জাবিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঘুরতে আসলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক শিমুলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও শিক্ষার্থীরা৷ তবে সেই ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়ানোর তদবির করায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির এক যুগ্ম আহ্বায়ককেও পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের সামনে থেকে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
আটক ঐ ছাত্রলীগ নেতার নাম মিরাজুল ইসলাম খান ওরফে শিমুল। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের জয়-লেখক কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।
এছাড়া তদবির করা ছাত্রদল নেতা আহমদ উল্লাহ জাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বন্ধু আহমদ উল্লাহর আমন্ত্রণে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন ছাত্রলীগ নেতা শিমুল। তাকে চিনতে পেরে পরিচয় জানতে চান একদল শিক্ষার্থী। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে শিমুলকে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহমদ উল্লাহ এসে তাকে ছাড়াতে তদবির করেন। এক পর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডি আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে শিমুলকে হস্তান্তর করে। এসময় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে তদবির করতে আসা ছাত্রদল নেতাকেও পুলিশে দেয়া হয়৷
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম লিমন বলেন, আমরা নতুন কলা ভবনের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক শিমুলকে দেখি। দেখেই ওকে চিনতে পারি এবং পরিচয় জিজ্ঞেস করি। কিন্তু সে পরিচয় গোপন করে এবং অন্য একটা পরিচয় দেয়। পরে ফেসবুক আইডির মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করি। পরে আমরা প্রক্টর স্যারকে অবগত করি এবং প্রক্টর স্যারের সহায়তায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করি৷
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াহিয়া জিসান বলেন, আমি এবং নাজমুল টিএসসি থেকে হলে আসতেছিলাম। এসময় নতুন কলার সামনে থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-দপ্তর সম্পাদক শিমুলকে দেখতে পাই। নাজমুল ওকে চিনতে পারে। এরপর ওর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানাই৷ শিমুল এটা স্বীকার করেছে যে জাহাঙ্গীরনগরে জাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আহমাদুল্লাহ তাকে ক্যাম্পাসে এনেছে৷ শান্তিপূর্ণভাবে আমরা এই সন্ত্রাসীকে পুলিশে সোপর্দ করেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটকের খবর পেয়ে আমরা এসেছি। পরে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করি।
শাখা ছাত্রদল নেতার তদবিরের বিষয়ে আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, আমি এ বিষয়টি শুনেছি। যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে আমরা বিস্তারিত জেনে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক অলক কুমার মন্তব্য করতে রাজী হননি৷