এরশাদের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ডাক্তাররা

  • সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ / ছবি. সংগৃহীত

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ / ছবি. সংগৃহীত

ঢাকা : গতকাল মঙ্গলবার (২ জুলাই) পর্যন্ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ডাক্তাররা। কিন্তু বুধবার (৩ জুলাই) যখন ডাক্তারদের সঙ্গে কথা হয়, তারা তখন কিছুটা আশান্বিত বলে জানিয়েছেন।

বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথসভায় এমন তথ্য জানিয়েছেন এরশাদের ব্যক্তিগত সহকারী ও ভাস্তে মেজর (অব.) খালেদ আখতার। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য বার্তা২৪.কম-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এরশাদের দীর্ঘদিনের সহযোগী খালেদ আখতার—এরশাদের চিকিৎসাসহ অন্যান্য পারিবারিক বিষয়াদি দেখভাল করে থাকেন। দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য গেলেও এরশাদ তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যান। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালেও নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন তিনি।

রুদ্ধদ্বার বৈঠকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অভিপ্রায় নিয়ে আলোচনা হয়। এরশাদ চান মৃত্যুর পর তাকে এমন জায়গায় দাফন করা হোক, যেখানে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা থাকবে। এ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এরশাদের সমাধি ঢাকায় করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে এক-এগারোর কুশীলব সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি সামরিক কবরস্থানে দাফনের পক্ষে মতামত দেন। তবে অন্যান্য প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এর বিরোধিতা করে উন্মুক্ত এলাকায় দাফন করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন এমন জায়গায় দাফন করতে হবে, যেখানে সাধারণ জনগণ অবাধে যাতায়াত করতে পারবে।

এই আলোচনায় মোহাম্মদপুরে একটি খাস জমির কথা ওঠে। জমিটি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে অথবা ৩শ’ ফুট রাস্তায় জমি কিনে সমাধিসৌধ করার প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হয়। প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুন প্রয়োজনে ৫ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। অন্যদিকে আরডি মিল্কের মালিক প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন রংপুরে সমাধি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ২০ বিঘা জমি লিখে দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

আলোচনা শেষে কাজী ফিরোজ রশীদের নেতৃত্বে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। যারা এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে সুপারিশ দেবেন বলে বৈঠক সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, আমার বাবা তো মারা যাচ্ছে। আমি এতিম হয়ে যাচ্ছি। আজ আমি সন্তান হিসেবে আপনাদের কাছে পরামর্শ নেওয়ার জন্য ডেকেছি। বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। এ সময় অন্যরাও আবেগপ্লুত হয়ে পড়েন।