২০ দিনের সফরে বাংলাদেশ আসছেন মুফতি সাইয়্যিদ ফয়সাল নাদীম শাহ। শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাত পৌনে এগারোটায় তিনি পাকিস্তান থেকে দুবাই হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবেন বলে জানা গেছে।
মুফতি ফয়সাল নাদীম রাওয়ালপিন্ডির (পাকিস্তান) মারকাযু নাদীমুল কুরআন মাদরাসার পরিচালক এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব, সুবক্তা ও পাকিস্তানের শীর্ষ আলেম সাইয়্যিদ আবদুল মজিদ নাদীম (রহ.)-এর সুযোগ্য সন্তান।
মুফাসসিরে কোরআন মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ্ আইয়ুবীর আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। মারকাযুত তারবিয়াহ বাংলাদেশ (আলমনগর, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা) থেকে তার সফর তত্ত্বাবধান করা হবে। সফরের যাবতীয় বিষয়াদী দেখভাল করছেন মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান ও মাওলানা সালেহ আহমদ আজম।
বিজ্ঞাপন
পাকিস্তানের এই আলেম বাংলাদেশ সফরে ৪ জানুয়ারি বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ৫ জানুয়ারি মারকাযুত তারবিয়াহ বাংলাদেশ, ১০ জানুয়ারি সাভার বলিয়ারপুরের যমযম নূর সিটি জামে মসজিদ, ১১ জানুয়ারি সিলেট জামেয়াতুল খাইর আল ইসলামি, ১২ জানুয়ারি গওহরডাঙ্গা মাদরাসার উলামা মজলিস ও যশোর দারুল আরকাম মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিল, ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পটিয়া মাদরাসা, ২১ জানুয়ারি রংপুর জুম্মাপাড়া মাদরাসা ও ২২ জানুয়ারি উত্তরা ১৩ নং সোসাইটির আয়োজনে ওয়াজ মাহফিলসহ ঢাকা, রংপুর, সিলেট, যশোর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন জেলায় ওয়াজ মাহফিল, খতমে বোখারি ও বার্ষিক ইসলামি মহা সম্মেলনে অংশ নেবেন।
মুফতি ফয়সাল নাদীম ইতোমধ্যে দ্বীনী সফরে জাপান, মরিশাস, ফ্রান্স, মৌরিতানিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।
বিজ্ঞাপন
২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে পাকিস্তান ফিরে যাবেন তিনি।
মুফতি ফয়সাল নাদীমের বাবা সাইয়্যিদ আবদুল মজিদ নাদীম (রহ.) অনেকবার বাংলাদেশ সফর করেছেন। তার হৃদয়ছোঁয়া বয়ানের স্মৃতি এখনও ধর্মপ্রাণ মানুষকে আন্দোলিত করে।
সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় হতে বাংলাদেশি হজ এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রীর কোটা ১ হাজার জন নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় থেকে এক চিঠি মারফত বাংলাদেশকে এ তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়।
সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রীর কোটা প্রথমে ২৫০ জন ও পরে ৫০০ জন করার বিষয়ে সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রীকে ২টি আধা-সরকারি পত্র দেন। কিন্তু সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট কমিটির নিকট হতে হজযাত্রীর কোটা কমানোর বিষয়ে সম্মতি মেলেনি।
এ পরিস্থিতিতে গত ৪ জানুয়ারি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম অডিটোরিয়ামে হজ পরিচালনাকারী এজেন্সি মালিক ও পরিচালকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ সভায় হজ এজেন্সি মালিকদের পক্ষ হতে হজযাত্রীর কোটা কমানোর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করা হয়।
বিষয়টি অবহিত করার জন্য সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার যমুনা কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ধর্ম উপদেষ্টা। সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টাকে ২০২৫ সালের হজ ব্যবস্থাপনার অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন ধর্ম উপদেষ্টা। তিনি হজ ব্যবস্থাপনার সার্বিক অগ্রগতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টা সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হজ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে নির্দেশনা দেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক উপস্থিত ছিলেন।
সমস্ত প্রতিক্রিয়া মনোযোগের যোগ্য নয়। কিছু গঠনমূলক এবং আপনার জন্য ভালো। পক্ষান্তরে কিছু প্রতিক্রিয়া বিষাক্ত আর আপনার সুস্থতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং বিচক্ষণ হতে শিখুন; সর্বদা আপনার মানসিক শান্তি এবং সুস্থতা রক্ষা করুন।
সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সর্বদা সৎ পথে রাখুন। আমাদের ঈমানের ওপর অটল রাখুন। আমাদেরকে কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত না করুন। আমাদেরকে আগুন ও কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন। সর্বোচ্চ জান্নাতকে আমাদের শেষ আবাস করুন।
বিষয়গুলো অন্ধকারে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নির্জন রাতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন। যে আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, তার কাছে কাতরকণ্ঠে অভাব-অভিযোগের কথা জানান। মনের কথাগুলো খুলে বলুন, তিনি ফিরিয়ে দেবেন না। তিনি আপনাকে আলোর পথ দেখিয়েছেন এবং হৃদয়ের ভারাক্রান্ততাকে হালকা করেছেন। সবসময় আপনার জন্য তিনি আছেন, তাকে পরমভাবে বিশ্বাস করুন।
আপনি যা তা দিয়েই আপনি আকৃষ্ট করবেন। এটাই বাস্তব সত্য। ভালো কাজ করুন তা আবার আপনার কাছেই ফিরে আসবে। সদয় হোন এবং আপনার প্রতিও সদয় হবার একই প্রস্তাব দেওয়া হবে। আপনি যখন ইতিবাচক শক্তির প্রতিফলন ঘটান তাহলে আপনি অবশ্যই ইতিবাচকতাকেই আকৃষ্ট করবেন।
অতএব ভালো কিছু করার জন্য প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হোন, কারণ আপনি যা দেবেন সেটিই আপনি ফিরে পাবেন!
সব কিছু সবার জানার দরকার নেই। কেউ সেভাবে করে না। মনে রাখবেন, আমরা সবাই এক একটা কাজ করছি। প্রতিদিন, আমরা আরও শিখতে এবং আরও ভালো হতে চেষ্টা করি। এটাই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার ভাবনা চিন্তায় যারা জগাখিচুড়ি সৃষ্টি করে তাদেরকে না বলু্ন। যারা আপনাকে বিরক্ত করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে কাজ করতে থাকে তাদেরকেও। যারা সবসময় শিকারের ভূমিকা পালন করে যদিও এটা স্পষ্ট যে তারা ভুল করছে সেসব ব্যক্তিকেও না বলুন। যারা আশা করে যে আপনি তাদের অগ্রাধিকার দেবেন কিন্তু আপনার জন্য একই কাজ করবে না- তাদেরও এড়িয়ে চলুন।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার জন্য যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা অনুসরণ করে আপনি যখন সঠিক কাজটি করেন এবং যা তিনি নিষিদ্ধ করেছেন তা পরিত্যাগ করেন তখন এটি কখনই কোনো বিঘ্নতার দিকে আপনাকে নেবে না। এটি প্রকৃতপক্ষে আপনাকে তার সন্নিকটেই নিয়ে আসবে। সুতরাং আপনি নিজে কী নিজের মধ্যে রাখছেন সে সম্পর্কে সচেতন থাকুন, কারণ এটি তার সঙ্গে আপনার সংযোগে প্রভাব ফেলতে পারে।
দয়াবান হওয়ার জন্য কোনো খরচ করতে হয় না। সদয় কাজ এবং সদয় শব্দগুলো কাউকে তাদের পথে ফিরিয়ে আনতে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে। শক্তি, অনুপ্রেরণা, আত্মসম্মান এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর অন্তর্নিহিত ক্ষমতা তাদের রয়েছে। আপনি পেছনে কী ফেলে এসেছেন?
মনে রাখবেন, এমন একটি পৃথিবীতে আপনি আছেন যেকোনো কিছু এখানে করতে পারেন, সদয় হওয়াকেই বেছে নিন।
মানুষের সঙ্গে আপনার সমস্যার বিবরণ শেয়ার করা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। বেশিরভাগই এসবকে পাত্তা দেয় না এবং এটি নিয়ে গসিপ করতে পছন্দ করে। এ নিয়ে বরং সর্বশক্তিমানের কাছে যান। তাকে বলুন, মন হালকা হবে, সমস্যারও সমাধান হবে। ভালো কাজ করুন। ভালো ভাবুন, ভালো বলুন।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে একটি সৎকর্ম করবে, সে তার দশগুণ পাবে এবং যে একটি মন্দ কাজ করবে, সে তার সমান শাস্তিই পাবে। বস্তুতঃ তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।’ -সুরা আনয়াম : ১৬০
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি একটি সৎকাজ করে, সে দশটি সৎকাজের সওয়াব পায় বরং আরো বেশি পায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একটি গোনাহ করে সে তার শাস্তি এক গোনাহর সমপরিমাণ পায় কিংবা তাও আমি মাফ করে দেব। যে ব্যক্তি পৃথিবী ভর্তি গোনাহ করার পর আমার কাছে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আমি তার সঙ্গে ততটুকুই ক্ষমার ব্যবহার করব। যে ব্যক্তি আমার দিকে অর্ধহাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই এবং যে ব্যক্তি আমার দিকে একহাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে বা (অর্থাৎ দুই বাহু প্রসারিত) পরিমাণ অগ্রসর হই। যে ব্যক্তি আমার দিকে লাফিয়ে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।’ -মুসনাদে আহমাদ : ৫/১৫৩
‘আল্লাহর ঘরে যাওয়ার ডাক এসেছে, আপনি কি সাড়া দেবেন? আমাদের উমরা কাফেলার সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হলো, সঙ্গে থাকবেন প্রখ্যাত এক ইসলামিক স্কলার। তিনি শুধু শরিয়া গাইডলাইন দিয়েই ক্ষান্ত হবেন না, বরং কিভাবে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়ে উমরা সম্পন্ন করতে হয়, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন। উমরা শুধু একটি ইবাদত নয়, এটি এমন একটি সুযোগ। এর মাধ্যমে আপনি আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা ও রহমত প্রার্থনা করতে পারবেন এবং নিজের আখেরাতকে সফল করতে পারবেন।’
‘উমরাপালনকারীদের সর্বোত্তম সেবাই আমাদের প্রতিশ্রুতি। অভিজ্ঞতার আলোকে মানসম্পন্ন সেবা দেই। এর অন্যতম হলো, দক্ষ সার্ভিস টিমের মাধ্যমে সময়মত খাবার পরিবেশন। আরামদায়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। মক্কা-মদিনায় মানসম্পন্ন আবাসনের ব্যবস্থা। নারীদের জন্য নারী গাইড।’
এভাবেই হজ ও উমরার এজেন্সিগুলো বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। আবার কোনো এজেন্সি উমরা পালনের আগে-পরে ভিন্ন কোনো দেশ ঘুরে আসার প্যাকেজ ঘোষণা করে। ফলে মানুষ ব্যাপকভাবে উমরার দিকে ঝুঁকছে।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর এক নেতা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘হজের বিপরীতে উমরার খরচ অনেক কম। সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকার মধ্যে একজন উমরা করতে পারেন। ফলে খরচ বাঁচাতে অনেকেই উমরার দিকে ঝুঁকছেন।’
তার মতে, ‘ছোট ছোট উমরা গ্রুপ পরিচালকদের আকর্ষণীয় উমরা প্যাকেজ অফার ও নানা তৎপরতা উমরা যাত্রী বাড়ার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে সৌদি আরবের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণের সুবিধার সঙ্গে আরও দেশ ভ্রমণের সুযোগ তরুণদের উমরা পালনে বেশি আগ্রহী করে তুলছে।’
বাংলাদেশে হজ এজেন্সি রয়েছে প্রায় দেড় হাজার। এর বাইরে ট্র্যাভেল এজেন্টরাও হজ ও উমরা নিয়ে কাজ করেন।
অ্যাসোসিয়েন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আব্দুস সালাম জানান, ‘হজের খরচ বেড়েছে। এটা সব দেশেই। এর সঙ্গে ডলারের দাম বাড়ায় আরো খরচ বেড়েছে। একজনের হজের খরচ দিয়ে চার জন উমরা করতে পারেন। ফলে উমরার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এখন বছরে পাঁচ লাখের বেশি মুসলমান উমরা করতে যান।’
রয়েছে বিস্তর অভিযোগ উমরাকারীদের বড় একটি অংশ খুব আরামে মক্কা-মদিনার সফর শেষ করে দেশে ফেরেন এমনটা নয়। উমরার এজেন্টদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ও অব্যবস্থাপনার কথা প্রায়ই শোনা যায়।
বিশেষ করে বৃদ্ধ ও অসুস্থ অনেকেই উমরা পালন করতে গিয়ে হারিয়ে যান। এমনও হয়েছে মসজিদে হারামে নামাজ পড়তে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে দলছুট হয়ে দুই-তিন পর্যন্ত একা থাকেন। এভাবে হারিয়ে যাওয়া রোধ করতে অনেকটাই উদাসীন থাকে এজেন্সিগুলো। এমনকি সঠিকভাবে উমরা পালনের বিষয়েও তারা সাহায্য করে না।
নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক এক গ্রুপ লিডার বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক যাত্রীকে হোটেলের কার্ড, মোবাইল ও পরিচয়পত্র রাখতে বলি। তারা কথা না শুনলে আমাদের কি করার আছে?’
তিনি বলেন, তার পরও হারিয়ে গেলে আমরা যথাসাধ্য খুঁজে দেখি। কিন্তু এত বড় প্রাঙ্গণে কারো খোঁজ করা অনেকটা খড়ের গাদায় সুঁই খোঁজার মতো।
বাংলাদেশ থেকে উমরা পালন করতে গিয়ে এভাবে হারিয়ে যাওয়া, অসুস্থতা ও প্রতারিত হওয়াসহ নানা বিড়ম্বনার মুখে পড়েন যাত্রীরা। যদিও হারিয়ে যাওয়া ঠেকাতে যাত্রীদের সচেতনতার কথা বলেন মক্কার ইবরাহিম খলিল রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিস কিংবা মদিনার কিং ফাহাদ ২১ নম্বর গেইটের কাছে বাংলাদেশ হজ অফিসের দায়িত্বশীলরা।
কয়েকজন উমরা পালনকারী ও ভুক্তভোগী বলেন, হারিয়ে গেলে কোথায় অপেক্ষা করতে হবে এমন একটি জায়গা আগে থেকেই ঠিক করে রাখলে দুশ্চিন্তা এড়ানো যায়।
গ্রুপ লিডারদের প্রতারণা বছরজুড়ে উমরার ব্যবস্থাপনা করে বেসরকারি এজেন্সিগুলো। এখানে সরাসরি লাইসেন্সধারী এজেন্সির বাইরে বিভিন্ন গ্রুপ লিডাররা এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা-টিকেট করিয়ে হোটেল ভাড়াসহ সব ব্যবস্থা করে। উমরার ক্ষেত্রে এমন গ্রুপের সংখ্যাই বেশি। আর তাদের মাধ্যমে উমরা পালন করতে গিয়ে নানা ভোগান্তিতে পড়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। এখানে বড় অভিযোগের জায়গা হলো, বিভিন্ন গ্রুপ লিডাররা তাদেরকে এক ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে যান। পরে গিয়ে দেখেন উল্টা চিত্র।
উমরা করতে গিয়ে এমন বিরূপ অভিজ্ঞতার কথা জানান আবুল কালাম।
তিনি বলেন, ‘সবাই চান মক্কায় থাকার সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কাবা শরিফে পড়তে আর মদিনায় থাকলে মসজিদে নববিতে পড়তে। তাই তারা চান হোটেল যেন হাঁটার দূরত্বে হয়। এ জন্য গ্রুপ লিডাররা বেশি টাকা চার্জ করে। কিন্তু গিয়ে দেখা যায় যে, হোটেল থেকে মসজিদ এতই দূরে যে হেঁটে যাওয়ার উপায় নাই। তার মধ্যে নোংরা পরিবেশ, পানি না থাকা, নোংরা টয়লেটের সমস্যা তো থাকেই।’
এ বিষয়ে সরকারের সু-নজর থাকা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
এক্ষেত্রে কোনো গ্রুপ লিডারের মাধ্যমে তৃতীয় মাধ্যম হিসেবে উমরা না যেয়ে এজেন্সির মাধ্যমে সরাসরি উমরায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে হজ মিশন।
তাদের স্পষ্ট কথা, কোনোভাবেই গ্রুপ লিডার নামধারী তৃতীয় পক্ষ বা বেনামী মোয়াল্লেমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ না হওয়া।
এজেন্সিগুলো বিভিন্ন দামে নানা ধরনের প্যাকেজ সুবিধা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্যাকেজের টাকা দেখে নয় বরং সার্ভিস দেখে বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এজেন্সির মাধ্যমে উমরা পালন করা ব্যক্তিরা।
তারা বলছেন, প্যাকেজে থাকা-খাওয়া, ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন ও ফ্লাইট ভাড়াসহ সব সুবিধা আছে কি-না তা যাচাই করে প্যাকেজ নির্বাচন করতে হবে। কম টাকার প্যাকেজে অনেক জরুরি সার্ভিস বাদ পড়তে পারে, আবার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
থাকা-খাওয়া মক্কা-মদিনায় যেখানে থাকবেন, ওই হোটেল, বাসা কী ধরনের, মসজিদ থেকে কত দূরে, লিফট আছে কি-না, একেক রুমে কতজন থাকবেন, একটি টয়লেট কতজনের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে- এসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে যেতে হবে। এমন পরামর্শ দিয়েছেন অভিজ্ঞরা।
সৌদি আরবে পৌঁছে তিন বেলা খাবার দেওয়া হবে কি-না, খাবার না দিলে কোথায় কী ধরনের খাবার পাওয়া যাবে, কত খরচ পড়বে তার ধারণা রাখার পরামর্শ দেন তারা।
অসুস্থতা উমরার সফর সাধারণত ১৫ দিনের হয়। কিন্তু সফরে বিরূপ আবহাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘ পথ হাঁটা এবং প্রচুর মানুষের ভিড় থাকায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা থাকা জরুরি।
কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের জন্য মক্কা ও মদিনায় মিশন অফিসে স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা আছে বলে জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অধি-শাখার উপ-সচিব ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক।
রোগীর পরিস্থিতি গুরুতর মনে হলে চিকিৎসকরা বড় হাসপাতালে রেফার্ড করে থাকেন।
এর বাইরে মক্কা-মদিনার ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হজ ও উমরাকারীদের জন্য স্বাস্থ্য ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়।
তবে কারো যদি নিয়মিত কোনো ওষুধ খেতে হয়, তাহলে যতদিন সফরে থাকবেন ওই হিসেব করে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সঙ্গে রাখা। কেননা সৌদি আরবে কেউ ফার্মেসি থেকে চাইলেই ওষুধ কিনতে পারে না। তার জন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখাতে হয়।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওয়াকফ ও ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, ২০২৪ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের বিমান হামলায় প্রায় ১ হাজার মসজিদ ধ্বংস হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ইসরায়েলি সেনারা ৯৬৬টি মসজিদ ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে ৮১৫টি মসজিদ পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে এবং ১৫১টি মসজিদ আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৯টি কবরস্থানও ধ্বংস করা হয়েছে, একাধিক কবর ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। বিমান হামলায় ৩টি গির্জা ধ্বংস করা হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মিডল ইস্ট মনিটর সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এই ধ্বংসযজ্ঞের খবরটি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে এবং তা গত ১৬ মাস ধরে চলমান। আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনা হলেও ইসরায়েলি সেনাদের হামলা থামছে না।
গাজার জনগণের ওপর এই বর্বর হামলার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার প্রাক্তন যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গাজার জনগণের ওপর দুর্ভিক্ষ চালানোর অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
উল্লেখ্য, গাজার অবরুদ্ধ অবস্থায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম দিকে ৫ জানুয়ারি গাজা উপত্যকায় একদিনেই অন্তত ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এ ছাড়া গত তিন দিনে ১০০ বারের বেশি বোমা হামলা চালিয়ে ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এমন পরিস্থিতিতে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের এই ধ্বংসযজ্ঞ শুধু মানুষ হত্যা বা বসতিগুলোর ধ্বংস নয়, বরং এটি ফিলিস্তিনির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধ্বংসের অংশ। মসজিদ, গির্জা, কবরস্থান- এসব ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থানগুলো ধ্বংস হওয়ায় প্যালেস্টাইনি জনগণের চিহ্ন এবং ঐতিহ্যও বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজার মানবিক সংকট নিয়ে নিন্দা জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনও দৃশ্যমান হয়নি।