তবে প্রবল গণআন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এ সামরিক শাসক। এরপর জেলও খাটতে হয় তাকে।
তবে প্রবল গণআন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এ সামরিক শাসক। এরপর জেলও খাটতে হয় তাকে।
১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ২২ দিনের জন্য ইলিশ নিধন, বিক্রি ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঝালকাঠিতে চলছে কিছুটা ব্যাতিক্রম। মৎস্য অফিসের যোগসাজসে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনেক জেলেরা নদীতে মা ইলিশ নিধন অব্যাহত রেখেছে। এদের মধ্যে মৌসুমী জেলের সংখ্যাই বেশি।
নিষেধাজ্ঞা শুরু থেকে গেলো এক সপ্তাহে সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিষখালী নদীর ভবানীপুর, চাঁদপুরা, হদুয়া লঞ্চঘাট, পুরান হদুয়া বাজার, নলবুনিয়া,, ইসলামপুর, তেতুলবাড়িয়া লঞ্চঘাট ও সুগন্ধা নদীর মগড় জাঙ্গালিয়া ইটভাটা, অনুরাগ, দপদপিয়া, মাটিভাঙা এলাকায় শতাধিক মানুষ সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে লক্ষাধিক মিটার জাল নিয়ে পৃথকভাবে ইলিশ নিধনের মহোৎসবে মেতেছে। যা মধ্য রাতে দৃশ্যমান থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি জানান, অসাধুদের ইলিশ নিধনের বিষয়টির সাথে জেলা ও উপজেলার মৎস্য অফিসও জড়িত। নিষেধাজ্ঞার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কিছু জাল জব্দ এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দু'জনকে কারাদণ্ড দেয়া ছাড়া তেমন কোনো সাফল্য নেই মৎস্য অফিসের। তারা নামমাত্র অভিযান, ফটোসেসনসহ তাদের দাফতরিক আনুষ্ঠানিকতায় ব্যস্ত। তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নলছিটির তেতুলবাড়িয়া এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, নিষেধাজ্ঞা শুরুর দিন থেকেই বিষখালী নদীর ভবানীপুর, ইসলামপুর, তেতুলবাড়িয়া লঞ্চঘাট ও সুগন্ধা নদীর মগড় জাঙ্গালিয়া ইটভাটা, অনুরাগ, দপদপিয়া, মাটিভাঙা এলাকায় চলছে অবাধে মা ইলিশ মাছ নিধন। অভিযানে নামার আগাম খবর পেয়ে যায় জেলেরা। এর পরই শুরু হয় মৎস্য দফতরের লোকেদের সাথে লুকোচুরি খেলা।
নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি গ্রামের জুয়েল হাওলাদার বলেন, শতাধিক ডিঙ্গি নৌকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নদীতে। মৎস্য অফিসের অভিযানের ট্রলার আসার আগেই এরা নৌকা নিয়ে ছোটো ছোট খালে আত্ম গোপনে চলে যায়। অভিযানের লোকেরা চলে গেলে তারা আবার নৌকা নিয়ে নদীতে প্রবেশ করে।' অসাধূ জেলেদের সাথে মৎস্য অফিসের লোকদের যোগসাজস রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন জুয়েল।
ঝালকাঠি লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দা নান্টু সেলিম বলেন, তালিকাভুক্ত (কার্ডধারী) অনেক জেলে নিজে নদীতে না নেমে মাছের ভাগের বিনিময়ে নৌকা ও জাল দিয়ে মৌসুমি জেলেদের সহযোগিতা করছেন। আবার এলাকার কিছু লোক নৌকা কিনে মৌসুমি জেলেদের কাছে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকায় ভাড়া দিচ্ছেন। আর মৎস্য অফিসের লোকজন সারাদিন নির্দিষ্ট একটি গন্ডির মধ্যে ট্রলার নিয়ে ঘুরে বেড়ায় কিছু জাল ধরে ফটোসেসন করে চলে যায়।
নদীতীরের বাসিন্দা অনেকেই জানান, মৎস্য অফিসের সাথে যারা লিয়াজো না করে তাদেরকেই ধরা হয়। আর লিয়াজোকারীরা লুকোচুরির মতো খেলায় দিন কাটিয়ে মা ইলিশ নিধন উৎসব করছে। জাল তোলার পর মাছ নৌকা থেকে নামিয়ে নদীর তীরের ঝোঁপ-জঙ্গলে ও কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখছে। এসব ইলিশ সস্তায় কিনতে দূর-দূরন্ত থেকে ক্রেতারা আসছে প্রতিদিন।
খেয়াঘাটে দায়িত্বরত অনেকে বলেছেন, পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেট নদীতে অভিযানে নামলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলফোনে অসাধু জেলেদেরকে খবর জানিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে বেশ কিছু লোক। বিনিময়ে প্রত্যেককে ৫০০-৬০০ টাকা করে প্রতিদিন দেওয়া হয়। এদের কাজ হলো নদীর পাড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং নদীতে প্রশাসন অভিযানে নামলেই মা ইলিশ নিধনকারী মৌসুমি জেলেদের সাবধান করে দেওয়া।
গণমাধ্যমে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ ক'জন জেলে জানান, বর্তমানে প্রচুর ইলিশ জালে উঠছে। দিনের চেয়ে রাতেই বেশি নিরাপদ। তাই রাতেই বেশি জাল ফেলছেন। ইলিশ বিক্রির জন্য কোনো চিন্তা করতে হয় না। ক্রেতারা নদীর তীরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন মাছ কেনার জন্য। কিছু ক্রেতা মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেন। ফোন দিলেই তারা এসে মাছ নিয়ে যায়।
অসাধু জেলেদের সাথে অসাধূ উপায়ে লিয়াজো রাখা সহ সকল অভিযোগ অস্বিকার করে এ প্রতিবেদককে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম মুঠো ফোনে বলেন, যখন যেখানে জাল ফেলার সংবাদ পাচ্ছি তখনই সেখানে অভিযান চালাচ্ছি। আমরা যেভাবে গোপন খবর পেয়ে অভিযানে ছুটে যাই ঠিক তেমনি আমাদের অভিযানের তথ্যটিও অসাধু জেলেদের কেউ খবর দিয়ে দেয়। তাই অনেক সময় ব্যাটে বলে মিলেনা। আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। আবার আমাদেরকে ফোন করে ভুল তথ্যও দিচ্ছে অজ্ঞাত লোকজন। ভুল তথ্যের কারনে অভিযানেও ব্যঘাত ঘটছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরো বলেন, ৬৩ কিলোমিটার নদীর ৮ পয়েন্টে আমরা আলাদা নজর রাখছি। মৎস্য অফিসের অভিযান বা টহল টিম নির্ধারিত গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, পুরো এলাকায়ই টহল দেয়া হচ্ছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
একই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজাপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গৌতম কুমার।
কর্ণফুলী নদীর ১০ ঘাটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত একাধিক সংগঠন।
পরম্পরাই জন্মগত পেশাদার পাটনিজীবী (সাম্পান মাঝি) সমিতিগুলোকে চসিকের সদরঘাট, অভয়মিত্রঘাট ও বাংলাবাজার নৌ ঘাট তিনটি না দিয়ে বহিরাগতদের খাস আদায়ের দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিবাদে এ ধর্মঘট পালন করছেন তারা।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর এসব ঘাটে সাম্পান চলাচল বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করছেন ১২ শতাধিক সাম্পান মাঝি।
এতে নতুনব্রিজঘাট, তোতারবাপের হাট, বিডব্লিউ ঘাট, দক্ষিণপাড় পুরাতন ব্রিজঘাট, সদরঘাট, অভয়মিত্র, কর্ণফুলী ঘাট, বাংলা বাজার ঘাট, সল্টগোলা ঘাটে (পাটনিজীবী নাই) ইঞ্জিনচালিত সাম্পান চলাচল বন্ধ দেখা যায়। তবে জরুরি রোগী সেবা ও খাদ্যদ্রব্যের পারাপারে মানবিকতা দেখাচ্ছেন মাঝিরা। নদীর অন্যান্য ঘাটে যাত্রী পারাপার চলছে।
নৌ ঘাটে উপস্থিত সাম্পান মাঝিরা জানান, ২০০৩ সালের পাটনিজীবী নীতিমালা তোয়াক্কা না করে একের পর এক অবৈধভাবে মাঝিদের ঘাট ছাড়া করছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এতে দেয়ালে মাঝিমাল্লাদের পিট ঠেকে যাওয়ায় বাধ্য হয়েছে বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে।
চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পেশাগত সাম্পান মাঝি (পাটনিজীবী) থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে পাটনিজীবী নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ইজারা দিচ্ছে। ঘাট হারা মাঝিরা চসিকে লিখিত অভিযোগ করলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। তাই বৈঠা বর্জন চলছে।
অপরদিকে, বিগত ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পেশাদার জন্মগত পাটনিজীবী সমিতিকে নৌ ঘাটগুলো ইজারা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু চসিকের প্রধান রাজস্ব নির্দেশনাটিও মানছেন না বলে মাঝিদের দাবি।
চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক সমিতি ও বাংলা বাজার সদরঘাটের মাঝিরা জানান, প্রতি বছর ১৯ ঘাট থেকে রাজস্ব আদায় হতো প্রায় ৬ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু চৌদ্দশত একত্রিশ বাংলায় এসে আইনি জটিলতায় এবার ঘাটগুলো ইজারা দিতে পারেনি চসিক। সে সুযোগে খাস কালেকশনের নামে চসিকের একাধিক অসাধু কর্মকর্তারা নিজের আখের গোছাচ্ছেন। দৈনিক আদায়কৃত টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সাদা কাগজে চসিক সিল দিয়ে টাকা পরিশোধের সার্টিফিকেট দেওয়া হলেও সেখানে টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই। রাজস্বের টাকা লুটপাট করতেই চসিকের গুটিকয়েক কর্মকর্তা এমন অপকৌশল বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে অভয়মিত্র ঘাটের সহযোগী হিসেবে নিয়োজিত ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাসের সাজ্জাদ বলেন, ‘আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সিটি কর্পোরেশন থেকে ঘাট নিয়েছি। কোন অবৈধভাবে নিইনি। আজ থেকে খাস কালেকশন করার কথা দৈনিক সাড়ে তিন হাজার করে। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি অবস্থান ধর্মঘট। সাম্পান চলছে না। এতে সাধারণ মানুষজন কষ্ট পাচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত এটির সমাধান হোক। ইতিমধ্যে সাম্পান সমিতির মাঝিদের প্রস্তাব দিয়েছি বসার। তবে কোন আশঙ্কা নেই ভাড়া বাড়ার।’
এ বিষয়ে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস.এম পেয়ার আলী বলেন, ‘বৈঠা যার ঘাট তার’ এই দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করবো। প্রতিটি ঘাটের সকল সাম্পান মাঝিদের নিয়ে গঠিত সমিতির অনুকূলে ঘাট ইজারা দিতে হবে। বহিরাগতদের ঘাট দিয়ে খাস কালেকশন চলবে না।’
নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরাম উল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন স্যারদের জানিয়েছি। এটি যেহেতু চসিকের রাজস্ব শাখার বিষয়। তবে নৌ পুলিশ মাঠে রয়েছে।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপ-সচিব) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মানতে হবে। কিছু করার নেই। খাস কালেকশনে ঘাট চলছে। যেহেতু আদালতের নির্দেশে স্থগিত ইজারা। রিট শুনানির জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।’
প্রসঙ্গত, গতকাল ২০ অক্টোবর চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে অভয়মিত্র ঘাটের খাস কালেকশনের জন্য চসিক এস্টেট শাখার বাজার পরিদর্শক দূর্বাদল চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এমনকি এ কাজে লোকবল, যাত্রী পারাপারে নৌকা, সাম্পান সরবরাহ-সহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য ২১ অক্টোবর থেকে আবু নাসের সাজ্জাদ ও আব্দুল কাদের ফিরোজ নামে দু’ব্যক্তিকে নিয়োজিত করেন। যারা ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড বিএনপি নেতা। এতেই ক্ষেপে গিয়ে বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দেন কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের স্ববিরোধী বক্তব্য বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে বলা বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট এনেক্স ভবনের মিডিয়া রুমের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার এ ভাষণ সারাদেশের মানুষ শুনেছে। রাষ্ট্রপতি নিজে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের শপথ পড়িয়েছেন। এখন তিনি বলছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই। আমি বলব, রাষ্ট্রপতি সরকার গঠনের দুই মাস পরে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে একথা বলেছেন। রাষ্ট্রপতি অসত্য বলেছেন।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে বৈধতা নেওয়া হয়েছে। তাই পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা যদি পদত্যাগ নাও করেন এই সরকারের কোনো বৈধতার সংকট নেই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, যেহেতু রাষ্ট্রপতির পদে থেকে তিনি অসত্য কথা বলেছেন, তাই দেশের মানুষ মনে করেন তার পদত্যাগ করা উচিত।
উল্লেখ্য, দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, (পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।
তিনি আরও বলেন, তিনি শুনেছেন যে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে তার কাছে এর কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।
ছয় দাবিতে চট্টগ্রামে মাঠে নেমেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এসময় মানববন্ধনে নানা স্লোগান লেখা ব্যানার-ফ্যাস্টুন প্রদর্শন করেন তারা। কারও হাতে ছিল ‘রক্ত নিলে রক্ত নিন, উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিন’, ‘টেকনেশিয়ান হটাও, টেকনোলজিস্ট বাঁচাও’, ‘শিক্ষা মোদের দাবি নয়, শিক্ষা মোদের অধিকার।’
সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে প্রেসক্লাবের সামনে ‘মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে শতাধিক তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা বলেন, সম্প্রতিকালে সংগঠিত হওয়া 'জুলাই বিপ্লব' নামে ছাত্র-জনতার সম্মিলিত গণঅভ্যুথান, সব শ্রেণি ও পেশার মানুষকে এক নতুন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এদেশের গণমানুষের মধ্যে একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আশার সঞ্চার করেছে। জনগণ তাদের অন্যসব অধিকারের পাশাপাশি সর্বজনীন চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছেন। স্বাস্থ্যসেবাকে গণমুখী করতে হলে স্বাস্থ্য সেবার নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সব জনবলের অধিকার সুনিশ্চিত করা অত্যবশকীয়। চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ অন্যান্য স্বাস্থকর্মীদের পেশাগত সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করে সবাইকে সঙ্গে নিয়েই একটি অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।
তারা আরও বলেন, স্বাস্থ্যসেবা একটি টিম ওয়ার্ক যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্টগণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। কিন্তু একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর পেশাজীবী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের জন্য কোনো স্বতন্ত্র পরিদফতর বা উইং নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে। সেবা পরিদফতর বাংলাদেশের নার্সিং ব্যবস্থাপনা ও সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠন করা হয় ১৯৭৭ সালে। কাজের পরিধি বৃদ্ধি ও জনবলের আকার বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে ১৬ নভেম্বর ২০১৬ সালে সেবা পরিদফতরকে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর হিসেবে উন্নীত করা হয়। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা উভয় বিভাগের অধীনস্থ মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষা এবং, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পেশাজীবীদের পেশাগত লক্ষ্য বাস্তবায়ন, বদলি, পদোন্নতি, উচ্চ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, সক্ষতা বৃদ্ধি, সমন্বয়ের জন্য কোনো স্বতন্ত্র উইং, পরিদফতর কিংবা অধিদফতর নেই।
দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ আছে দাবি করে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ারা আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গাইডলাইন অনুযায়ী ১ জন চিকিৎসকের বিপরীতে ৩ জন নার্স ও৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকা প্রয়োজন। দীর্ঘ ১৪ বছরেরও অধিক সময় প্রশাসনিক জটিলতায় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকারি চাকরিতে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা মাত্র ৪১০৬ এবং মোট পদের সংখ্যা ৫৯৭৫ টি। চিকিৎসক ও নার্সের বিদ্যমান সংখ্যার অনুপাতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হওয়ার কথা ছিল ৮০ হাজারেরও বেশি। নিয়োগ জটিলতা কেটে গেলেও ২০১৩ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি এখনও নানাবিধ খোঁড়া অজুহাতে আটকে রাখা হয়েছে।
তারা ছয়টি দাবি জানান। সেই দাবিগুলো হলো, ‘ডিপ্লোমাধারীদের ১০ম গ্রেড (২য় শ্রেণির গেজেটেড) পদমর্যাদা প্রদান করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নীতিমালা অনুযায়ী আনুপাতিক হারে পদ সৃজন এক দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে, পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০১৩ সালের স্থগিতকৃত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের নবম গ্রেডের পদসৃষ্টি পূর্বক চাকরীজীবিদের আনুপাতিক হারে পদোন্নতির নিয়ম বহাল রেখে স্ট্যান্ডার্ড সেট আপ ও নিয়োগবিধি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, ঢাকা আইএইচটি-কে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি নামকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে হবে এবং ভক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য সকল আইএইচটিসমূহের জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট শিক্ষকদের স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার প্ল্যান গঠন করে বিদ্যমান নিয়োগ বিধি ও অসংগতিপূর্ণ গ্রেড সংশোধন করতে হবে। মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে পেশাদার লাইসেন্স প্রদান, ডিপ্লোমা মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড গঠন এবং প্রাইভেট সার্ভিস প্রতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। বি ফার্মসহ সকল অনুষদের বিএসসি ওএমএসসি কোর্স চালু করা এবং স্কলারশিপসহ প্রশিক্ষণ ভাতা চালু করতে হবে। দেশের মানুষের কল্যাণে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, পেশাজীবীদের আত্মমর্যাদা, সামাজিক অবস্থান সর্বোপরি স্বাস্থ্যসেবায় তাদের গুরুত্ব বিবেচনা দরে মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি পেশাকে বৈষম্য ও বঞ্চনার বেড়াজাল থেকে মুক্ত করার জন্য বিনীত আহবান জানাচ্ছি।