ছুটির দিনেও প্রাণচঞ্চল সদরঘাট

  • রাশেদ হাসান, স্টাফ করেসপনডেন্ট, বার্তা টোয়েন্টিফোর.কম , ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল/ ছবি: বার্তা টোয়েন্টিফোর.কম

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল/ ছবি: বার্তা টোয়েন্টিফোর.কম

যাত্রীদের চলাচল, দোকান-দোকানির বাণিজ্য, আর কুলিদের শোরগোলে সব সময় মেতে থাকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। এখানে দিন রাতের চিহ্ন পাওয়া দুরূহ। সকাল থেকে রাত আর রাত থেকে সকাল, একই গতিতে চলে সবার কর্মব্যস্ততা। লঞ্চ ঘাটে ভিড়লেই দেখা মেলে সদরঘাটের আসল রূপ।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর পুরান ঢাকার সদরঘাটে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে সুনসান নীরব। হাজারো রিকশা, ভ্যান ও সিএনজি সব অলস সময় কাটাচ্ছে। দেখে মনে হল আজ শুক্রবার ছুটির দিন, তাতেই মনে হয় এত নীরব।

বিজ্ঞাপন

লঞ্চ ঘাটের সিঁড়ি পার হয়ে ফেরিতে এসে দেখা যায়, ব্যাগ নিয়ে সারি সারি লোক দাঁড়িয়ে আছে। ফেরিওয়ালারাও তাদের সঙ্গে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। সবাই তাকিয়ে আছে নদীর দিকে, দেখে মনে হয় সবাই দীর্ঘ প্রতীক্ষার দৃষ্টিতে অপেক্ষমাণ। অনেকটা চাতক পাখির মতো।

কিছুক্ষণ পেরোতেই ‘উউউ’ আওয়াজ আসলো। সাথে সাথেই সবাই নড়ে উঠলেন, বেঁধে গেল হুড়োহুড়ি। হাজারো গাড়ির হর্নে মাথা ঝিম ধরার মতো অবস্থা। দূর থেকে মনে হবে মাছের বাজারও এর চেয়ে অনেক শান্ত। অনেকটা যুদ্ধ করার মতো করেই লঞ্চ থেকে নামছেন কেউ কেউ, আবার কেউ অন্য লঞ্চে উঠছে। কে আগে নামবে, কখন পৌঁছাবে বাড়ি, দোকান দোকানিরা ছুটছে তাদের লক্ষ্য নিয়ে। কেউ ‘এএ এ ডিম’, কেউ ‘মালাইইই’, কেউ ‘চানাচুর ররর’, কেউবা বাচ্চাদের খেলনা নিয়ে নানা রকম ভঙ্গিতে বিক্রি করছে তাদের পণ্য সামগ্রী।

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল/ ছবি: বার্তা টোয়েন্টিফোর.কম  

সদরঘাটে- লঞ্চ ঘাটে ভিড়লেই বোঝা যায় সদরঘাটের আসল রূপ। সারাক্ষণই ব্যস্ততা আর কোলাহলপূর্ণ থাকে সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনাল। শুক্রবার ছুটির দিনে সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে ছুটি না থাকলেও একটু নীরব থাকে, এছাড়া ভিড়ও কম থাকে।

লঞ্চ টার্মিনালের কেরানি মোতাহার হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে সদরঘাট। শুক্রবার ছুটি থাকলেও এখানে কোনো ছুটি নেই। শুক্রবার সকালে একটু চাপ কম থাকে, কারণ বৃহস্পতিবার রাতে সবাই বাড়ি যায়। ফিরে আসে শুক্রবার রাতে অথবা শনিবার। তাই শুক্রবার সকালে একটু ভিড় কম থাকে অন্যান্য দিনের তুলনায়।

সদরঘাট বাংলাদেশের আদি ঢাকা শহরের একটি নদীবন্দর। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। যাত্রী পরিবহনের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় নদী বন্দর এটি। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকা শহরের নদীকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম মাধ্যম এই লঞ্চ টার্মিনাল। এই টার্মিনাল থেকে মোট ৪৫টি রুটে নৌযান চলাচল করে। এই নদীবন্দর থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের এলাকাগুলো, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, চাঁদপুর, খুলনা, বাগেরহাট প্রভৃতি গন্তব্যে লঞ্চ-স্টিমার চলাচল করে।