ভোলায় জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টা পর বাস মালিক শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় বাস মালিক পক্ষ ও সিএনজি চালকদের মধ্যে ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা।
এর আগে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুটি বাস ও ৮টি সিএনজিতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক এবং সিএনজি চালকরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন।
এ বিষয়ে ভোলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই অভিযোগ দেয়নি। তাই পুলিশ কোনো আইনি ব্যবস্থা নেবে না।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান, ভোলা জেলা বাস মালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও সিএনজি মালিক সমিতির সদস্য প্রমুখ।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ১৪টি কাছিমের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বোরি’র গবেষক দল। এ নিয়ে গত ২৭ দিনে ৯৮ টি কাছিমের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৪ দিনে পাওয়া গিয়েছিল ৮৪ টি কাছিমের মরদেহ।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সকাল সোয়া ৭টা থেকে বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতের মাঙ্গালা পাড়া থেকে নাজিরারটেক পয়েন্ট এলাকা থেকে ১৪টি কাছিমগুলোর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান, বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বোরি) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিমুল ভূঁইয়া। উদ্ধার করা মৃত কাছিমগুলো জলপাই রঙের অলিভ রিডলে প্রজাতির।
শিমুল ভূঁইয়া বলেন, সম্প্রতি স্থানীয়রা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকায় কিছু কাছিমের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর দেন তাদের (বোরি)। এর প্রেক্ষিতে বোরি’র ৫ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি গবেষক দল গঠন করেন কাছিমের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে।
বোরি’র এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, বুধবার সকালে সমুদ্র সৈকতের রামু উপজেলার মাঙ্গালা পাড়া থেকে বোরি’র বৈজ্ঞানিক দল চতুর্থ দফার জরিপ কাজ শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক পয়েন্ট পর্যন্ত জরিপ কাজ চালিয়ে ১৪টি কাছিমের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এগুলোর মধ্যে মাঙ্গালা পাড়া সৈকত থেকে ১টি, পেঁচারদ্বীপে ২টি, সালসা বিচে ৩টি, হিমছড়িতে ৪টি এবং দরিয়ানগর থেকে ৪টি মৃত কাছিম উদ্ধার হয়েছে।
শিমুল বলেন, ‘নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কাছিমের প্রজনন মৌসুম। এসময় মা কাছিম ডিম পাড়তে গভীর সাগর থেকে উপকূলে আসে। তখন অনেক কাছিম জেলেদের জালে আটকে এবং সমুদ্রে চলাচলকারি বড় নৌযানের ধাক্কায় মারা যায়। তদন্তের পর কচ্ছপগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে।’
এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘কাছিমগুলো গেলো এক-দেড় মাসের মধ্যে মারা গেছে। এক-দুই দিনে মারা গেছে এমনটি নয়। আমরা অনেকগুলো মৃত কাছিমের খোলস পেয়েছি।’
বোরি’র দেওয়া তথ্য মতে, গত ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের সোনাদিয়া, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী ও টেকনাফের বিভিন্ন সৈকত এলাকায় ২৯ টি মৃত কাছিম উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে ৩ টি মৃত ডলফিন ও ১ টি মৃত পরপইসও উপকূলে ভেসে এসেছিল।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। ফজর নামাজের পর আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম আয়োজন। এতে অংশগ্রহণ নেবেন শুরায়ী নেজামের অর্থাৎ মাওলানা জোবায়েরপন্থি তাবলীগের সাথীরা।
প্রথম পর্বের ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন খিত্তা ও পয়েন্টের জিম্মাদার মুসল্লিরা এরই মধ্যে ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। যারা ইজতেমা ময়দানে এসেছেন তারা তাদের নিজ নিজ খিত্তায় অবস্থান করছেন।
এবারের ইজতেমা ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শুরায়ী নেজামের অধীনে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে।
প্রথম পর্বে অংশগ্রহণ করবে গাজীপুর, টঙ্গী, ধামরাই, গাইবান্ধা, মিরপুর, কাকরাইল, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, কাকরাইল, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী জেলা। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১টি জেলা অংশগ্রহণ করছে।
দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। প্রথম পর্বে অংশগ্রহণ করছে ঢাকার একাংশসহ ৪১টি জেলার তাবলীগের সাথীরা।
এদিকে, তৃতীয় পর্ব শুরু হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এতে অংশ নেবেন মাওলানা সাদ অনুসারীরা। শেষ ধাপ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলা মামলার আসামি হিসেবে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এসময় তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শারমিন নাহার এ আদেশ দেন।
মেহেরপুর জেলা কারাগার থেকে আজ সকালে আসামি হিসেবে ফরহাদ হোসেন ও তার ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুলকে আদালতে নেওয়া হয়। মামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আবু সালেহ মোহাম্মদ নাছিম আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তবে আদালতে তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে মেহেরপুর জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেন দেন।
এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে প্রিজনভ্যানে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে আনা হয়। ফরহাদ হোসেন দোদুলকে মেহেরপুরে আনার খবরে এলাকার অনেক উৎসুক মানুষ সড়কে বেরিয়ে আসে। জেলা কারাগারের সামনেও কিছু মানুষ ভিড় করেন। এর আগে থেকেই গোটা শহর এবং কারাগার এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন ছিল।
৫ আগস্ট মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলার ঘটনায় সদর উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের রাশেদুল ইসলাম সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলার প্রধান আসামি হিসেবে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে গতকাল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মেহেরপুরে নিয়ে আসে জেলা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর আত্মগোপন করেন ফরহাদ হোসেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে হত্যা মামলায় তাকে আটক করেছিল র্যাব। তার নামে রাজধানী ঢাকাতে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়াও মেহেরপুরে রয়েছে আরও কয়েকটি মামলা।