ব্যাটিং ঝলকে টাইগারদের সুখস্মৃতি গাথা

  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মুশফিকুর রহিম

মুশফিকুর রহিম

প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও চললো টাইগারদের ব্যাটিং ঝলক। লঙ্কান বোলারদের নাস্তানাবুদ করে নাজমুল হোসেন শান্তর পর সেঞ্চুরি হাঁকালেন ক্যাপ্টেন মুমিনুল হকও। এ দিনও লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের স্মৃতির পাতায় জায়গা করে নিল ক্রিকেট জাদু আর রেকর্ডে ভরা মোহনীয় দিন। ক্রিকেট অনুরাগীদের কাছে অবিস্মরণীয় ইতিহাস হয়েই থাকবে ক্রিকেটযজ্ঞময় দিনটি।

শান্ত-মুমিনুলের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪ উইকেটে ৪৭৪ রান। মুশফিকুর রহিম ৪৩* রান নিয়ে ক্রিজের এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন। ২৫* রান নিয়ে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন লিটন দাস। খেলা হয়েছে ১৫৫ ওভার। দিনের খেলা বাকি ছিল আরও অন্তত ২৫ ওভার। কিন্তু বাধ সাধে প্রকৃতি।

বিজ্ঞাপন

আলোর স্বল্পতার কারণে ঠিক এখানেই শেষ হয়ে যায় দ্বিতীয় দিনের খেলা। ক্যান্ডির আকাশের মেঘ মুশফিক-লিটনকে ব্যাটিং লড়াইটা চালাতে দিলো না। তা না হলে দ্বিতীয় দিন শেষে বড় ইনিংস উপহার দিতে পারবেন তারাও। আগামীকাল খেলা শুরু হবে ১৫ মিনিট আগে। খেলা হতে পারে ৯৮ ওভার পর্যন্ত। খেলা শেষ করতে আধা ঘণ্টা বেশি সময় যোগ হতে পারে ম্যাচে।

ডাবল সেঞ্চুরির আভাস দিয়েও পারেননি শান্ত। ক্যারিয়ার সেরা ১৬৩ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলে বিদায় নেন ওয়ানডাউনে নামা এ তারকা ব্যাটসম্যান। তার ৩৭৮ বলের দুর্দান্ত ইনিংসে ছিল ১৭ বাউন্ডারি আর এক ছক্কার মার।

বিজ্ঞাপন

তবে লাহিরু কুমারার বলে তারই হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরার আগে মুমিনুল হককে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে রেকর্ড ২৪২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন শান্ত। দ্বিতীয় দিনে জুটি গড়ে শান্ত-মুমিনুল দলীয় স্কোরে যোগ করেন ৯২ রান। প্রথম দিন দুজনে তোলেন ১৫০ রান।

১২৭ রানের দাপুটে এক ইনিংস খেলেন মুমিনুল হক। তার ৩০৪ বলের চমৎকার ইনিংসে ছিল ১১ বাউন্ডারি। ক্যারিয়ারে এটি তার ১১তম টেস্ট সেঞ্চুরি। দেশের হয়ে সর্বাধিক টেস্টের রেকর্ডটা আরও বাড়িয়ে নিলেন টাইগার ক্যাপ্টেন। তবে দেশের বাইরে এটাই তার প্রথম শতক। বিদেশের মাটিতে সেঞ্চুরি না পাওয়ার দুঃস্বপ্নটা ঝেড়ে ফেললেন মুমিনুল স্বপ্নিল দিনে। এতে ঘুচল তার আট বছরের আক্ষেপ।

তৃতীয় জুটিতে ২৩৬ রানের আগের রেকর্ড গড়ে ছিলেন মুমিনুল ও মুশফিকুর রহিম। ২০১৮ সালে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই চট্টগ্রামের মাটিতে গড়েছিলেন তারা এই জুটি। এবার শান্তকে সঙ্গী করে ভাঙলেন নিজের সেই রেকর্ড।

শান্ত ও মুমিনুল মিলে খেলেছেন ৫১৭ বল। আর দুই বল খেলতে পারলেই ভেঙে যেত আরও একটি রেকর্ড। মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিম ৫১৮ বলে ২৬৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ছিলেন ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে।

বাংলাদেশের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ আশরাফুল ও ইমরুল কায়েসের পর ১৫০ বা তার অধিক রানের মাইলফলকে পৌঁছালেন শান্ত। তবে টাইগারদের হয়ে তার ইনিংসটি ১৪তম ১৫০ পেরোনো ইনিংস।

২০০৯ সালের পর বিদেশের মাটিতে এই প্রথম দ্বিতীয় উইকেটে এলো শতরানের জুটি। তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত সেই পুরনো সুখস্মৃতিটা ফিরিয়ে আনলেন ১২ বছর মানে এক যুগ পর। প্রথম দিন তামিম ৯০ রানে সাজঘরে ফিরলে শান্তর সঙ্গে গড়া তার জুটি ভাঙে ১৪৪ রানে।

শতক মিস করলেও টেস্টে সর্বাধিক রান সংগ্রহে তামিম পিছনে ফেলেছেন মুশফিকুর রহিমকে। দেশসেরা এ ওপেনারের সংগ্রহ এখন ৪ হাজার ৫৯৮ রান। ৬১ রানে পিছিয়ে থেকে মুশফিক ব্যাটিং করে যাচ্ছেন তামিমকে ছোঁয়ার জন্য।

দুই উইকেটে ৩০২ রান দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শান্ত ব্যাটিংয়ে ছিলেন ১২৬* রানে। দ্বিতীয় দিনে আরও যোগ ৩৭ রান। আর মুমিনুল প্রথম দিন শেষে অপরাজিত থেকে যান ৬৪* রানে। পরে যোগ করেন আরও ৬৩।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৭৪/৪, ১১৫ ওভার (শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, তামিম ৯০; বিশ্ব ফার্নান্ডো ২/৭৫, কুমারা ১/৮৮ ও ধনাঞ্জয়া ১/১১২)।

#দ্বিতীয় দিন শেষে