টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হার, ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়। এরপর টেস্ট সিরিজে এসে বাংলাদেশের প্রাপ্তির খাতাটা ‘শূন্য’। নেপথ্যে সেই ব্যাটিং ব্যর্থতা। সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ১৮৮ ও ১৮২। সেই ব্যাটিং ব্যর্থতা পৌঁছায় সাগরিকাতেও। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসেও শান্ত-লিটনদের সংগ্রহ দুইশয়ের নিচে, ১৭৮ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে এসে মুমিনুল-মিরাজের দৃঢ়তায় সিরিজে প্রথমবারের মতো তিনশ পেরোয় স্বাগতিকদের পুঁজি। তবে লক্ষ্যের পথে তা অনেকটাই দূরে। দ্বিতীয় ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রানে থামে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এতে ১৯২ রানে হেরে ২-০ ব্যবধানে সিরিজটা তুলে দেয় শ্রীলঙ্কার হাতে।
স্কোরবোর্ডে ৭ উইকেটে ২৬৮ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিনের খায় মাঠে নামে বাংলাদেশ। সেখানে মোটে আর ৫০ রান যোগ করে স্বাগতিকরা। দলীয় সর্বোচ্চ ৮১ রানে অপরাজিত ছিলেন অপরাজিত ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়া এই ইনিংসে ১৪টি চার মারেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এছাড়াও ৫০ রান করেন মুমিনুল। এদিকে দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন লাহিরু কুমারা।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৫৩ রানের বিশাল লিড নিয়ে ব্যাট করতে নামে লঙ্কানরা। সেখানে এবার ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলো না সফরকারীদের ব্যাট। তাতে অবশ্য বিন্দুমাত্র বিচলিত হতে হয়নি তাদের। কেননা, প্রথম ইনিংসে পাওয়া সেই বিশাল লিডেই যেন জয়ের ভিত গড়ে গিয়েছিল ধনঞ্জয়া ডি সিলভার দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ১৫৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় লঙ্কানর। এতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ৫১১ রানের। সেখানে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ।
সিলেটে পর চট্টগ্রামেও লঙ্কানদের জয়ের শুরু সেই টস দিয়েই। সেখানে শুরু দিনে ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি উইকেটে আগে ব্যাট করতে নেমে একে এক ছয় ব্যাটারের হাফ সেঞ্চুরিতে পাঁচশ পেরোয় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ। এর মধ্যে তিন ব্যাটার ফিরেছেন সেঞ্চুরির একদম দ্বারে এসে। সর্বোচ্চ ৯৩ রান আসে কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। এছাড়া সিরিজে দারুণ ছন্দে থাকা কামিন্দু মেন্ডিস ছিলেন ৯২ রানে অপরাজিত।
জবাবে প্রথম ইনিংসেই সেই ব্যাটিং দুর্দশা। আবার, আরও একবার! শুরুটা অবশ্য হয়েছিল আশাজাগানিয়া। ৯৬ রানেও ছিল ১ উইকেট। সেখান থেকে ১৭৮ রানে পৌঁছাতেই পুরো দল সাজঘরে। সর্বোচ্চ ৫৪ রান আসে ওপেনার জাকিরের ব্যাট থেকে।
সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসে ধনঞ্জয়ার সঙ্গে জুটি গড়ে জোড়া সেঞ্চুরি তুলেছিলেন কামিন্দু। পরে চট্টগ্রামের প্রথম ইনিংসেও ছিলেন টানা তৃতীয় সেঞ্চুরির দিকেই। তবে অপরপ্রান্তের সবাই সাজঘরে ফিরলে ৮ রানে আক্ষেপ থেকে যাই বাঁহাতি ব্যাটারের। দ্বিতীয় ইনিংসে এসে এবার ব্যাট হাতে ৯ রানে ফিরলেও বোলিংয়ে নেন ৩ উইকেট। এতে ম্যাচসেরার খেতাব যায় কামিন্দুর দখলেই। এদিকে সিরিজজুড়ে তার মোট রান ৩৬৭। জেতেন সিরিজসেরার খেতাবটাও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (চট্টগ্রাম টেস্ট)
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১ (১৫৯ ওভার) (কুশল ৯৩, কামিন্দু ৯২*, করুনারত্নে ৮৬; সাকিব ৩/১১০, হাসান ২/৯২)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৮ (৬৮.৪ ওভার (জাকির ৫৪, মুমিনুল ৩৩; আসিথা ৪/৩৪, লাহিরু ২/১৯)
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ১৫৭/৭ ডি. (৪০ ওভার) (ম্যাথিউস ৫৬, মাদুশকা ৩৪; হাসান ৪/৩৫, খালিদ ২/৩৪)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩১৮ (৮৫ ওভার) (মিরাজ ৮১*, মুমিনুল ৫০, লিটন ৩৮, সাকিব ৩৬; ;লাহিরু ৪/৫০)
ফল: শ্রীলঙ্কা ১৯২ রানে জয়ী
সিরিজ: ২-০ ব্যবধানে জয়ী শ্রীলঙ্কা
ম্যাচসেরা: কামিন্দু মেন্ডিস
সিরিজসেরা: কামিন্দু মেন্ডিস