পাঞ্জাব কিংস আর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দুই দলই এই ম্যাচে এসেছিল ৬ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে, অর্থাৎ ম্যাচটা যেই হারবে, সেই চলে যাবে পয়েন্ট তালিকার তলানির আরও একটু কাছে। ম্যাচটা রোহিত শর্মার জন্য বিশেষ কিছুই ছিল। আইপিএল ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে তিনি যে খেলছিলেন ২৫০তম ম্যাচ। সেই ম্যাচে তার দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তাকে হতাশ করেনি। ১৯২ রান করে প্রতিপক্ষের ১৪ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়েও খানিকটা বিপাকে পড়ে গিয়েছিল। তবে শেষমেশ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটা জিতল তারাই। পাঞ্জাবকে ৯ রানে হারিয়ে মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে রোহিতকে জয় উপহার দিল মুম্বাই।
ঘরের মাঠে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাঞ্জাব। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তৃতীয় ওভারে প্রথম ধাক্কা পায়। ৮ বলে ৮ রান করে আউট হন ঈশান কিষাণ। রোহিত শর্মাও বড় কিছু করতে পারেননি। ২৫ বলে ৩৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। হাল ধরেন সূর্যকুমার যাদব। ৫৩ বলে ৭৮ রান করে দলকে দেন বড় রানের দিশা। সেটাকে পূর্ণতা দেন টিম ডেভিড আর তিলক ভার্মা। ডেভিড ১৪ আর তিলক অপরাজিত ৩৪ করে দলকে নিয়ে যান ১৯২ রানে।
জবাব দিতে নেমে পাঞ্জাব কিংস শুরুর ১৩ বলেই উইকেট খুইয়ে বসে ৪টি। যশপ্রীত বুমরাহ আর কাইল কোটজিয়া দুটি করে উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দেন স্বাগতিকদের টপ অর্ডার। এরপরে শশাঙ্ক সিং ইনিংসের হাল ধরেন। হরপ্রীত সিংকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান। হরপ্রীত ১৩ রান করেন এবং এরপরে জিতেশ শর্মা ৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান।
২৫ বলে ৪১ করে শশাঙ্ক যখন ফিরছেন, তখন লড়াইয়ের ব্যাটনটা যেন দিয়ে যান আশুতোষকে। যশপ্রীত বুমরাহকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করা আশুতোষ একে একে হাঁকান ৭টি ছক্কা। মাত্র ২৩ বলে করেন ফিফটি। এরপরও থামেননি। দল যে ১১১/৭ থেকে ১৬৮/৮ পর্যন্ত গেল, তা তার ২৮ বলে ৬১ রানের ইনিংসে ভর করেই। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি পাঞ্জাবকে জয় এনে দিতে পারেননি। আশুতোষকে সাজঘরে ফেরান জেরাল্ড কোটজিয়া। এরপরে হরপ্রীত ব্রারও ২০ বলে ২১ রান করে আউট হন। শেষ পর্যন্ত ৯ রানে এই ম্যাচটি জেতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। সাত ম্যাচে তৃতীয় জয় নিয়ে দলটা চলে এসেছে তালিকার ৭ম স্থানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দিনে বাংলাদেশ রীতিমতো কোণঠাসা। তবে এই দিনেও বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে এসেছেন তাইজুল ইসলাম। এরপর তিনি এলেন সংবাদ সম্মেলনে। কথা বললেন ব্যাটিং ব্যর্থতা, উইকেট, সাকিব আল হাসানের না থাকা সহ আরও অনেক বিষয়ে।
তাইজুলের সেসব কথা বার্তা২৪.কম-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো–
সাকিবের না থাকা–
সাকিব ভাই ছাড়া আমি খেলিনি তা তো না। উনি থাকাকালেও অনেক ম্যাচ সাকিব ভাই ছাড়া খেলেছি। নিউজিল্যান্ডে যখন টেস্ট জিতেছি সাকিব ভাই ছিল না। আমাদের এখানে যখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জিতেছি তখনও সাকিব ভাই ছিল না। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। আপনি তো একটা প্লেয়ারকে ৫০ বছর খেলাতে পারবেন না। একজন আসবে একজন যাবে। ১০ বছর, ১৫ বছর, বড়জোর ২০ বছর। এটা মেনে নিতেই হবে। সন্দেহ নেই, উনি অনেক ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। আমরাও দোয়া করব, আপনারাও দোয়া করবেন উনার মতো যেন আরেকজন আসে এবং এখন যারা আছে তারাও যেন ভালো পারফর্ম করে।
সাকিবের আড়ালে থাকা–
আমাদের দেশে সত্যি বলতে অনেক কিছুই মুখে মুখে। বিষয়টা হলো- অনেকেই আছে খারাপ করেও ট্রল হতে হতে স্টার হয়ে গেছে। আবার অনেকে ভালো করেও স্টার হতে পারেনি। এরকম অনেক হয়েছে। এগুলো মেনে নিয়েছি। মেনে নেওয়া ছাড়া গতি নেই।
সাকিব থাকার সময় কি বঞ্চিত ছিলেন?
বঞ্চিত বলতে… আপনার প্রশ্নটা একটু কেমন যেন হয়ে গেল। বঞ্চিতর কিছু নেই। বিশ্বে অনেকে আছে, বড় খেলোয়াড় ছিল, তারা খেলার সময় অন্যরা সুযোগ কম পেত। মুরালিধরনের সময় হেরাথ খেলতে পারেনি। হেরাথ অনেক উইকেট পেয়েছে, দীর্ঘদিন খেলেছে। আমিও ইনশাআল্লাহ… সামনে দেখি ভালো কিছু হয় নাকি।
সাকিব না থাকায় একটু স্বস্তিতে আছেন?
সাকিব ভাই থাকলেও আমি সাকিব ভাইয়ের কারণে উইকেট পাই, সাকিব ভাই না থাকলেও সাকিব ভাইয়ের কারণে উইকেট পাই। বিষয়টা এরকম আরকি। খেলি তো আমি। আমার আক্ষেপের কিছু নেই। বড় বড় খেলোয়াড়ের সাথে খেলতে পেরে আমার ভালো লেগেছে। এটাও একটা আনন্দের বিষয়… তাদের সাথে অনেক কিছু শেয়ার করা, যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তামিম ভাই সাকিব ভাই মুশফিক ভাই, রিয়াদ ভাইও ছিল। যারাই ছিল, আমাদের দেশে কতটুকু মূল্যায়ন করে জানি না। তবে ডিসকাশন করলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের কাছ থেকে অনেক কিছু নেওয়ার আছে। আমি ঐ জিনিসগুলো করার চেষ্টা করি আরকি। হয়ত আমি না নিতে পারলেও একজন জুনিয়রকে শেখাতে পারব। এজন্যও শিখে রাখাটা ভালো।
ভারত-পাকিস্তান সফরে সুযোগ পাননি। আরও বেশি সুযোগ পাওয়া দরকার ছিল?
ক্যারিয়ার যে খুব খারাপ আছে তাও বলব না। আলহামদুলিল্লাহ ক্যারিয়ার ভালো আছে। সব কন্ডিশনে সবসময় ৩ স্পিনার খেলাতে পারবেন না। অনেক জায়গায় ১ স্পিনার থাকে। এরকম হয়নি যেখানে ৩ স্পিনারের জায়গায় ১-২ জন খেলিয়েছে। কখনও দলে থাকা কখনও বাদ পড়া… আমার যতদিনের ক্যারিয়ার তাতে ম্যাচ আরও বেশি হওয়া উচিৎ ছিল। সে জায়গা থেকে হয়নি আরকি।
সাকিবের সঙ্গে আপনার তফাৎ?
এখানে অনেক ব্যাপার আছে। এটা প্লেয়িং কন্ডিশনের ব্যাপার। ২-৩ বছর বা ৪-৫ বছর পর আমি হয়ত দলকে সেভাবে সাপোর্ট নাও দিতে পারি। আমার ব্যাকআপ যে আছে, সে হয়ত বেশি রোল প্লে করবে। অনেক সময় ফ্ল্যাট উইকেট দিয়েছে, অনেক বল করা লাগবে, তখন হয়ত আমি বেশি বল করেছি সাকিব ভাই ঐ পরিমাণ এফোর্ট দিতে পারেনি। আবার দেখা গেছে কন্ডিশন আলাদা, অনেক স্পিন ধরছে, সাকিব ভাইয়ের যেহেতু অনেক ভ্যারিয়েশন ছিল সাকিব ভাই বেশি বল করেছে। এখানে রানের ব্যাপার থাকে, ডিফেন্সের ব্যাপার থাকে, কিছু ক্ষেত্রে অ্যাটাকের ব্যাপার থাকে। সব মিলে এ জিনিসগুলো ঘটে। পার্থক্য একটা জিনিস- আমি অনেক সময় ধরে বল করতে পারি। আমাকে যদি বলে টানা ১৫-২০ ওভার করতে, আমি করতে পারব। এরকম কিছু ব্যাপার থাকে।
সাকিবকে নিয়ে জুটি ছিল আপনার, রসায়ন ছিল… তার অবর্তমানে সঙ্গী কাকে চান?
সব তো আপনিই বলে দিয়েছেন, কখন কী ঘটে! একটা খেলোয়াড় সবসময় তো থাকবে না। বদলি আসবে, তার সাথেও পার্টনারশিপ হবে। ব্যাটারদের যেমন হয়, বোলারদেরও সেইম।
উইকেট প্রসঙ্গে–
যখন যেখানেই খেলতে যান, সবাই হোম এডভান্টেজ নিবে। তারপরও ভালো খেলা জরুরী। উইকেট যেমনই হোক আমরা সবসময় চাইব ভালো খেলতে। ভালো খেললে হয়ত ম্যাচটা আমাদের দিকেই থাকবে।
২০০ উইকেটের অনুভূতি–
অনুভূতি অবশ্যই ভালো লাগার বিষয়। বিশ্বে অনেক বোলারই আছে, ২০০-৩০০-৪০০ উইকেট। বাংলাদেশে আমরা এতদিন টেস্ট খেলি না। তাও যে ২-১ জন আছি তার মধ্যে আমিও একজন। গর্বের বিষয় না, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ দিয়েছে তাই হয়েছে।
বলেছিলেন ৩৫০-৪০০ উইকেট চান। ৫-৬ বছরে তা পারবেন?
আগে দেখতে হবে ৫ বছরে কয়টা টেস্ট আছে, তারপর একটা হিসাব করে উত্তর দিতে পারব। এখন উত্তর দেওয়া কঠিন। টেস্ট যদি থাকে ১০টা তাহলে তো কঠিন!
মিরপুরে ব্যাট-বলের ভারসাম্য–
একটা দল খারাপ খেললে ফেয়ার কোনোভাবেই হয় না, ভালো উইকেট দিন আর খারাপ উইকেট দিন। জিনিসটা ওরকম না। ভালো খেলা জরুরী। কন্ডিশন এদিক-ওদিক হতেই পারে। নিউজিল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলে অবশ্যই আপনাকে লো উইকেট দিবে না। একদম ফ্ল্যাট উইকেট দিবে না। মুভমেন্ট থাকবেই। আমার কাছে মনে হয়, উইকেটের দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই। খেলায় হারজিত আছে। ভালো না খারাপ খেলছি আমার কাছে এটাই মুখ্য।
টেস্টের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে?
আমাদের সময় আসলে খালি সৌন্দর্য নষ্ট হয়। অন্যান্য সব দলই তো করছে। তখন তো সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে না। এটা সবাই নিবে। আমাকেও মেনে নিতে হবে, আপনাদেরও মেনে নিতে হবে।
কত রানে অলআউট করতে চান?
আজকে যেহেতু স্পিন করেছে, সামনে তো আরও স্পিন করবেই। এটাই স্বাভাবিক। চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি ওদের আটকানো যায়। বড় পার্টনারশিপ হলে আমাদের জন্য খারাপ হবে। ইতোমধ্যে লিড পেয়েছে। যত তাড়াতাড়ি অলআউট করা যায়, তাতে ম্যাচ আমাদের হাতে থাকবে। তবে বড় পার্টনারশিপ হয়ে গেলে আমাদের জন্য কঠিন হবে।
ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে–
কমতি আছে কি না, ব্যাটারদের ঘাটতি আছে কি না এটা কোচ ভালো বলতে পারবে, বা যারা কাজ করে। এটা আমার পার্ট না। তবে রান কমই হয়েছে সত্যি বলতে। ২০০, ২২০ বা ২৫০ করলে ম্যাচ আমাদের হাতে থাকত। এখনও আছে, তবে আমাদের আরও ভালো করতে হবে। ঘাটতি বলতে, ইনশাআল্লাহ পরের ইনিংসে ব্যাটাররা ভালো করে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে। ২০০-২৫০ রান হলে খুবই ভালো অবস্থানে থাকতাম।
টেল এন্ডার ব্যাটিং প্রসঙ্গে–
এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৮, ৯, ১০, ১১ থেকে যদি ৫০-৬০ রানও আসে। আমরা চেষ্টা করছি। প্রত্যেক বোলার প্রতিদিন ব্যাটিং অনুশীলন করছে। সেই মাইন্ডসেটআপ থেকেই আমরা চেষ্টা করি যতটা সম্ভব সহায়তা করার। ঐ চেষ্টাই থাকবে এই ৪ জন যেন ৬০-৭০ যতই হোক অবদান রাখতে পারি।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা হওয়ার আড়াই মাসের মাথায় আজ সোমবার প্রথম বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) যান আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। যদিও তার পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন না বাফুফের বিদায়ী নির্বাহী কমিটির কোনো সদস্য। বাফুফের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
এরপর বাফুফের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান, তার প্রথম সফর ছিল মূলত সৌজন্যমূলক। ফেডারেশনে আসার আগেই তিনি বলে দেন আসন্ন নির্বাচনের কোনো প্রার্থী, এমনকি বিদায়ী নির্বাহী কমিটির কোনো সদস্য যেন এ সময় না থাকেন।
ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ বাফুফে ভবনে সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলাপ করে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে আসেন। এরপর তিনি বলেন,
‘বিসিবিতে গিয়েছিলাম। বাফুফে নির্বাচন চলছে। এ নিয়ে অনেক কিছুই শুনছি, অভিযোগও আছে। এজন্য আজ বাফুফেতে আসা। এ নিয়ে কথা বললাম।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাফুফে নির্বাচন। এই নির্বাচন নিয়ে গোটা ক্রীড়াঙ্গনেই তাকিয়ে। যদিও এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে সন্দিহান উপদেষ্টা আসিফ। বলেন, ‘বাফুফের নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয় এ নিয়ে আমি সন্দিহান। আগের অনেক কাউন্সিলরই এখানে রয়েছেন। যাদের অনেকে পলাতক ও আসামী এ রকমটা শুনেছি। ফিফার বাধ্যবাধকতা, বাফুফের নিয়মের দিকে সম্মান রাখতে হচ্ছে।’
আসিফ মাহমুদ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর সকল জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি ভেঙেছেন। ২০০৮ সালে বাফুফে জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে বেরিয়ে জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশন করেছে। আগামী ২৬ অক্টোবর বাফুফে নির্বাচন।
চার দিন পরেই বাফুফে নির্বাচন। নির্বাচন শেষে নতুন কমিটির সঙ্গে কিছু কাজ করতে চান ক্রীড়া উপদেষ্টা। বলেন, ‘ফিফার সঙ্গে কিছু বিষয় আলোচনা প্রয়োজন। বাফুফের মাধ্যমে আমরা সেটি করব’।
একইসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, ফুটবলের জনপ্রিয়তা ফেরানোই তার লক্ষ্য। বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে এখনো ফুটবল অত্যন্ত জনপ্রিয়। ২০১০ সালের পর থেকে জাতীয় পর্যায়ে সেই জনপ্রিয়তা নেই। এজন্য বাফুফে অনেকাংশে দায়ী যারা দায়িত্বে ছিলেন। এমনও শুনেছি, এখানে পৃষ্ঠপোষকতা আসলে ৭০ ভাগ ব্যয় হয় বাকি ৩০ শতাংশ পকেটে যেত।’
আসিফ মাহমুদ যোগ করেন, ‘বাংলাদেশের ফুটবলে যে উন্মাদনা একটা সময় ছিল, এখনো আছে। গ্রামের মাঠগুলোতে ফুটবলও হয়, ক্রিকেটও হয়, ক্রিকেট হলে ২০ জন দর্শকও থাকে না, ফুটবলে থাকে হাজার হাজার দর্শক। গাছে উঠে খেলা দেখে, এসব আমরা মূলধারায় নিয়ে আসতে পারিনি। এটার জন্য দায়ী ফেডারেশনের দায়িত্বে যারা ছিলেন, তারাই।’
আগামী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যেই ক্রীড়াঙ্গনে সংস্কারের জন্য গঠিত সার্চ কমিটি বিভিন্ন ফেডারেশনে এডহক কমিটি দিয়ে দেবে বলেও জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা।
সাকিব আল হাসান এই টেস্টে না থেকেও আছেন ভালোভাবেই। মাঠের বাইরে তো বটেই, সংবাদ সম্মেলন কক্ষ থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যকক্ষ, তার না থাকার কথা ফিরে ফিরে আসছে বারবার।
আজও এলো। তাইজুল ইসলামকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সাকিব বিষয়ে প্রশ্ন শুনতেই হলো। তবে তাইজুল জানালেন, সাকিবের শূন্যতা যেন খুব দ্রুত দলের কেউ কিংবা নতুন কেউ যেন পূরণ করতে পারেন, তার কামনা সেটাই।
তবে সাকিবকে ছাড়াও দল খেলেছে অনেক, স্মরণীয় পারফর্ম্যান্সও আছে। তা মনে করিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘সাকিব ভাই ছাড়া আমি খেলিনি তা তো না। উনি থাকাকালেও অনেক ম্যাচ সাকিব ভাই ছাড়া খেলেছি। নিউজিল্যান্ডে যখন টেস্ট জিতেছি সাকিব ভাই ছিল না। আমাদের এখানে যখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জিতেছি তখনও সাকিব ভাই ছিল না। এরকম অনেক উদাহরণ আছে।’
সাকিবের প্রস্থানকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন তাইজুল, ‘আপনি তো একটা প্লেয়ারকে ৫০ বছর খেলাতে পারবেন না। একজন আসবে একজন যাবে। ১০ বছর, ১৫ বছর, বড়জোর ২০ বছর। এটা মেনে নিতেই হবে।’
তবে তার ফেলে যাওয়া শূন্যতা বিশাল তা মানেন তিনি। দোয়া চাইলেন, শিগগিরই যেন নতুন সাকিব পেয়ে যায় বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘সন্দেহ নেই, উনি অনেক ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। আমরাও দোয়া করব, আপনারাও দোয়া করবেন উনার মতো যেন আরেকজন আসে এবং এখন যারা আছে তারাও যেন ভালো পারফর্ম করে।’
মিরপুরে সবশেষ টেস্টে প্রথম দিনে বোলারদের ঝুলিতে গিয়েছিল ১৫ উইকেট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই টেস্টে শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম ডিমেরিট পয়েন্টও পেয়েছিল। আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম দিনে উইকেট গেল ১৬টি।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে এমন উইকেটে টেস্ট কি খেলার সৌন্দর্য নষ্ট করে দিচ্ছে কি না, তার জবাবে সংবাদ সম্মেলনে আসা দুই ‘বোলার’ কাগিসো রাবাদা আর তাইজুল ইসলাম, দুজনেই কথা বললেন একই সুরে। যা বললেন তার সারমর্ম, ‘অন্যরা যে করে, তার বেলা?’
ম্যাচ শুরুর আগেই কথা হচ্ছিল এই উইকেটের স্পিনবান্ধব চরিত্র নিয়ে। তবে প্রথম দিনের শুরুর দুই ঘণ্টায় দৃশ্যটা বদলে গেল। বাংলাদেশের প্রথম ৫ উইকেট নিলেন পেসাররা। শুধু কি তাই? দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসে শুরুর আঘাত দিয়েছেন যিনি, সেই হাসান মাহমুদও তো একজন পেসারই!
দিনে গেল ১৬ উইকেট, স্পিনারদের সঙ্গে পাল্লা দিলেন পেসারও। রান উঠল ওভারপ্রতি ৩ এরও কম। এমন উইকেট টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্যহানি ঘটায় কি না, প্রশ্ন ধেয়ে গিয়েছিল রাবাদার কাছে। জবাবে তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, বোলাররা ভালো করলেই সৌন্দর্য নষ্ট নয়, ব্যাটিং পিচ বানিয়ে রাখলে… তখন?’
তবে এরপরই ‘সিরিয়াস’ মুডে ফেরত এলেন, যেমনটা মাঠে ছিলেন রাবাদা, ‘টেস্ট ক্রিকেটে ব্যালেন্স থাকা উচিত। ব্যাট আর বলের ন্যায্য একটা প্রতিযোগিতা থাকা উচিত। এ ধরনের উইকেটই আপনি চান। এক দিনে ১৬ উইকেট খুইয়ে বসলে আপনাকে বলতেই হবে এটা বোলারদের সহায়তা দিচ্ছে।’
একই প্রশ্নের মুখে তাইজুলও পড়েছিলেন। তার জবাবটা কাছাকাছি সুরের, তবে একটু ভিন্নতা থাকল। বললেন, ‘আমাদের সময় আসলেই সৌন্দর্য নষ্ট হয়। বিশ্বে আর সবাই করলে সমস্যা হয় না। সুবিধা সবাই নিতে চাইবে।’
তিনি অবশ্য ‘সিরিয়াস’ হয়ে দোষ দেখলেন ব্যাটারদের। তার ভাষ্য, ‘একটা দল খারাপ খেললে (ব্যাট-বলের) ন্যায্য প্রতিযোগিতা কোনোভাবেই হয় না। ভালো উইকেটে হয় না, খারাপ উইকেটেও না। ভালো খেলাটা জরুরি। উইকেটের দোষ দিয়ে লাভ নাই।’
তাইজুল যতই ব্যাটারদের দোষ দিন না কেন, উইকেটের চিরাচরিত অভ্যাস বলছে, রাবাদার কথাই ঠিক। টেস্টের প্রথম দিনেই ব্যাটাররা আছেন ব্যাকফুটে, পরের চার (যদি ততদিন পর্যন্ত গড়ায়) দিনে যে তাদের জন্য ফুলশয্যা অপেক্ষা করছে না, তা আর বলতে!