আইসিজের রায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করবে: আইনমন্ত্রী

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বক্তব্য দিচ্ছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক/ছবি: বার্তা২৪.কম

বক্তব্য দিচ্ছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক/ছবি: বার্তা২৪.কম

বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে মানবাধিকারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। আমি আশা করি আইসিজের ইতিবাচক রায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করবে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের তৃতীয় ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউয়ের (ইউপিআর) বাস্তবায়ন বিষয়ক কর্মশালায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় ঘটনা হয়। যে কোনো মানবাধিকার রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর যা নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল। বাংলাদেশ গত ১১ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বে উদাহরণ হয়েছে। দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কেউ পিছিয়ে থাকবে না এটিই সরকারে মূলমন্ত্র।

কর্মশালায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। বাংলাদেশ যে কোনো মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আইসিজে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে রায় দিয়েছে তা সব নির্যাতিত সকল মানুষের মানবাধিকারের জয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, মানবাধিকার রক্ষা হবে যখন রাষ্ট্রের সব যন্ত্র একই সঙ্গে সমান তালে কাজ করবে। শুধু সরকারি নয় বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ইউপিআর ফোরামের ২৫১টি সুপারিশের মধ্যে ১৭৮টি সুপারিশকে চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। অবশিষ্ট ৭৩টি সুপারিশের বিষয়ে নিজস্ব বক্তব্য সম্বলিত ‘নোট’ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত এসব সুপারিশের মধ্যে ২৫টি সুপারিশ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষা সম্পর্কিত। জাতিসংঘে চলমান মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এসব সুপারিশ গ্রহণ করেছে। এসব সুপারিশ গ্রহণ ও ইউপিআরের তৃতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের গঠনমূলক সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল ১৯।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক বলেন, বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ’ (ইউপিআর) জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া যা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষে প্রতিষ্ঠিত।

এই প্রক্রিয়ার অধীনে বর্তমানে চার বছর পর পর জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিজ নিজ রাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনার সুযোগ পায় এবং তার আলোকে মানবাধিকার পরিস্থিতি সমুন্নতকরণে এবং নাগরিকদের প্রতি দায়দায়িত্ব পরিপূরণে গৃহীত পদক্ষেপ ঘোষণার সুযোগ পায়।

ইউপিআর তুলনামূলকভাবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের একটি নতুন এবং অধিক কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উন্নীত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ইউপিআর বা সার্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির আওতায় ২০০৯, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হয়।