'বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জটিলতা কমাতে হবে'
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা পেশায় প্রবাসীরা কর্মরত। তবে প্রবাসীদের অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে বাস করেন। বৈদেশিক শ্রমবাজারে প্রবাসী আয়ের প্রধান উৎস এ দেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। যা আমাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক। দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস পেলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ বাড়বে। তাই বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জটিলতা কমাতে হবে। প্রণোদনা বৃদ্ধি ও পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং সেবার মান উন্নত করতে হবে। প্রবাসীদের নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধার প্রতিও নজর দিতে হবে। এছাড়া দেশের বাজারে মুদ্রার স্থিতিশীল বিনিময় হার নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অপ্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপের বিকল্প নেই।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম ক্লাবে সৌদি আরব সহ প্রবাসী বিএনপি নেতাদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি চট্টগ্রাম থেকে বিএনপি নেতারা সৌদি আরব গেলে প্রবাসী নেতাকর্মীদের আতিথেয়তা ও আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
সৌদি আরব বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মঈন উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি, মক্কা প্রবাসী মো. শফিউল আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আবু সুফিয়ান।
এসময় রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে শ্রমিকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে মন্তব্য করে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শ্রমিকদের বিশেষ কাজে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারে। এ প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বিভিন্ন কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে সনদ প্রদান করবে যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হবে। প্রবাসীরা প্রশিক্ষিত না হওয়ায় প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ ও বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। বৈদেশিক বিনিময় হারের নীতি কৌশল ও ব্যবস্থাপনা ঠিক করতেও দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার। বস্তুত রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে হুন্ডিওয়ালাদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। সর্বোপরি বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসগুলোর কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন।
আবু সুফিয়ান বলেন, প্রবাসীদের বিমানবন্দরে নানা হয়রানি বন্ধ করতে হবে। অর্থ পাচার বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ রেমিট্যান্স প্রবাহে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। স্বল্প আয়ের প্রবাসীদের সরকারিভাবে প্রণোদনা বাড়াতে হবে। আমরা আশা করি, রেমিট্যান্স প্রেরণে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো ভূমিকা রাখবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, দূতাবাস ও ব্যাংকিং চ্যানেলের সমন্বিত ভূমিকা খুবই জরুরী।
এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন লিপু, মো. কামরুল ইসলাম, কুয়েত বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান মাহফুজ, জেদ্দা মহানগর বিএনপির সভাপতি কেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী, সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন, মদিনা মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কাসেম, আমিরাত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম সিআইপি, হেলাল উদ্দিন সিআইপি, নজরুল তালুকদার, ইলিয়াছ রশিদি, মো. এমদাদ, হাসান উল্লাহ, কামাল উদ্দিন, আবুল কাশেম, মো. ওয়াহিদ, এস এম শফিউল আলম, আবু তাহের, আহমদ রহিম, মো. শওকত, রহমান রাজ্জাক, মো. রাজিব, দিদারুল আলম প্রমূখ।