বাড়ির কাজ দেখতে রংপুর যাচ্ছেন এরশাদ

  • সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

দীর্ঘ বিরতির পর শুক্রবার (২৮ জুন) রংপুরে যাচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার এবারের সফরে থাকছে না কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি; বাড়ির নির্মাণ কাজ দেখাই অন্যতম উদ্দেশ্য বলে পার্টি সূত্র জানিয়েছে।

দুই রাত অবস্থান শেষে ৩০ জুন এরশাদের ঢাকায় ফেরার সূচিও প্রায় চূড়ান্ত। শারীরিক অসুস্থতার কারণে হেলিকপ্টারের যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে সবটাই নির্ভর করছে স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর। কোনো কারণে শরীর বেশি অসুস্থ হলে কর্মসূচি বাতিল হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

এরশাদের ব্যক্তিগত স্টাফ জাহাঙ্গীর আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্যারের (এরশাদ) ২৮ তারিখে রংপুর যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও পুরোপুরি চূড়ান্ত বলা যাচ্ছে না।
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/24/1561385431067.jpg
রংপুর শহরে অবস্থিত এরশাদের ব্যক্তিগত আবাস ‘পল্লী নিবাস’ সংস্কার করে তিনতলা ভবন গড়া হচ্ছে। এতদিন বাউন্ডারির মধ্যে আলাদা আলাদা ভবন ছিলো। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ থাকতেন দ্বিতল ভবনে। আর পিএসসহ অন্যান্য স্টাফদের ছিলো একতলা ভবন। এখন সবগুলো ভেঙে তিনতলা কমপ্লেক্স করা হচ্ছে। দ্বিতীয় তলায় এরশাদ ও ছেলে এরিখের কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এবার গেলে সেখানেই থাকবেন তিনি।

ভবনটির দ্বিতীয় তলার কাজ শেষ, চলমান রয়েছে তৃতীয় তলার ফিনিশিংয়ের কাজ। এবারের সফরের মূল উদ্দেশ্য থাকছে সেই বাড়ির কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন।

সবশেষ এরশাদ রংপুর সফরে গিয়েছিলেন ৩ মার্চ। তখনও বাড়ির কাজ দেখতেই রংপুরে গিয়েছিলেন। সেবার উঠেছিলেন হোটেল গ্র্যান্ড প্যালেসে।

এর আগে নির্বাচনের আগে ১ নভেম্বর রংপুরে গেলে সর্বশেষ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। লম্বা কর্মসূচি থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে শেষ পর্যন্ত কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে ঢাকায় ফিরেছিলেন এরশাদ।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে গত বছরের ২০ নভেম্বর ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সামনে সবশেষ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য রাখেন এরশাদ। এরপর অসুস্থতার কারণে আর কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি তিনি। ৬ ডিসেম্বর গাড়িতে করে অফিসের সামনে এলেও সেখানে বসে কথা বলেই চলে যান।

১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান এরশাদ। ভোটের মাত্র ৩ দিন আগে ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরলেও নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে যোগ দেননি। এমনকি নিজের ভোটও দিতে যেতে পারেননি সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।

ভোটের পর শপথ নেন আলাদা সময়ে গিয়ে। সেদিনও স্পিকারের কক্ষে হাজির হয়েছিলেন হুইল চেয়ারে বসে। ২০ জানুয়ারি ফের সিঙ্গাপুরে যান চিকিৎসার জন্য। সেখান থেকে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি। তবে এখনও কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়নি। সংসদ অধিবেশনে মাত্র একদিনের জন্য হাজির হয়েছিলেন তাও হুইল চেয়ারে ভর করেই।

অনেক দিন ধরেই অনেটাই জনসম্মুক্ষে আসছেন না সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। হাসপাতাল ও বাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ তার দৈনন্দিন জীবন। কূটনৈতিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতারে যোগ দিয়েছিলেন কয়েক মিনিটের জন্য।

পার্টি সূত্র জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ বোধ করছেন এরশাদ। অনেক শুকিয়ে গিয়েছিলেন, এখন তুলনামূলক উন্নতি হয়েছে। তবে নিজে নিজে হাঁটতে পারেন না। অন্যের সাহায্য নিয়ে অথবা হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেন। রংপুর যাওয়ার আগে-পিছে একদিন সংসদে যোগ দিতে চান। আর খুব দ্রুতই চিকিৎসার জন্য ফের সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা রয়েছে এরশাদের।