এখন হুট করে পরিবর্তন আনতে চাইলেও পারবো না; অসহায় পাপন

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, কলকাতা থেকে | 2023-10-29 19:22:39

এই প্রথম বড় কোনো টুর্নামেন্ট বা সিরিজে এতো দেরিতে এসে মাঠে খেলা দেখলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপন। সাধারণত তিনি মাঠে বসে জাতীয় দলের খেলা মিস করেন না। তাছাড়া দল যখন বিপদে, সমস্যায় এবং হারের গর্তে থাকে তখন প্রায় সঙ্গে তাকে দলের কাছে ছুটে চলে যেতে দেখা যায়।

এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পাঁচটি ম্যাচ হওয়ার পর ষষ্ঠ ম্যাচে দলের খেলা দেখেছেন নাজমুল হোসেন পাপন। এবং সেই ম্যাচেও হেরেছে বাংলাদেশ। তাও আবার নেদারল্যান্ডসের কাছে। বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে পাঁচ হার। তাও আবার টানা হার। এই হারের গর্তে ডুবে শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন।

পেছনের পাঁচ ম্যাচের কোনোটিইতে বাংলাদেশ মাথা তুলে দাড়াতে পারেনি। ম্যাচ বাঁচানোর মতো পরিস্থিতিই তৈরি করতে পারেনি। একপেশে ভঙ্গিতে হেরেছে।

কেন? সমস্যা কোথায়? আরো অনেকের মতো বিসিবি সভাপতি নামজুল হোসেন পাপনও সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন। জবাব কি পেলেন? সেই প্রসঙ্গে কাল কলকাতায় সাংবাদিকদের পাপন বললেন, ‘আমাদের দলে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লিটন দাস, শান্ত, সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ এবং মেহেদি হাসান মিরাজ ব্যাটসম্যান হিসেবে মোটামুটি প্রুভেন। একটা টুর্নামেন্টে বা সিরিজে প্রত্যেক খেলোয়াড় যে পারফর্ম করবে এমন কোনো কথা নেই। কোনোদিন দুজন খারাপ করে। পরে তারা আবার ভালো করে। কোনোদিন একজন খারাপ করে পরে সে খুব ভালো খেলে। আবার যে আজকে খুব ভালো খেলছে সে হয়তো পরে একটা ম্যাচে খারাপ খেলবে। এভাবে ভালো- খারাপ, খারাপ- ভালো চলে। এভাবেই আমরা দেখে এসেছি। এটা শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট নয়, যে কোনো দলের জন্য। যে কোনো খেলাতেই এটা সাধারণত হয়ে থাকে। এবং দিস ইজ ক্রিকেট। এটা হতেই পারে। দুর্ভাগ্যবশত আমরা এবারই যেটা দেখছি, আমাদের প্রথমদিকের চার-পাঁচজনই রান পাচ্ছে না। যেটা নাকি আগে কখনো আমি বাংলাদেশের দলের তো দেখিই নাই, আমি কোনো দলেও এমনকিছু কখনো দেখিনি। এরকম টুর্নামেন্ট খেলতে আসে যারা সেই পর্যায়ের কোনো দলের মধ্যে এমন ঘটনা আগে কখনো দেখিনি। আর তাই, এটা একটা পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত।’

নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে হার নিয়ে বাকিদের মতো বিসিবি সভাপতিও হতাশ। এমন কিছু যে হতে পারে এটা তার ধারণারও বাইরে ছিল। দলের এমন পারফরমেন্সের হিসেব মেলাতে পারছেন না তিনিও। বললেন, ‘নেদারল্যান্ডস ম্যাচে যা হলো সেটা তো পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত। এমন হারের কথা তো কখনো চিন্তা করা তো দূরে থাক। আমরা কখনো এটা ভাবতেই পারিনি। এতদিন ধরে খেলার পর এখন এমন অবস্থাও কি হতে পারে! তারপরও তো এটা হয়ে গেল! সেজন্য আজকে আমি খেলোয়াড়দের সঙ্গে এককভাবে বসতে চেয়েছি। আমি এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে বসেছি। তাদের কাছে জানতে চেয়েছি সমস্যা আছে কিনা। কোনোকিছুর অভাব আছে কিনা। তাদের কিছু লাগবে কিনা। আমি সাকিবের সঙ্গে বসেছি। মুশফিক-রিয়াদ একসঙ্গে ছিল। মিরাজ, লিটন দাস সবার সঙ্গে আমি আলাদা আলাদা করে বসেছি। কথা বলেছি। এদের সবাইকে আমি ওপেনলি বলেছি, কোনো সমস্যা থাকলো বলো। ওদের সকলের একটাই কথা, ওরা রান পাচ্ছে না- এটাই সমস্যা। এই লেভেলে এসে দলের প্রথম তিন চারজন যদি রান করতে না পারে, তাহলে কোনো লাভ হবে না। পরের দিকে যদি অন্যরা ভালোও করে কিন্তু তাতে ম্যাচ জিততে পারবো না। সেটাই মূলত সত্যি কথা। তবে কেন সবাই রান পাচ্ছে না, সেই প্রশ্নের উত্তর খেলোয়াড়দেরও জানা নেই। আমার কাছে মনে হয়েছে ওরা ( ক্রিকেটাররা) মেন্টালি অনেক ডাউন। তাই এখানটায় আমাদের খুব একটা কিছু বলার বা করার কিছু নেই। এটা বিশ্বকাপ চলছে। এখানে আমরা এখন হুট করে কোনো পরিবর্তন আনতে চাইলেও কিন্তু পারবো না। এটা তো আমরা সবাই বুঝি। এখানটায় আমার কিছু করার নেই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর