগম হবে। সবাই যাতে সুশৃঙ্খলভাবে তাফসির শুনতে পারেন, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
মাহফিলের শ্রোতারা চকবাজার ছাড়াও আশপাশের এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়বেন। আয়োজক কমিটির তথ্যমতে, দক্ষিণে আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ মোড় থেকে উত্তরে মেডিক্যাল কলেজ ও পাঁচলাইশ থানা মোড় পর্যন্ত এবং পূর্বে ধুনির পোল থেকে পশ্চিমে সিজিএস স্কুল মোড় পর্যন্ত শ্রোতাদের অবস্থান থাকবে।
পাঁচ দিনের এই তাফসির মাহফিল শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি চট্টগ্রামের মানুষের হৃদয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আয়োজকরা আশা করছেন, কয়েকলাখ মানুষের উপস্থিতিতে মাহফিল আবারও তার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে।