ক্যামেরার চোখে সচেতনতার কিছু চিত্র প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কের কারণে রাজধানীর রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা।
ক্যামেরার চোখে সচেতনতার কিছু চিত্র প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কের কারণে রাজধানীর রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ছেলের ছুরিকাঘাতে বাবা আবদুস সোবহান প্রধান (৫০) নিহত হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে মতলব উত্তর উপজেলার লুধুয়া আমতলা গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ীতে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত আব্দুস সোবহান প্রধান (৫০) মৃত আমির বক্স প্রধানের ছেলে। ঘাতক ছেলে নোমান হোসেন প্রধান (২৮) সম্প্রতি সৌদি থেকে দেশে ফিরেন। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
হাসপাতাল ও এলাকাবাসী জানায়, তাদের বাড়ীর জায়গা-সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছে। তার ৩ ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় ছেলে সৌদী প্রবাসী নোমান হোসেন প্রধান। তার নামে সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য তার বাবাকে চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে বাপ-ছেলের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে নোমান হোসেন প্রধান তার বাবার বুকে আঘাত করে। ভাতীজাসহ বাড়ীর লোকজন তাকে দ্রুত উদ্ধার করে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল হক বলেন, ছেলের ছুরিকাঘাতে বাবা খুনের বিষয়টি জেনেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। তবে অভিযুক্তকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চিত্র ও শিক্ষার্থীদের ত্যাগ স্মরণ করতে সারা দেশের দেয়ালে দেয়ালে নানা রঙে আঁকা হয়েছে গ্রাফিতি। এবার সেই গ্রাফিতি দেখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকা পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রাফিতির বেশ কিছু ছবি প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে আপ করা হয়েছে। যার ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, জুলাই ও আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের সময় তরুণ বিপ্লবীদের আঁকা গ্রাফিতি দেখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আব্দুল্লাহসহ প্রমুখ। ছবিতে দেখা যায়, তিনি গ্রাফিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
ছবিগুলোতে প্রচুর প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশই হাসির প্রতিক্রিয়া। অনেকেই নানারকম মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, হাসি চেপে রাখা অসমম্ভব।
অগ্নিকন্যা খ্যাত বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর জানাজা বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্বামী প্রয়াত সাংবাদিক বজলুর রহমানের কবরের পাশে শায়িত করা হবে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রয়াত মতিয়া চৌধুরীর ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী।
মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কবরস্থান কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। জায়গা পেলে সেখানে দাফন করা হবে।এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মতিয়া চৌধুরীকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বুধবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুর জেলায় মতিয়া চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী।
ইডেন কলেজের ছাত্রী থাকাকালীন তিনি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৬২ সালে হামদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে যে প্রবল ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে, তারও সম্মুখসারির সংগঠক ছিলেন মতিয়া চৌধুরী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ১৯৬৩ সালে তিনি রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর পরের বছরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়ন মতাদর্শিক কারণে বিভক্ত হলে মতিয়া চৌধুরী এক অংশের সভাপতি নির্বাচিত হন। অন্য অংশের সভাপতি হয়েছিলেন রাশেদ খান মেনন। সেই হিসাবে ছাত্র ইউনিয়ন মতিয়া গ্রুপ ও ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপ নামে পরিচিতি পেয়েছিল।
মতিয়া চৌধুরী তার জ্বালাময়ী বক্তৃতার কারণে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসাবে ছাত্র-জনতার কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ছাত্রজীবন শেষ হওয়ার পর ১৯৬৭ সালেই মতিয়া চৌধুরী যোগ দিয়েছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে। দ্রুতই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপকভাবে খ্যাতি অর্জন করেন তার বক্তৃতার কারণে।
১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের পতন হলে শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেক রাজনৈতিক বন্দি কারাগার থেকে মুক্তি পান। মতিয়া চৌধুরীও তখন জেল থেকে বেরিয়ে এসে মাঠের রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। মতিয়া চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি ন্যাপের মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের রাজনীতি করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি-গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ-এই ধারার রাজনীতি থেকে মতিয়া চৌধুরী কখনো বিচ্যুত হননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বামপন্থি রাজনীতিবিদদের ভালো সম্পর্ক ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় মতিয়া চৌধুরীও ছিলেন তার পছন্দের তালিকায়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল গঠন করলে এর ১১৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মতিয়া চৌধুরীকেও রাখা হয়।
১৯৭৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগের যোগ দেন। তিনি দলটির কৃষি সম্পাদক হয়েছিলেন। ১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। বর্তমান তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মারা গেলে জাতীয় সংসদের উপনেতা নির্বাচিত হন মতিয়া চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদেও একই দায়িত্ব পালন করেন।
কক্সবাজারের টেকনাফে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে দালালসহ ২৩ জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সোয়া ১২টায় টেকনাফ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের অধিকাংশই পুরুষ বাংলাদেশী। রোহিঙ্গারা উখিয়া কতু পালং ক্যাম্পের বাসিন্দা। উদ্ধার হওয়া মালয়েশিয়াগামীর মধ্যে ৮জন বাংলাদেশি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তিনি জানান, বুধবার দিবাগত রাতে মানবপাচারকারী একটি চক্র টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে জমায়েত করে। এ খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় একটি বাড়ি থেকে তিন দালালসহ ২৩ মালয়েশিয়াগী যাত্রীকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ৫ জন নারী ও ১ শিশু রয়েছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশনা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধৃত তিন দালাল হলেন, লোনা বেগম (৩৫) টেকনাফের সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরীর বাসিন্দা। বাকি দুজন , সাবরাং নয়া পাড়ার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল্লাহ (৩০), আরেকজন শাহপরীরদ্বীপ মগ পুরার বাসিন্দা রিদুয়ান( ২৮)।
উদ্ধার হওয়া মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গা নারী উম্মে হাবিবা বলেন, ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা কন্ট্রাক্টে আমার ছোট বোনকে নিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করি। এজন্য দালালকে ১লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি ৩ লাখ টাকা মালেয়শিয়া পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দালালরা টেকনাফের একটি বাড়িতে ২দিন আটকে রাখে। অবশেষে যাত্রার প্রস্তুতিকালে পুলিশের কাছে ধরা পড়েছি। তিনি আরও বলেন, অনেক বাড়িতে এবং পাহাড়ে আরও রোহিঙ্গা আটক রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের এক দালালের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশের জালে আটক হওয়ার পর আর যাওয়া হয়নি।
নুর কায়াস নামের এক রোহিঙ্গা তরুণী বলেন, আমার বোন মালয়েশিয়া থাকে। মালয়েশিয়ায় আমার বিয়ে ঠিকঠাক হয়েছে। তাই বিয়ে করতেই তিনি মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন। দালালকে কেউ চিনে না তারা। অনেকেই মালয়েশিয়া থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ক্লিয়ার করেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ধৃত দালালের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে নতুন করে মামলা দায়ের করে হবে। তার আগে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রোহিঙ্গাদের তাদের ক্যাম্পে পাঠানো হবে।