সুনামগঞ্জের এসপিকে প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের হট্টগোল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সুনামগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের ধোপজান চলতি নদীতে বালু-পাথর লুটে পুলিশ জড়িত অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খানের প্রত্যাহার দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতেই এই দাবি জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে অংশীজনদের সঙ্গে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে এই সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী। জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান, সুনামগঞ্জে বিজিবির ২৮ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির। সভায় বক্তব্য চলাকালীন এসপির অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ ও স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ করেন সরকারি সম্পদ লুটপাটে পুলিশ সুপারের সরাসরি নির্দেশনা রয়েছে।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পালের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক আবু সালেহ মো. নাসিম, সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল গালিব, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শেরেনূর আলী, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার, সুনামগঞ্জ পৌর কলেজের অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি সিলেটের সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আক্তার, সাংবাদিক দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন সহসভাপিত শওকত আলী, সুশাসনের জন্য নাগরিকের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম, মানবাধিকার কর্মী আমিনুল হক, শ্রমিক শাহেদ মিয়া, সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক জিহান জুবায়ের ও ওসমান গনী প্রমুখ।

বালু শ্রমিকেরা দাবি জানান, চলতি নদ ইজারা না দিয়ে সরকারিভাবে ক্রয় কেন্দ্র চালু করতে হবে। একই সঙ্গে নদে ড্রেজার ও স্টীলের নৌকায় বালু উত্তোলন ও পরিবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। সভার এক পর্যায়ে পুলিশ সুপার জানান, তারা নদে বালু লুটে জড়িত কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করছে। তদন্ত চলছে, আরও কেউ জড়িত থাকলে তারা শাস্তি পাবে।

কিন্তু হলে থাকা শিক্ষার্থীরা তার কথার মাঝখানেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন এবং পুলিশ সুপারের প্রত্যাহার দাবি করেন। তখন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবু সালেহ মো. নাসিম মাইক হাতে নিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। বলেন, আমরা এই বালু লুট বন্ধে পুলিশ, প্রশাসনকে বারবার বলেছি। কিন্তু কোনো উদ্যােগ নেওয়া হয়নি। এই সরকারকে যারাই অসহযোগিতা করবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী তার বক্তব্যে বলেন, আমরা সবার কথা, পরামর্শ, অভিযোগ শুনেছি। যারাই এই লুতরাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই নদের প্রকৃতি, পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যােগ নেওয়া হবে।