ইবির সিলেবাসে যুক্ত হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর সংলগ্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি সংগ্রহশালা স্থাপনে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (৮ জানুয়ারী) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
উপাচার্য ড. নকীব নসরুল্লাহ গঠিত কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল। অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন ইইই বিভাগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান এবং এস্টেট প্রধান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।
এবিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, উপাচার্য মহোদয় কমিটি গঠন করেছেন তবে আমরা এখনো এই বিষয়ে একত্রে বসিনি। কমিটির বাকী সদস্যরা মিলে বসে আমরা করণীয় সম্পর্কে ঠিক করবো। একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স স্থাপন করাটা সবার ই দীর্ঘদিনের দাবী, আমি নিজেও দীর্ঘদিন যাবত এই মতবাদে বিশ্বাসী। আশা করছি একটি অসাধারণ স্মৃতি সংগ্রহশালা সবার জন্য দৃশ্যমান করতে পারবো।
এর আগে, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক সংগঠন জিয়া পরিষদ ও শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শহীদ জিয়াউর রহমান স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তর সংলগ্ন স্থানে শহীদ জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবী জানানো হয়েছিল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রসায়ন বিভাগের ২০০৯-০১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন বাবরকে আহ্বায়ক ও দর্শন বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আহমেদ অনিককে সদস্যসচিব করে শাখা ছাত্রদলের ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। আহ্বায়ক কমিটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি ঘোষণা করেছে৷ ১৭৭ সদস্যের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে ৫৭ জন ও সদস্য হিসেবে ১১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হলো।
নবনিযুক্ত আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙে আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ আমাদের একটি সাংগঠনিক কাঠামো উপহার দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক জনাব তারেক রহমান, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল ভাই এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এটি মূলত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে ঢেলে সাজানোর জন্য স্বল্পকালীন কমিটি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সবগুলো হল কমিটি, ফ্যাকাল্টি এবং বিভাগ কমিটি গঠন করে সন্মেলনের মাধ্যমে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবো ইনশাআল্লাহ৷
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সোহেল-সৈকতের নেতৃত্বে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট জাবি ছাত্রদলের কমিটি গঠিত হয়। এরপর থেকে জাবিতে আর কোনো কমিটি গঠিত হয়নি। পরে ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর ৫টি কলেজ ও ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। একইসাথে জাবি শাখা ছাত্রদলেরও কমিটিও বিলুপ্ত হয়৷
পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনের লিচু তলায় অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এটি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনেককে তাদের দাপ্তরিক কাজ করতে দেখা গিয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, কর্মকর্তা কর্মচারীরা যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে, সে প্রতিষ্ঠানে তার ছেলেমেয়েদের একটা হক আছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদের সন্তানের অধিকার যতদিন না পর্যন্ত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, আমাদের সংগ্রাম চলবে।
আন্দোলনরত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের সাথে আমাদের কোনো সংঘর্ষ নেই। হয়তো তারা না বুঝে মিসগাইডেড হচ্ছে। গত ২ জানুয়ারি প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে যে ন্যাক্কারজনক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আমরা যেকোনো মূল্যে তা বাতিল চাই। পৃথিবী সৃষ্টির লগ্ন থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা চলে আসছে। কর্মকর্তা কর্মচারীরা যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে সে প্রতিষ্ঠানে তার ছেলেমেয়েদের একটা হক আছে। যেখানে সারা বাংলাদেশে পোষ্য কোটা বহাল আছে, সেখানে শুধু আমরা কেন বঞ্চিত হবো?
রাবি অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, আজকের ধর্মঘট আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায় করার জন্য। এই দাবি প্রশাসনকে মানতে হবে। যদি এই প্রশাসন অসহায়ভাব প্রকাশ করে, তাহলে দেশেতো একটা সরকার আছে। বাংলাদেশ সরকার কি আমাদের আন্দোলন সম্পর্কে অবহিত নয়? তারা চাইলে আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করলেই ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদের সন্তানের অধিকার যতদিন না পর্যন্ত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, আমাদের সংগ্রাম চলবে।
উল্লেখ, গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত পোষ্য কোটা বাতিল করতে বাধ্য হয় রাবি প্রশাসন। এতে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার দুই ঘণ্টার অবস্থান ধর্মঘট এবং গত সোমবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১১টায় রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়ায় বাবনপুর গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের কবরে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
কবর জিয়ারত শেষে রাবি ও বাউবি উপাচার্য শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নেন এবং তাদের সাথে কথা বলেন। এসময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন-অর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।