ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মূল ভবনের ২০৪ নম্বর রুমের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে ঘুমন্ত ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে ৩ দফা দাবি জানিয়েছে এ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মহসিন হল থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে এ দাবি উপস্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা।।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবি উত্থাপন করেন হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হল ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাদিক।
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে আপনার নিকট আমরা নিম্নোক্ত দাবিগুলো পেশ করছি-
১. অবিলম্বে ঐতিহ্যবাহী হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে নতুন ভবন তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে সুস্পষ্ট সময়সীমাসহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে হবে এবং আগামী ১ মাসের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে।
২. নতুন ভবন হওয়ার আগ পর্যন্ত হলে শিক্ষার্থী এলটমেন্ট কমিয়ে দিতে হবে।
৩. নতুন ভবন হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর, কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের দপ্তর, এস্টেট অফিস ও হল প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে আগামী তিন দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু করতে হবে।
একই হলের শিক্ষার্থী সাদেকুর রহমান সানী বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর হাজার কোটি টাকা বাজেট পায়। কিন্তু নতুন কোনো হল হয় না। মুহসীন হলের বেশিরভাগ রুমই ঝুঁকিপুর্ণ। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নতুন কোনো ভবন নির্মানের কথা আসছে না। ফলে শত শত আবাসিক শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলে থাকছে। জগন্নাথ হলের মতো ট্র্যাজেডি আমরা চাই না। নিরাপদ আবাসিক হল ও পড়াশোনার সুযোগ চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে।"
হাজী মোহাম্মদ মহসিন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, "বাংলাদেশের মানুষ মশারি টানায় মশার ভয়ে কিন্তু মহসিন হলে শিক্ষার্থীরা মশারি টানায় শুধুমাত্র মশা থেকে দূরে থাকার জন্য নয় তাদের উপর যেন ছাদ থেকে পলেস্তরা খসে না পড়ে, তার থেকে দূরে থাকার জন্য।"
"মুহসিন হল ঐতিহাসিক হল। এ হলেই প্রথম, আমি কে তুমি কে রাজাকার রাজাকার স্লোগান দেয়া হয়েছে। আমাদের সুস্পষ্ট দাবি, মুহসিন হলে সংস্কার কাজ করতে হবে। ২০১৪ সালের পর থেকে এদিকে কোন সংস্কার কাজ হয়নি। আমরা মুহসীন হলের হল অডিটরিয়ামসহ।"
উল্লেখ্য, এ প্রতিবেদন লেখা অবস্থায় সর্বশেষ বিকেল ৪ টার দিকে এ হলের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,"উপাচার্য মহোদয় ইউজিসির একটি সভায় আছেন। তিনি আসা পর্যন্ত আমরা আলোচনা করবো।"