ডেঙ্গু প্রতিরোধ

‘যথেষ্ট প্রচার হয়েছে, এবার আইন প্রয়োগ’

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই

গত বছরজুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্কে নাস্তানাবুদ ছিল নগরবাসী। এ কারণে কম নাজেহাল হননি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, নতুন ওষুধ আমদানিসহ বহুমুখী পদক্ষেপ নেয় দুই সিটি কর্পোরেশন। এবার আর ফলাও করে প্রচার নয়, এখন থেকে অ্যাকশনে যাওয়ার চিন্তা করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।

রোববার (৫ জানুয়ারি) ডিএনসিসি নগর ভবনে কিউলেক্স ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় মতবিনিময় সভায় এমন কথা বলেছেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন,ডেঙ্গু প্রতিরোধে যথেষ্ট প্রচার করা হয়েছে। জনগণ এখন জানে কেন ডেঙ্গু হয়, কিভাবে প্রতিরোধ করতে হয়। এরপরও যদি কেউ সচেতন না হন তাকে আইন অনুযায়ী জেল-জরিমানা করা হবে। ভালোবাসা দেওয়ার দিন শেষ, এখন থেকে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা।

মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসির মশক নিধন কার্যক্রম নিয়ে উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল ডা. মোস্তফা সরওয়ার এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম নিয়ে ডা. আফসানা আলমগীর খান দুটি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে ডিএনসিসির রিসোর্স বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক কীটতত্ত্ববিদদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সে অনুযায়ী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কিউলেক্স মশা নির্মূলে গবেষণা করে সম্ভাব্য প্রজননক্ষেত্র (হটস্পট) চিহ্নিত করে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি চিরুনি অভিযান অব্যাহত থাকবে। ডেঙ্গুর কারণে যাতে আর কোনো প্রাণহানি না ঘটে সে জন্য ডিএনসিসি সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, এটা মনে করাটা ভুল হবে যে, গত বছর ডেঙ্গুর পাদুর্ভাব বেশি ছিল, এ বছর কমে যাবে। আমাদের সারা বছর কাজ করতে হবে। এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। সামাজিক সংগঠনগুলোকে মশা নিয়ন্ত্রণে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত করতে হবে। ফোর্থ জেনারেশন লার্ভিসাইডিংয়ের মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদা সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, ডেঙ্গুর কারণে গত বছর আমরা অনেক ভুগেছি, আবার আমরাই সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করেছি। মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আধুনিক ও কার্যকরী বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে মনোযোগী হতে হবে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, শুধু ফগিং করে কাজ হবে না, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) করতে হবে। গত বছরের বিভিন্ন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এগুতে হবে।

গত বছর বিভিন্ন ‘রিপিল্যান্ট’ এর মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশে মশার বিভিন্ন রিপিল্যান্ট প্রস্তুত করতে হবে, যাতে অন্য দেশের প্রতি আমাদের নির্ভরতা না থাকে।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শফিউল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, কীটতত্ত্ববিদ ডা. সাইফুর রহমান, যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক শওকত মঞ্জুর শান্ত, বিভিন্ন সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সিভিল এভিয়েশনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।