মহামারি করোনার বিস্তার রোধে নিষিদ্ধের আওতায় সব ধরনের জনসমাগম। বাদ যায়নি ধর্মীয় জমায়েতও। সংক্রমণ ঠেকাতে পবিত্র রমজানেও মসজিদগুলো বিরানভূমি। মক্কা-মদিনা থেকে শুরু করে বিশ্বের সব মসজিদের মতো বন্ধ রয়েছে ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদ। এতে ১৪০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার মুসল্লিবিহীন রমজান শুরু হলো মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র এ মসজিদটিতে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিন নিউজ এজেন্সি ওয়াফা।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৩ মার্চ জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াকফ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মসজিদটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অথচ প্রতি বছর রমজান শুরুর পর হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির পদচারণে মুখর থাকত আল আকসা। মাসের শেষের দিকে লাখও ছাড়িয়ে যেত সেই উপস্থিতির সংখ্যা।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু এবারের রমজানে সেখানকার চিত্র একেবারেই ভিন্ন। প্রথম রমজান এমনকি প্রথম জুমায় একেবারেই মুসল্লিশূন্য ছিল ইসলামের এই প্রথম কেবলাস্থানটি।
ওয়াকফ কমিটির বরাত দিয়ে ওয়াফা জানায়, আল আকসা বন্ধ ঘোষণার পর থেকে স্থানীয়দের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিভিন্ন সময় অনেককে বিচ্ছিন্নভাবে মসজিদ কম্পাউন্ডের আশপাশে ঘুরতেও দেখা গেছে। কিন্তু কঠোর নিষেধাজ্ঞায় তাদের প্রবেশাধিকাল ছিল না।
বিজ্ঞাপন
রমজানের প্রথম জুমায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কমিটির ৫০ জন সদস্য নামাজে অংশ নেন। স্থানীয়দের ভাষ্য, ‘প্রথম রমজান, প্রথম জুমা। অথচ কোনো মুসল্লি নেই, কোনো মানুষ নেই। আল আকসা বন্ধে আমাদের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এমন সিদ্ধান্ত ১৪শ’ বছরের মধ্যে প্রথমবার নেওয়া হলো। মসজিদের মিনারে প্রতিদিনই আজান শুনতে পাই, অথচ নামাজ পড়া যায় না। এটা খুবই কঠিন। আমাদের সবারই অনেক কষ্ট হচ্ছে। ভাষায় প্রকাশের মতো নয়।’
এদিকে করোনার কারণে বিশ্বের সব মসজিদে নামাজ স্থগিত থাকলেও পবিত্র রমজানে মক্কা-মদিনায় ছোট পরিসরে নামাজ চালু রয়েছে। ইফতারের জমায়েত ও ইতিকাফ না হলেও শর্তসাপেক্ষ ও সংক্ষিপ্তাকারে চলছে পাঞ্জেগানা, জুমা ও তারাবির নামাজ।
সৌদি আরব ছাড়াও সিরিয়া, মিসর, তিউনিসিয়া, জর্ডান ও বাহরাইনসহ বেশির ভাগ আরব দেশে শুক্রবার থেকে রমজান শুরু হয়েছে। পবিত্র এ মাস উপলক্ষে লকডাউন কিছুটা শিথিল করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও মিসরসহ আরও কয়েকটি দেশ।
ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েক জায়গায় লকডাউন ভেঙে তারাবি নামাজ পড়তে দেখা গেছে অনেককেই। তা ছাড়া রমজানে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তানও।
পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের সময় তা উপস্থিত থাকাই উত্তম। তবে শরিয়তে পণ্য অনুপস্থিত রেখেও ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। পণ্য যদি অনুপস্থিত থাকে তখন সুস্পষ্টভাবে গুণ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করার দ্বারা কিনতে হয়। এটা বাইয়ে সালামের (অগ্রিম কেনা) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
আবার গুণাগুণ বর্ণনা করা ছাড়াও কেনা যেতে পারে। তখন পণ্য যে স্থানে রাখা হয়েছে তার দিকে ইঙ্গিত করা হবে কিংবা এমন সম্পর্ক উল্লেখ করা হবে, যার দ্বারা পণ্যটি অন্য বস্তু থেকে পৃথক হয়ে যাবে। তবে শাফেয়ি মাজহাব অনুসারে অনুপস্থিত পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নয়। গুণ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনার মাধ্যমে যদি বিক্রি সম্পন্ন হয় এবং পণ্যটি দেখার পর বিবরণের সঙ্গে তা মিলে যায়, তবে ক্রয় করা আবশ্যক হবে।
আর মিল পাওয়া না গেলে বেশির ভাগ ইসলামি স্কলারের মতে ক্রয়চুক্তি ভঙ্গ করার সুযোগ থাকবে। যাকে ফিকহি পরিভাষায় খিয়ারুল খুলফ বলা হয়। হানাফি মাজহাব অনুসারে না দেখে কোনো পণ্য কিনলে ক্রেতা খিয়ারে রুয়াত বা দেখার ইচ্ছাধিকার (পণ্য দেখার পর প্রাপ্ত ইচ্ছাধিকার) লাভ করবে। অর্থাৎ ক্রেতা চুক্তি বহাল রাখা বা ভেঙে ফেলার ইচ্ছাধিকার পাবে।
যদি পণ্যের নমুনা বা মডেল দেখে তা ক্রয় করা হয় এবং পণ্যটির নমুনার বিপরীত না হয়, তবে ক্রেতা দেখার ইচ্ছাধিকার পাবে না। ক্যাটালগ ধরে বিক্রি করা অথবা নমুনা দেখিয়ে বিক্রি করা হলে এবং ক্যাটালগ ও নমুনার সঙ্গে তার মিল থাকলে বেচাকেনা বৈধ হবে। যেমন এক কেজি গম দেখিয়ে এক স্তূপ গম বিক্রি করা।
না দেখে পণ্য কেনার পর যদি তা ক্রেতা বা বিক্রেতার প্রত্যাশার চেয়ে পরিমাণে কম বা বেশি হয় এবং তা অনুমানের ওপর নির্ভর করে বিক্রি করা হয়, তবে বিক্রিতে তার কোনো প্রভাব পড়বে না। আর যদি তা পরিমাপ করে বিক্রি করা হয়, তবে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম বা বেশি হলে তা বিক্রিতে প্রভাব ফেলবে।
এ ক্ষেত্রে দেখতে হবে পণ্য বিভিন্ন অংশে ভাগ করলে তার কোনো ক্ষতি হয় কি না। পণ্যটি যদি এমন হয় যে তা বিভিন্ন অংশে ভাগ হলে ক্ষতি হবে না, তবে পণ্য বেশি হলে তা বিক্রেতা ফেরত পাবে এবং কম হলে পণ্য দ্বারা তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে অথবা মূল্য হ্রাস করা হবে। যেমন পাত্রে পরিমাপ করে গম বিক্রি করা। আর পণ্যটি যদি এমন হয় যে তা বিভিন্ন অংশে ভাগ করলে পণ্যের ক্ষতি হয়। তবে পরিমাণ বেশি বা কম হলে বিক্রয় চুক্তি ভঙ্গ করার অধিকার থাকবে।
লায়লাতুল মেরাজ (মেরাজের রাত) হলো সেই মহান রাত, যেদিন আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরশে আজিমে গমন করেন এবং সেখান থেকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছান। এটি ইসলামের ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা, যা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত।
কোরআনের আলোকে মেরাজের বিবরণ পবিত্র মেরাজের ঘটনা কোরআন মাজিদে সরাসরি বর্ণিত হয়েছে দুটি সূরায়। সূরা আল ইসরায় (বনী ইসরাইল) ইরশাদ হয়েছে, ‘পরম পবিত্র সে সত্তা, যিনি তার বান্দাকে রাত্রিকালে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশ আমরা বরকতময় করেছি, যাতে আমরা তাকে আমাদের কিছু নিদর্শন দেখাই। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ -সূরা আল ইসরা : ১
এখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমের মসজিদুল আকসা পর্যন্ত রাতের সফরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আর সূরা আন নাজমে মেরাজের আরও গভীর বর্ণনা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর নিশ্চয়ই তিনি তাকে (জিবরাইলকে) আরেকবার দেখেছিলেন সিদরাতুল মুনতাহার কাছে। এর নিকটে রয়েছে জান্নাতুল মাওয়া।’ -সূরা আন নাজম : ১৩-১৫
এখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত গমন এবং জান্নাত দেখার কথা বলা হয়েছে।
হাদিসের আলোকে মেরাজের বিবরণ মেরাজের ঘটনাটি হাদিসে আরও বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। সহিহ বোখারি ও সহিহ মুসলিমসহ বিভিন্ন হাদিসগ্রন্থে এর বিশদ বিবরণ রয়েছে।
সাত আসমানের সফর মেরাজে নবী কারিম (সা.) সাত আসমান পাড়ি দেন এবং বিভিন্ন আসমানে বিভিন্ন নবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যেমন- প্রথম আসমানে হজরত আদম (আ.), দ্বিতীয় আসমানে হজরত ঈসা (আ.) এবং হজরত ইয়াহইয়া (আ.), তৃতীয় আসমানে হজরত ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আসমানে হজরত ইদরিস (আ.), পঞ্চম আসমানে হজরত হারুন (আ.), ষষ্ঠ আসমানে হজরত মুসা (আ.) ও সপ্তম আসমানে হজরত ইবরাহিম (আ.)।
নামাজ ফরজের বিধান মেরাজে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহতায়ালার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এই রাতেই নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়। প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ নির্ধারিত হয়েছিল, পরে তা কমিয়ে ৫ ওয়াক্তে আনা হয়, যা ৫০ ওয়াক্তের সমতুল্য সওয়াব অর্জনের ব্যবস্থা।
জান্নাত-জাহান্নামের দৃশ্য দেখা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মেরাজের সময় জান্নাত ও জাহান্নামের কিছু দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন।
শবে মেরাজ উদযাপন ও ইসলামি দৃষ্টিকোণ মেরাজের রাতের বিশেষত্ব ও তাৎপর্য অস্বীকার করা যায় না, তবে ইসলামে এ রাত উদযাপনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বিধান বা পদ্ধতি নেই।
ইবাদত ও দোয়া কোনো নির্দিষ্ট দিন বা রাতে ইবাদতের বিধান না থাকলেও মুমিনদের উচিত বেশি ইবাদত, কোরআন তেলাওয়াত এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
বিদআত থেকে বাঁচা সহিহ হাদিসে লায়লাতুল মেরাজ উদযাপন সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো আমলের কথা বলা হয়নি। অতএব, শবে মেরাজ উদযাপনের নামে কোনো নতুন বা কোরআন-সুন্নাহবিরোধী প্রথা বা কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়।
লায়লাতুল মেরাজ হলো ইসলামের ইতিহাসে একটি অতুলনীয় ঘটনা, যা নবী কারিম (সা.)-এর মর্যাদাকে তুলে ধরেছে। এটি আমাদের জন্য আল্লাহর কুদরত, নবীর (সা.) শ্রেষ্ঠত্ব এবং নামাজের গুরুত্ব উপলব্ধি করার একটি সুযোগ।
তবে, মেরাজের রাতে নির্দিষ্টভাবে উদযাপন বা নতুন রীতি অনুসরণের কোনো বিধান নেই। সুতরাং এই রাত স্মরণ করে নিজের ইবাদত-বন্দেগি এবং আল্লাহর কাছে নিকটবর্তী হওয়ার চেষ্টা করাই উত্তম।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য প্রত্যেক যুগেই নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হলেন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি সাইয়্যেদুল আম্বিয়া ও খাতামুল আম্বিয়া। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে রাসূল! আমি আপনাকে গোটা বিশ্বজগতের জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।’ -সুরা আল আম্বিয়া : ১০৭
নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তকে শক্তিশালী করার জন্য অন্য নবী-রাসূলদের মতো তাকেও দেওয়া হয়েছে অগণিত মুজেজা। তন্মধ্যে মেরাজ অন্যতম। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ২৩ বছরের নবুওয়তি জীবনের অন্যতম অলৌকিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হলো- এই মেরাজ। মদিনায় হিজরতের আগে মক্কায় অবস্থানকালে ২৬ রজব দিবাগত রাতে তিনি আল্লাহ প্রদত্ত বাহন বোরাকে চড়ে মেরাজ গমনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করেন।
তবে মেরাজ কখন সংঘটিত হয় এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। হজরত মুসা ইবনে ওকবা (রা.) থেকে বর্ণিত, মেরাজের ঘটনা হিজরতের ছয় মাস আগে সংঘটিত হয়। ইমাম নববি ও কুরতুবি (রহ.)-এর মতে, মেরাজের ঘটনা নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তপ্রাপ্তির পাঁচ বছর পর সংঘটিত হয়েছে। ইবনে ইসহাক (রহ.) বলেন, মেরাজের ঘটনা তখন ঘটেছিল, যখন ইসলাম আরবের সবগোত্রে ছড়িয়ে পড়েছিল। ইমাম হরবি (রহ.) বলেন, ইসরা ও মেরাজের ঘটনা রবিউস সানি মাসের ২৭ তারিখ রাতে হিজরতের এক বছর আগে ঘটেছিল। বেশিরভাগ মতে, নবুওয়তের দশম বর্ষে রজব মাসের ২৭ তারিখে মেরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়। ইমাম তিবরানি (রহ.) বলেছেন, যে বছর রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবুওয়ত দেওয়া হয়, সে বছরই মেরাজ সংঘটিত হয়। কারো কারো মতে, হিজরতের ১৬ মাস আগে রমজান মাসে মেরাজ সংঘটিত হয়।
মেরাজ গমন করে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আদেশসহ ইসলামি সমাজ পরিচালনার বিধি-বিধান নিয়ে আসেন।
বিশ্ব মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সার্বজনীন জীবন ব্যবস্থা হিসেবে রূপ দেওয়ার জন্য তিনি বিশ্ব পালনকর্তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা পেয়েছিলেন মেরাজ রজনীতে। এ জন্য এ রাতটি প্রত্যেক মুসলমানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সব মুজেজার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুজেজা হলো- মেরাজ। এ রাতে তিনি বায়তুল মোকাদ্দাসে সব নবীর ইমাম হয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালিনের আসনে স্থায়ীভাবে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। ফলে এ রাতটি নিঃসন্দেহে তার শ্রেষ্ঠত্বের গৌরবোজ্জ্বল নিদর্শন বহন করে।
মেরাজ শব্দটি এসেছে আরবি ‘উরুজুন’ শব্দ থেকে। ‘উরুজুন’ অর্থ ঊর্ধ্বগমন আর মেরাজ অর্থ সিঁড়ি। যেহেতু সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠা হয় সে জন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঊর্ধ্বগমনকে মেরাজ বলা হয়। রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পথহারা মানুষদের সঠিক পথের সন্ধান দিতে এক টানা ১২ বছর দাওয়াত দেন মক্কায়। কিন্তু তার দাওয়াতে কিছুসংখ্যক মানুষ ইসলাম কবুল করলেও অধিকাংশরা লেগে যায় বিরোধিতায়। ধীরে ধীরে বিরোধিতা তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে। নানা রকম অমানবিক নির্যাতন শুরু হয় রাসুলের ওপরে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য এ সময় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার সান্নিধ্যে নিয়ে যান। নিজের প্রিয় হাবিবকে তার সান্নিধ্যে নিয়ে যেতে আল্লাহ নিজ কুদরতে মেরাজের আঞ্জাম দেন। বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে তারই প্রমাণ ঘটে।
এক মুহূর্তে ঘটে যায় মেরাজের ঘটনা। তাফসিরকারকগণ বলেন, চোখের এক পলক সময় ব্যয়িত হয়। বর্ণিত আছে, মেরাজ থেকে ফেরার পর দরজার কড়া নড়তে এবং অজুর পানি গড়াতে দেখেছেন রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরাইলের প্রথম আয়াতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেরাজ গমনের বর্ণনা এসেছে এভাবে, ‘তিনি সেই পরম পবিত্র মহিমাময় সত্তা যিনি তার স্বীয় বান্দাকে এক রাতে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশকে করেছেন তিনি বরকতময়। যাতে তাকে নিজের কিছু কুদরত দেখান। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুরই শ্রোতা ও দ্রষ্টা।’
২৬ রজব রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে হানি বিনতে আবু তালেবের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ হজরত জিবরাইল (আ.) এসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মসজিদে হারামে নিয়ে যান। সেখানে তার বুক বিদীর্ণ করে জমজম কূপের পানি দিয়ে সিনা মোবারক ধৌত করে শক্তিশালী করেন। তারপর সেখান থেকে তিনি বোরাক নামক এক ঐশী বাহনে করে সশরীরে বায়তুল মোকাদ্দাসে নিয়ে যান। বোরাক হলো এমন একটি প্রাণী, যা গাধা ও খচ্চরের মাঝামাঝি আকৃতির একটি জন্তু। তার দুই উরুতে রয়েছে দুটি পাখা। তা দিয়ে সে পেছনের পায়ে ঝাপটা দেয়, আর সামনের দৃষ্টির শেষ সীমায় পা ফেলে।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়তুল মোকাদ্দাসের দরজায় খুঁটির সঙ্গে বোরাকটিকে বেঁধে যাত্রাবিরতি করেন এবং বায়তুল মোকাদ্দাসে এসে সব নবীর ইমাম হয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। তারপর তিনি বোরাকে চড়ে ঊর্ধ্বে গমন করতে থাকেন। একের পর এক আসমান অতিক্রম করতে থাকেন। পথিমধ্যে হজরত মুসা (আ.) সহ অনেক নবী-রাসুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সপ্তম আসমানের পর বায়তুল মামুরে গিয়ে হজরত জিবরাইল (আ.)-কে রেখে তিনি রফরফ নামক আরেকটি ঐশী বাহনে চড়ে বিশ্বের স্রষ্টা মহান আল্লাহর দরবারে হাজির হন। সেখানে আল্লাহর সঙ্গে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথোপকথন হয়। আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ জীবন ও রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন বিধি-বিধান রাসুলকে উপহার দেন। মেরাজ থেকে আসার পর এ ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হলে বিনাপ্রশ্নে তা বিশ্বাস করেন হজরত আবু বকর (রা.)।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেরাজ গমনের বিষয়ে পবিত্র কোরআন-হাদিসে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। এ ছাড়া মুফাসসিররাও এ সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য প্রমাণাদি পেশ করেছেন।
মেরাজের ঘটনা থেকে আমাদের জন্য শিক্ষণীয় হলো- মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের অসীম ক্ষমতার ওপর নিঃশঙ্কচিত্তে বিশ্বাস স্থাপন করা। মহান আল্লাহ্ চাইলে সবকিছুই করতে পারেন এবং তার ক্ষমতা অপরিসীম। এই চেতনাকে মাথায় রেখে আল্লাহ্কে ভয় করে সার্বক্ষণিক আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের চিন্তা করে সব কাজ করা। পাশাপাশি রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদাকে উপলব্ধি করে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পূর্ণাঙ্গভাবে নিজ জীবনের আদর্শ বানানো। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের অস্তিত্ব, জান্নাত, জাহান্নামের মতো বিষয়গুলো যা আমাদের চোখের সামনে দৃশ্যমান নয়, সেগুলোতে পরিপূর্ণভাবে ঈমান আনা এবং এতে কোনো প্রকার সন্দেহ না রাখা।
পবিত্র মেরাজের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান বিশ্বের মজলুম মুসলমানদেরকে কাফেরদের নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তির জন্য কাজ করতে হবে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন!
দেওবন্দের ওলামায়ে কেরাম পূর্বসূরিদের অনুসৃত পন্থাকে গ্রহণ করেন। তাদের কাজ কেবল মাদরাসার চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো না। তারা শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। যেখানে ইসলামকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন পড়েছে, সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। বেদআতের প্রতিবাদে মুখ খুলেছেন। মানুষ তাদের কাফের বলেছে, কিন্তু তারা কাউকে কাফের বলেননি। দেশকে স্বাধীন করার প্রয়োজন হলে ইংরেজদের জেলে গিয়েছেন। যেকোনো প্রয়োজনে তারা ইসলামকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করেছেন।
‘দারুল উলুম দেওবন্দ কী জামে ওয়া মুখতাসার তারিখ’-এর বঙ্গানুবাদ ‘দারুল উলুম দেওবন্দ: ইতিহাস, ঐতিহ্য, অবদানের গৌরবদীপ্ত দেড় শতাব্দী’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আমিরুল হিন্দ আল্লামা সাইয়্যেদ আরশাদ মাদানি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করেন হজরত নানুতবী (রহ.) এবং দেওবন্দের একদল বিশিষ্ট বুজুর্গ। তাদের মধ্যে ছিলেন হজরত সাইয়্যেদ হাজী আবেদ হোসাইন (রহ.) এবং হজরত শায়খুল হিন্দ (রহ.)-এর পিতা মাওলানা যুলফিকার আলী (রহ.)। হজরত নানুতবী (রহ.)-এর যে ইলমী মর্যাদা ছিল, তা কারও ছিল না। তিনিই প্রথমে দেওবন্দে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দেওবন্দের আলেমদের সংগ্রামের ইতিহাস শুধুমাত্র এক-দু দিনের নয়, এটি প্রায় ১৫০ বছরের ইতিহাস- ১৮৬৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত। ইতিহাসে রয়েছে তাদের ত্যাগ ও কুরবানির কথা। তবে এসব ইতিহাস উর্দু ভাষায় লিখিত। যেহেতু বাংলাদেশে দেওবন্দের উলামায়ে কেরামের বড় একটি পরিমণ্ডল রয়েছে, যারা দেওবন্দে গেছেন বা দেওবন্দের ছাত্রদের থেকে জ্ঞানার্জন করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দেওবন্দের প্রকৃত ইতিহাস জানে না।
অনেকের ধারণা, দেওবন্দের ইতিহাস কেবল মাদরাসার মধ্যে পাঠদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বিষয়টি এমন নয়। যদি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনকে দেখা হয়, তবে দেখা যাবে তিনি শুধু শিক্ষকই ছিলেন না। তিনি কোরআন-হাদিসের জ্ঞান প্রচার করেছেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিয়েছেন।
‘দারুল উলুম দেওবন্দ কী জামে ওয়া মুখতাসার তারিখ’ এমনই উর্দুতে লিখিত একটি গ্রন্থ। দেওবন্দ মাদরাসার পক্ষ থেকে এটি বাংলায় অনুবাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যাতে দেওবন্দের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই ইতিহাস জানতে পারেন।
আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়াকে আমি এ গ্রন্থের একটি কপি এনে দিয়েছি। তিনি এই বইয়ের অনুবাদ করিয়েছেন। আল্লাহ তাকে এবং অনুবাদকদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুন, তাদের এই খেদমত কবুল করুন।
বইটি প্রকাশিত হয়েছে, এই বইয়ের মাধ্যমে দেওবন্দের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানা যাবে। আমাদের পূর্বসূরিদের খেদমতের কথা জানা জানা যাবে। তারা মাদরাসার চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ না থেকে ইসলাম যেখানে যে খেদমতের প্রয়োজন হয়েছে, সেখানেই জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।
আপনারা জানেন, ১৮৫৭ সালে যখন ভারতের দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ সংঘটিত হয়, প্রথমটি হয়েছিল ১৮৩২ সালে। ওই যুদ্ধে হজরত সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ (রহ.) এবং হজরত শাহ ইসমাঈল শহীদ (রহ.) উভয়ই শহীদ হন। এরপর ১৮৫৭ সালে দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। এই সময় দিল্লিতে তেত্রিশ হাজার আলেমকে ফাঁসি দেওয়া হয়। মীরাঠ, সাম্ভল, এবং এলাহাবাদসহ যেসব জায়গায় স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেখানেও আলেমদের হত্যা করা হয়।
হজরত গাঙ্গুহি (রহ.) এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাকে বন্দি করে জেলে পাঠানো হয়। হজরত নানুতবী (রহ.) ব্রিটিশদের হাত থেকে কোনোক্রমে রক্ষা পান। হজরত হাজী ইমদাদুল্লাহ (রহ.) কে গোপনে মক্কা মোকাররমায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়, কারণ তিনি ছিলেন সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ।
এমতাবস্থায় যখন সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলো, তখন আলেমরা বুঝতে পারলেন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গেছে। তেত্রিশ হাজার আলেমকে হত্যা করা হয়েছে। শহীদদের স্ত্রীরা ঘরে বিধবা হয়ে বসে আছেন, ছোট ছোট সন্তানরা এতিম হয়ে গেছে। বাবার অনুপস্থিতিতে মায়েরা সন্তানদের ভিক্ষা করতে পাঠাচ্ছেন, যাতে তারা ভিক্ষার খাবার নিয়ে এলে পরিবারের মুখে অন্ন জোটে।
এই সুযোগে ব্রিটিশ চার্চের লোকেরা এগিয়ে এসে মায়েদের বলত, ‘আপনার সন্তানকে আমাদের হাতে দিন। আমরা তাকে বিনামূল্যে পড়াশোনা করাবো, কাপড় দেবো, থাকার জায়গা দেবো। সে পড়াশোনা শেষ করার পর আমরা তাকে সরকারি চাকরি দেবো। এতে সে নিজেও ভালো থাকবে এবং আপনারাও ভালো থাকবেন।’ এই প্রলোভনে পড়ে অনেক মা সন্তানদের ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতেন।
আলেমরা লক্ষ্য করলেন, যাদের বাবারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহীদ হয়েছেন, ব্রিটিশরা এখন সেই সন্তানদের নিজেদের অনুগত বানাতে চাচ্ছে। তখন আলেমরা বসে চিন্তা করলেন এবং ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের নয় বছর পর, ১৮৬৬ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করলেন।
তারা বললেন, ‘আপনাদের সন্তানদের আমাদের কাছে দিন। আমরাও বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করব। আমরা তাদের পড়াবো, খাওয়াবো, পরিধানের বস্ত্র দিব এবং সেই শহীদদের সন্তানদের পুনরায় মুজাহিদ বানাবো।’
ব্রিটিশদের কাছে ছিল ক্ষমতা। তারা বলত, ‘আমাদের সাম্রাজ্যের কোথাও সূর্য অস্ত যায় না।’ তারা অর্থ-সম্পদ দিয়ে শিক্ষা দিলে দিতে পারত। কিন্তু দেওবন্দের আলেমরা ছিলেন আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তাদের কাছে এই কাজের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ ছিল না। তারা শুধু জাতিকে একটি বার্তা দিলেন- ‘আমরা একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছি। এটি যদি টিকে থাকে, তবে তোমরা টিকে থাকবে। তোমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম টিকে থাকবে। এটি যদি ধ্বংস হয়ে যায়, তবে তোমরাও ধ্বংস হবে, তোমাদের প্রজন্মও ধ্বংস হবে এবং ঈমানও অবশিষ্ট থাকবে না।’ ফলে দেখা গেল, যার যা ছিল, তা মাদরাসায় দান করে দিল।
এই একটি মাদরাসা থেকে আজ লক্ষাধিক মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে যাওয়া হয়, সেখানেই মাদরাসা দেখা যায়। এই মাদরাসাগুলো হয় দারুল উলুম দেওবন্দের সন্তান, নয়তো তার সন্তানের সন্তান। বাংলাদেশেও অসংখ্য মাদরাসা রয়েছে, যার প্রকৃত সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। এ সব মাদরাসা দারুল উলুম দেওবন্দের ঐতিহ্যের ধারক।
দেওবন্দের আলেমরা একটি নীতি স্থির করেছিলেন- কোনো সরকার বা ক্ষমতাশালী ব্যক্তির অর্থে মাদরাসা পরিচালিত হবে না। এটি হজরত গাঙ্গুহি (রহ.), হজরত নানুতবী (রহ.), এবং হজরত শায়খুল হিন্দ (রহ.)-এর অনুপম নীতি-আদর্শ। এই নীতির কারণেই দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষাপদ্ধতি আজও অক্ষত। তাদের শিক্ষাব্যবস্থা আজও সংরক্ষিত।
দারুল উলুম দেওবন্দের দীর্ঘ গৌরবময় এই ইতিহাস এই বইয়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে। যারা এই বই রচনায় ও অনুবাদে অবদান রেখেছেন, আল্লাহ তাদের কাজ কবুল করুন।