গত ১৪ দিনের মধ্যে যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের ঘরেই থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ পরামর্শ দেন।
এ সময় তিনি বলেন, আপনারা যদি গত ১৪ দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে দেশে এসে থাকেন, তাহলে বাড়ির একটি নির্দিষ্ট ঘরে থাকুন। কোনো আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব বা প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেখা করবেন না। নিজেদের ঘরে কোয়ারেন্টাইনে থাকাই সবচেয়ে ভালো। মানে সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনই বেস্ট।
বিদেশ ফেরত কারো মধ্যে যদি করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে আইইডিসিআর’র হটলাইনে ফোন দেবেন। আমাদেম ১২টি হটলাইন চালু করেছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বাতায়নের হটলাইন নম্বর ১৬২৬৩
আমাদের সঙ্গে যুক্ত করেছি। আপনারা ফোন দিলে আমরাই নমুনা সংগ্রহ করব। প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে আসব। আপনারা কোথাও বের হবেন না, যোগ করেন তিনি।
ফ্লোরা আরো বলেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা ছাড়া প্রতিরোধের তেমন কিছু নেই। কারণ এখনো কোনো প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। কাশি শিষ্টাচার মেনে চলবেন এবং বার বার সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোবেন। এছাড়া আক্রান্তদের এড়িয়ে চলুন। যারা বিদেশ থেকে এসেছেন, অসুস্থ বোধ করলে আমাদের ফোন করুন। আর জরুরি না হলে কেউ ভ্রমণ করবেন না।
উল্লেখ্য, এর আগে রোববার (৮ মার্চ) মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন একই পরিবারের সদস্য। আক্রান্তদের দু’জন ইতালি ফেরত এবং অপরজন ইতালি ফেরত স্বজনের থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দু’জন পুরুষ, একজন নারী। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে ৮০ হাজার ৭৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর তিন হাজার ১৩৬ জন মারা গেছেন। এরপর বিশ্বের অন্তত ১১৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এতে এ পর্যন্ত বিশ্বের এক লাখ ১৪ হাজার ৪২২ জন সংক্রমিত হয়েছে। আর মারা গেছেন চার হাজার ২৭ জন।
এর মধ্যে ইরানে করোনাভাইরাসে সাত হাজার ১৬১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে মারা গেছেন ২৩৭ জন।
ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার ১৭২ জন। এখানে মারা গেছেন ৪৬৩ জন। ইতালির ১৬ মিলিয়ন মানুষকে করোনা সন্দেহে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার ৫১৩ এবং মৃতের সংখ্যা ৫৪।
যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন ২৭ জন। এখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০৬ জন।