করোনায় উচ্চ ঝুঁকিতে পরিবহন শ্রমিকরা
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসকরোনার সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি, মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত প্রয়োজনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অবিরাম ছুটতে হয়। মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার উপায় নেই তাদের। দিনের বেশিরভাগ সময় তাদের থাকতে হয় ঘরের বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের পরিবহন শ্রমিকরা।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে এই ভাইরাসে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে । যার ফলে রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ জেলায় বাস যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটি জেলাকে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য।
এমন অবস্থায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণপরিবহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীতে কিছু পরিবহনে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হলেও সেটি পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিবহন শ্রমিকরা পরেন না মাস্ক, ব্যবহার করেন না হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এমন অবস্থায় করোনাভাইরাসের ঝুঁকি তাদের মধ্যে আরও বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
রাজধানীর স্বাধীন পরিবহনের গাড়ি চালক মোহাম্মদ সাইফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সবাই চাইলেই ঘরে বা সীমিত পরিসরে চলাফেরা করতে পারেন। এ সুযোগটা কিন্তু পরিবহন শ্রমিকরা চাইলেই পারেন না। জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনই গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়। ফলে করোনার ঝুঁকি থাকলেও কিছুই করার নেই বলে জানান তিনি।
করোনাভাইরাসের কারণে পরিবহন বন্ধ করা যেতে পারে কিনা জানতে চাইলে স্বজন পরিবহনের বাস চালক রাসেল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গণপরিবহন বন্ধ করলে আমরা পরিবহন শ্রমিকরা না খেয়ে থাকতে হবে। করোনার কারণে এখন গাড়ি চালানো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা করে পরিবহন বন্ধ করুক। এমনিতেই এখন যাত্রী কমে গেছে ।
এদিকে, করোনায় পরিবহন শ্রমিকদের ঝুঁকি থাকার পাশাপাশি এদের মাধ্যমে যাত্রীদেরও ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একই সাথে পরিবহন শ্রমিকদের এবং তাদের মাধ্যমে অন্যের মধ্যে করোনার সংক্রমণ রোধে গণপরিবহন বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকেই।
তাছাড়া, শ্রমিক ফেডারেশনের হিসেবে দেশে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ পরিবহন শ্রমিক রয়েছেন বলে জানা যায়।
পরিবহন শ্রমিকদের করোনা ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের করোনার ঝুঁকি এড়ানোর জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছি। কাউন্টারগুলোতে এবং গাড়িতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক দেওয়া হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকরা এসব ব্যবহার করছেন।
পরিবহন বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বর্তমানে গাড়ি কম চলাচল করছে। যেসব রুটে যাত্রী নেই সে সব রুটে আমরা এমনিতেই গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছি। পরিবহন বন্ধের বিষয়ে আমরা প্রস্তুত আছি। যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দেশনা এলেই আমরা পরিবহন বন্ধ করে দিব।