হিথ স্ট্রিকই সাকিবের ফোন নম্বর দেন আগারওয়ালকে!
সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার দুঃসহ স্মৃতিটা হয়তো আর ভুলেও মনে করতে চাইবেন না বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীরা। তবে তার ভক্তরা মনে মনে সব সময়ই চাইতেন- সাকিবকে যে ফাঁসিয়েছেন তিনি যেন অন্তত শাস্তিটা পান।
তাদের সেই চাওয়াটা পূরণ হয়েছে। ক্রিকেট দুর্নীতিতে জড়িয়ে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন হিথ স্ট্রিক। ভাবছেন স্ট্রিকের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের নিষেধাজ্ঞার যোগসূত্র কোথায়?
সাকিবের বিরুদ্ধে তদন্তের সময় আইসিসি জানিয়েছিল কাছের কেউ সাকিবের নম্বরটি দীপক আগারওয়ালকে দিয়েছিলেন। কিন্তু স্পষ্ট করে তখন কিছু জানায়নি ক্রিকেট দুনিয়ার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এ নিয়ে প্রশ্নই থেকে যায়। কে সেই লোক যে সাকিবের ফোন নম্বরটা জুয়াড়িকে দিয়েছিলেন। এ নিয়ে নানা গুঞ্জনও রটেছে সেসময়। স্ট্রিকের বিরুদ্ধে তদন্তে সেই সত্যটাই বেরিয়ে এলো এবার।
আসলে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন জিম্বাবুয়ের সাবেক এ লিজেন্ড ক্রিকেটারই। আইসিসি'র তদন্তে সেই সত্যটাই বেরিয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে বিপিএল খেলার সময়ে সাকিব আল হাসানসহ ক্যাপ্টেন, ক্রিকেটার এমনকি ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের ফোন নম্বরও বিতর্কিত জুয়াড়ি দীপক আগারওয়াল চেয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক পেস বোলিং কোচ স্ট্রিকের কাছে। অনুরোধ রেখে ওই জুয়াড়িকে তিন ক্রিকেটারের ফোন নম্বর দেন স্ট্রিক। তার মাঝে ছিল সাকিবের নম্বরও।
হিথ স্ট্রিকের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সম্পর্কটা অনেক পুরনো। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিনি বাংলাদেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন অনেকবার। আবাহনীর জার্সি গায়ে ঢাকা লিগে খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। পরে তো যোগ দেন টাইগারদের পেস বোলিং কোচ হিসেবে। তার সময়ই ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৬ সালের মে পর্যন্ত সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দুর্দান্ত দাপট দেখায় বাংলাদেশ। দারুণ এ পারফরম্যান্সে অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে স্ট্রিকের। সুবাদে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। দুর্নীতিতে নাম লিখাতে এই সুযোগটাই কাজে লাগান তিনি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছে স্ট্রিক ছিলেন বেশ সুপরিচিত। সবার আস্থাও অর্জন করে ফেলে ছিলেন। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ক্রিকেটারদের কাছে আগারওয়ালের ব্যাপারে সুপারিশ করেছিলেন তিনি। ক্রিকইনফো বলছে, তার সেই তালিকায় ছিলেন সাকিবও।
সেসময় বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি ঢাকা ডায়নামাইটস ও তৎকালীন বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলের তথ্য চেয়েছিলেন আগারওয়াল।
এরপরেই বাংলাদেশের মাটিতে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের সময় আগারওয়াল ফের যোগাযোগ করে সাকিবের সঙ্গে। পরে আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলার সময় ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগারওয়াল।
দীপক আগারওয়ালের যোগাযোগের ব্যাপারটি হালকাভাবে নিয়েছিলেন ক্রিকেট মহাতারকা সাকিব-আল-হাসান। অন্য ক্রিকেটাররা বিষয়টি জানালেও বিসিবি বা আইসিসি'র কাউকেই জানাননি সাকিব। বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই পরে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন দেশ সেরা এ ক্রিকেটার।