মেলায় দল বেঁধে কর দিচ্ছে করদাতারা
সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার পঞ্চম দিনে দল বেঁধে আয়কর ও রিটার্ন জমা দিচ্ছে করদাতারা। আয়কর ও রিটার্ন জমা দেওয়ার পাশাপাশি সোমবার (১৮ নভেম্বর) কর সংক্রান্ত বিষয় জানতেও সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবের মেলায়।
মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার দিনের শুরুতে মেলায় করদাতা দর্শনার্থীদের ভিড় একটু কম ছিল। কিন্তু সকাল ১১টার পর থেকে বাড়তে শুরু করে করদাতাদের ভিড়। দুপুর ১২টার পর থেকে শুরু হয় করদাতাদের দীর্ঘলাইন। মূলভবনে প্রবেশের এই লাইন মেলার রাস্তা পেরিয়ে বাহিরে গিয়ে দাঁড়ায়। এই দৃশ্য ছিল শেষ বিকেল পর্যন্ত।
মেলায় কর দিতে আসা লঙ্কাবাংলার অফিসার আলী রেজা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, মেলায় আয়কর ও রিটার্ন জমা দেওয়া খুবই সহজ। পাশাপাশি হয়রানি ও ঝামেলামুক্ত তাই কর দিতে মেলায় চলে আসলাম। তিনি বলেন, আমরা ১০ জন সহকর্মী আয়কর ও রিটার্ন জমা দিলাম।
সরকারি কবি নজরুল কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুপর্না দে বার্তাটোয়েন্টিফোর. কমকে বলেন, প্রতিবছর আমি মেলাতে এসেই রিটার্ন দাখিল করি। মেলায় রিটার্ন দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত।
উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী মেলায় গত চারদিনে রিটার্ন দাখিল ও আয়কর বাবদ মোট ১ হাজার ৩৪৬ কোটি ৮০ লাখ ২৫ হাজার ৫১২ টাকার কর আহরণ করেছে এনবিআর। এবছর মেলায় কর আদায়ের প্রত্যাশা ৩ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি এই সময়ে মেলায় এসে সেবা গ্রহণ করেন ৯ লাখ ৬৮ হাজার ৯০৭ জন, রিটার্ন দাখিল করেছেন ৩ লাখ ১৪ হাজার ৫৬৫টি এবং নতুন ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন ১৬ হাজার ৫৪১ জন করদাতা।
‘কর প্রদানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, নিশ্চিত হোক রূপকল্প বাস্তবায়ন’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) শুরু হয় সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা। এ বছর দেশের ৮টি বিভাগ, ৫৬টি জেলা, ৫৬টি উপজেলাসহ মোট ১২০টি স্পটে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলার পরিধি গত বছরের মেলার চেয়ে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিদিন মেলা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে।
মেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইএন গ্রহণ, ই-পেমেন্ট, ই-ফাইলিং, ই-পেমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলার বিশেষ আকর্ষণ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা। করদাতারা রকেট, নগদ, বিকাশ ও প্রযোজ্য শিওর ক্যাশের মাধ্যমে আয়কর জমা দিচ্ছেন।
ঢাকার মেলায় করদাতাদের সুবিধার্থে ৫২টি আয়কর রিটার্ন বুথ, ৫৩টি হেল্প ডেস্ক, ব্যাংক বুথ (সোনালী ব্যাংক ১৩টি, জনতা ব্যাংক ৫টি এবং বেসিক ব্যাংক ৪টি), ই-পেমেন্টের জন্য তিনটি, ই-ফাইলিংয়ের জন্য দুটি বুথ পৃথক রয়েছে। এছাড়া মেলায় আগত করদাতাদের তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য একটি মেডিকেল বুথ রয়েছে।