সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্য 'বি’ পজেটিভ রক্ত প্রয়োজন।
রক্ত দিতে আগ্রহীদের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এম রাজ্জাক খান।
শুক্রবার (০৫ জুলাই) এরশাদের রক্তশূন্যতা বেড়ে গেছে। এ কারণে অনেক রক্তের প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে এরশাদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানান, ‘এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। কিডনি কাজ করছে না। ফুসফুসের সংক্রমণও কমছে না।’
গত ২২ জুন থেকে ৯০ বছর বয়সী এরশাদ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদ হিমোগ্লোবিন-স্বল্পতা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও কিডনির জটিলতায় ভুগছেন।
রাজনীতিতে বন্ধুর সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা বন্ধুকে শত্রু বানানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, এভাবে বন্ধুকে শত্রু বানানো ভালো ফল আশা করা কঠিন। কোন জটিল পরিস্থিতি হলে তখন তারা বন্ধুহীন হয়ে পড়তে পারে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) পার্টির বনানী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ে তার দেওয়া বিভিন্ন বক্তৃতা বিবৃতি যেগুলো বিভিন্ন মিডিয়ার এসেছিল সেগুলো তুলে ধরে বলেন, জাতীয় পার্টিকে এখন ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে প্রমাণ করার অপচেষ্টা চলছে। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র আন্দোলনে পার্টির নেতাকর্মীদের ভুমিকা ও দুইজন কর্মী নিহত হওয়াসহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এরপরও যদি গণহত্যার দায় জাপার উপর দেওয়া হয় খুবই দুঃখজনক। আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি বলে দোসর বলা হয়, কোন প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে অংশ নিতে হয়েছিল তারও বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, মিডিয়ায় ঘোষণা দিয়ে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। তারপরও বাধ্য করা হয় নির্বাচনে যেতে। ২০১৮ সালে সকলেই অংশ নেন। বৈধতার প্রশ্ন উঠলে বিএনপিও দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলন সফল করতে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীর রক্ত দিয়েছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারনে অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, মামলা দেওয়া হয়েছে। অথচ একটি চক্র এখন জাতীয় পার্টিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে অবিচার হচ্ছে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এর প্রতিবাদ করা হবে। আমরা রাজপথে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করবো।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সামান্য সমালোচনা সহ্য করা হতো না, লিফটের মধ্যে কথা বলতে ফিসফিস করতে দেখেছি লোকজনকে। আওয়ামী লীগের দুটি সফলতা ছিল এগুলো হচ্ছে ভীতি এবং হতাশার সৃষ্টি করা। কি অবস্থার মধ্যে রাজনীতি করতে হয়েছে দেশবাসী অবগত।
জিএম কাদের বলেন, টিক মার্কের নির্বাচন আমরা চাইনি, ২০২৪ সালের জোর করে নির্বাচনে আনা হয়। আমরা নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচন করতো শেখ হাসিনা। তারা এ টিম-বি টিম বানিয়েছিল। ২০১৪ সাল থেকে রওশন এরশাদকে দিয়ে দলকে বিভক্ত করে রেখেছে।
দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এখনই তারা ব্যর্থ কিংবা অসফল বলতে চাচ্ছি না। আমরা তাদের সময় দিতে চাই, আমরা আশাকরি সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কোন দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমি না। জামাত নিষিদ্ধের সময় আমি এর বিপক্ষে মত দিয়েছিলাম। আমি মনে করি যাদের ফলোয়ার রয়েছে, তাদের যদি নিষিদ্ধ করেন তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে যাবে। এটা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনে না।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আলমগীর শিকদার লোটন, মনিরুল ইসলাম মিলন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা ষড়যন্ত্রের নতুন মাত্রার আভাস দিচ্ছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অব হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেছেন, জনগণের ক্ষোভের মুখে তার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের সুস্পষ্ট প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, দিনের পর দিন অসংখ্য মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছে, এখন আবার শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি বলে বিরক্তিকর ও উদ্বেগজনক সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন যে তিনি শেখ হাসিনার কাছ থেকে কোনো পদত্যাগপত্র পাননি এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবও বলেছেন যে তার কাছে পদত্যাগপত্র নেই।
- পদত্যাগ নিয়ে স্ববিরোধী বক্তব্য, রাষ্ট্রপতির শপথ ভঙ্গ: আইন উপদেষ্টা
- বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে রাষ্ট্রপতি অসত্য বলেছেন: জয়নুল আবেদীন
- রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ছাত্রসমাজই নেবে: সারজিস
হাফিজ উদ্দিন বলেন, এটা তাদের ষড়যন্ত্রের নতুন মাত্রা। তিনি (শেখ হাসিনা) অবশ্যই পদত্যাগ করেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা ইউটিউবে শেখ হাসিনার সই করা পদত্যাগপত্র দেখেছি। তাছাড়া মাত্র ৪৫ মিনিটের নোটিশে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, তাই আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের প্রয়োজন নেই। এটাই তার পদত্যাগের শামিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শেখ হাসিনার এখন কোনো পাসপোর্ট নেই। বাংলাদেশ সরকার তার পাসপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। তিনি একটি প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন যারা তাকে অন্য দেশে পাঠিয়ে দিতে চায়। তারপরও তার পদত্যাগপত্রের প্রয়োজনীয়তা কী?
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা এখনও বৈধ প্রধানমন্ত্রী এটা বিশ্বাস করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এ ধরনের সংবাদ প্রচার করছে। এর চেয়ে বড় মিথ্যা আর কী হতে পারে?
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। তারা খুনি শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা এবং আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করারও আহ্বান জানান।
পাবনার সুজানগর উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে প্রায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এর জেরে ইতোমধ্যে গোলাগুলিও হয়েছে। এবার আরেক সহিংসতার আশঙ্কায় সাগরকান্দি ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
একই স্থানে একই সময়ে বিএনপির দু’পক্ষ সমাবেশের ডাক দেওয়ায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সাগিরকান্দি বাজার, খলিলপুর, শ্যামগঞ্জ এবং তালিমনগরে ১৪৪ ধরা জারি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ।
জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম মোল্লা এবং স্থানীয় যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন দু’টি পক্ষ সাগিরকান্দি বাজারে পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ডাক দেয়। এই নিয়ে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেখানে এই দুই পক্ষের একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আব্দুস সালাম মোল্লা কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের এবং তরিকুল ইসলাম পাবনা-২ আসনের সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিবের সঙ্গে রাজনীতি করেন।
ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, আমরা জানতে পেরেছি দু’টি পক্ষ সেখানে সমাবেশ ডেকেছে। দুই দিন আগেও সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সমাবেশটি কে বা কারা ডেকেছে স্বীকার করছে না, তারা থানায় বিধি মোতাবেক অবহিত করেনি। তাই স্থানীয়ভাবে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সেখানে জননিরাপত্তার হুমকি আছে বিধায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় যুবদল নেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং এলাকায় চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে আমরা কয়েক দিন আগে প্রশাসনকে অবহিত করেই সমাবেশ ডেকেছি। কিন্তু আজ প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম মোল্লা দাবি করে বলেন, আমরাই আগে থানা পুলিশকে অবহিত করছিলাম সেখানে সমাবেশ করব। এরপর তারা (বিএনপির আরেক পক্ষ) সমাবেশ ডেকেছে। এখন প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীকে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ ডিএনএ নমুনা দেওয়া শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ আমার রক্তের নমুনা নিয়েছে আজকে। আমার বাবা মরহুম আব্দুল হারিছ চৌধুরীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর আমার বাবা মরদেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর সিআইডি আজকে আমাকে ডেকেছে, আমার নমুনা সংগ্রহ করার জন্য। এখন আব্বুর ডিএনএ'র ম্যাপিং চলছে। আমার ডিএনএ'র নমুনার সঙ্গে আব্বুর ডিএনএ'র নমুনা মেলাবে। এরপর সিআইডি এই নমুনা মেলানোর ফলাফল দিবে। সিআইডি আমাকে বলেছে- এই প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগবে। তবে প্রক্রিয়াটা জটিল, তারা আমাকে বলেছে- যত দ্রুত সম্ভব তারা এটা সম্পন্ন করবে।
এই মুহূর্তে ডিএনএ নমুনা দেওয়ার কী প্রয়োজন রয়েছে- প্রশ্ন করা হলে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে বলেন, আমি বলেছি আমার বাবা মারা গেছে, কিন্তু গত সরকার এটা মেনে নেয়নি। তাহলে কি আমার বাবাকে আমি জীবিত রেখে দিব, তা না হলে কাউকে আমার বাবাকে খুঁজে দিতে হবে। আমার বাবা তো নিরুদ্দেশ থাকতে পারেন না। কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলে এটার একটি সার্টিফিকেট লাগবে। সে তো যেমন তেমন মানুষ ছিল না, তার মৃত্যুর বিষয়টা তো প্রমাণিত হতে হবে। যেকোনো মানুষেরও মানবিক অধিকার থাকে। আমার আব্বুর মানবিক অধিকার রক্ষা হয়নি।
ওই সময় হারিছ চৌধুরীর মরদেহকে এইভাবে কেন মাটি দেওয়া হয়েছিল প্রশ্ন করা হলে বিএনপির এই নেতার মেয়ে বলেন, আমার আব্বুর মরদেহ আমি আমার দাদুর বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমি দেখলাম গণমাধ্যম অহরহ রিপোর্ট করছে- মাহমুদুর রহমান নামে হারিছ চৌধুরীর দাফন। এটা আসলে সঠিক নয়। আমার প্রশ্ন, কে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করেছে। আমি তো শুধু জানি আমি আমার বাবার মরদেহ নিয়ে গিয়েছি সেখানে দাফন হয়েছে। ওখানে যারা দাফন করেছেন তাদের সঙ্গে আমার কখনো কথা হয়নি। ওইখানের হুজুর মহিলা মানুষের সঙ্গে কথা বলেন না, সেটা আমাকে বলা হয়েছিল। আমি তখন সদ্য মৃত বাবার মরদেহ বুকে করে নিয়ে যাওয়া মেয়ে। সে সময় আমি তো কাউকে কিছু বলিনি।
তিনি বলেন, যখন বিষয়টি সবার সামনে আসে, তখন দুইজন সাংবাদিক আমার কাছে বিষয়টি জানতে চান। তখন আমি এ বিষয়ে কথা বলি। আমি তো ওইভাবে কাউকে চিনি না। আমি যখন তাদের সঙ্গে কথা বলি, তখন আমি তাদেরকে বলেছি- হ্যাঁ আব্বু মারা গিয়েছেন। আব্বুর দাফন হয়েছে, আপনারা যা শুনছেন তা সত্যি। আগের সরকারের প্রতিহিংসার পাত্র ছিল আমার আব্বু। তখনকার সময়ে বিরোধীদলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক মামলা হয়েছে। আমার আব্বু গত সরকারের আমলে নির্যাতিত হওয়ার মধ্যে অন্যতম একজন। এ কারণে সে আত্মগোপনে ছিল, কিন্তু সে দেশ ছেড়ে চলে যায়নি। তখন ওই সরকারের পক্ষ থেকে অপপ্রচার চালানো হয় যে, হারিছ চৌধুরী লন্ডনে মারা গেছে, আবার কেউ কেউ বলে যে সে মারা যায়নি। তারার মিথ্যা কথা বলছে, যাতে করে ইন্টারপোল থেকে নাম সরানো যায়। যা ইচ্ছা তাই খবর ছড়ানো হল আব্বুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।
আপনি আপনার বাবাকে দাফন করেছেন, তারপরও এখন ডিএনএ নমুনা দিতে হচ্ছে। এই বিড়ম্বনার পিছনে কারা দায়ী- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এই বিড়ম্বনার জন্য গত সরকার দায়ী। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত প্রশাসন এর জন্য দায়ী। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি এবং স্বৈরাচারমূলক আচরণের কারণে আমাকে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী সিআইডিতে আসেন। তার বাবা হারিছ চৌধুরীর মরদেহ শনাক্তের জন্য আদালতের নির্দেশে তিনি সিআইডিতে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দিতে আসেন।
এর আগে ঢাকা জেলার আদালতের নির্দেশে গত ১৬ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর লাশ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে গেছে, ২০২১ সালে ঢাকার সাভারে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা লাশটি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর কি না, তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। হারিছ চৌধুরীর মেয়ের এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে লাশটি উত্তোলন করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা।
ডিএনএ পরীক্ষার পর মরদেহটি হারিছ চৌধুরীর কি না, সেটি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি যেহেতু বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তাই তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার প্রদান করাসহ তাকে দাফনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণ করা হয়েছে।