মরক্কোকে হারিয়ে ফাইনালে ফ্রান্স

  ‘মরুর বুকে বিশ্ব কাঁপে’
  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনার সঙ্গী ফ্রান্স। ম্যাচের শুরুটা দুর্দান্ত হয় ফ্রান্সের। পাঁচ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় তারা।

এ বারের বিশ্বকাপে এই ম্যাচের আগে পর্যন্ত বিপক্ষের কোনও ফুটবলার মরক্কোর জালে বল জড়াতে পারেননি। সেই নজির ভেঙে গেল বুধবার রাতেই। ভেঙে দিলেন থিয়ো হের্নান্দেস।

বিজ্ঞাপন

পাঁচ মিনিটের মাথায় আঁতোয়া গ্রিজম্যানের উদ্দেশে দুর্দান্ত বল বাড়ান রাফায়েল ভারান। গ্রিজম্যান একটু সামনে এগিয়ে বল পাস বাড়ান সামনে থাকা কিলিয়ান এমবাপেকে। এমবাপে দু’বার গোলের উদ্দেশে শট মারলেও তা আটকে যায়। শেষ বার এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে তা চলে যায় বাঁ দিকে থাকা থিয়োর দিকে। মরক্কোর ডিফেন্ডাররা ততক্ষণে এক দিকে সরে এসেছেন। উল্টো দিকে থাকা থিয়ো কিছুটা লাফিয়ে বাঁ পায়ের সাইড ভলিতে বল জালে জড়ান। ১৯৫৮ সালের পর বিশ্বকাপের কোনও সেমিফাইনালে দ্রুততম গোল এটি।

১০ মিনিটের মাথাতেই সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল মরক্কো। বক্সের বাইরে ডান দিক থেকে শট করেছিলেন আজ এদ্দিন ওউনাহি। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাত ঠেকিয়ে কোনও মতে বল বিপন্মুক্ত করেন হুগো লরিস। ১৭ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসে গিয়েছিল ফ্রান্সের সামনে। মাঝমাঠ থেকে বল ভেসে এসেছিল অলিভিয়ের জিহুর উদ্দেশে। তিনি কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বাঁ পায়ে জোরালো শট মারেন। পোস্টে লেগে তা মাঠের বাইরে চলে যায়। তবে গোলে থাকলে ইয়াসিন বুনুর কিছু করার ছিল না।

৩৫ মিনিটের মাথায় আবার এগিয়ে যেতে পারত ফ্রান্স। মাঝমাঠ থেকে একাই বল টেনে এনে এমবাপেকে পাস দিয়েছিলেন অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি। এমবাপে বল রিসিভ করলেও শট করার আগে নিজেকে সামলাতে পারেননি। পড়ে যেতে যেতে শট নেন। এক ডিফেন্ডার এসে তা ক্লিয়ার করে দেওয়ার পর হের্নান্দেস বল পান। তিনি পাস দেন জিহুকে। চলতি বলে শট নিলেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জিহু।

৪৪ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ এসেছিল মরক্কোর কাছে। হাকিম জিয়েচের কর্নার ফ্রান্সের রক্ষণ ক্লিয়ার করে দেওয়ার পর ব্যাক ভলি মেরেছিলেন মরক্কোর জাওয়াদ এল ইয়ামিক। তা পোস্টে লেগে ফেরে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ করছিল ফ্রান্স। বাঁ দিক থেকে বল ভাসিয়েছিলেন গ্রিজম্যান। সেখান থেকে জুলস কুঁদের শট বাইরে চলে যায়। তার পরের কয়েক মিনিটে মরক্কোর আক্রমণের ঝড় দেখা যায়। অন্তত দু’বার গোলের কাছাকাছি চলে এসেছিল তারা। ফ্রান্সকে গোল খাওয়ার হাত থেকে বাঁচান ইব্রাহিমা কোনাতে এবং ভারান। এন-নেসিরির শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়ে দেন ভারান। এর পরেই বাঁ দিক থেকে উঠে এসেছিলেন বৌফাল। বক্সের মাঝে তাঁর ভাসানো বলে ওউনাহি শট মারার আগেই ক্লিয়ার করে দেন কোনাতে।

৭৫ মিনিটের মাথায় আবার সুযোগ পেয়েছিল মরক্কো। চুয়ামেনির পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন হামিদাল্লাহ। ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা তখনও কেউ নিজের পজিশনে ছিলেন না। কিন্তু শট নেওয়ার বদলে বক্সের মধ্যে একের পর এক ডিফেন্ডারকে কাটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তিনি। ফলে কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর পা থেকে বল কেড়ে নিলেন ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার মিনিট দশেক আাগে গোল করেন কোলো মুয়ানি। এ বারেও সেই এমবাপের প্রচেষ্টা থেকেই গোল এল। বক্সের মাঝখান থেকে বল পেয়েছিলেন চুয়ামেনি। তিনি পাস দেন এমবাপেকে। দু’-তিন জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে পায়ের জঙ্গলের ফাঁক দিয়ে গোল করার চেষ্টা করেছিলেন এমবাপে। বল মরক্কোর এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে সোজা চলে যায় ডান দিকে দাঁড়ানো কোলো মুয়ানির কাছে। অনায়ায়ে বল জালে জড়ান তিনি।