জাল সনদে চাকরি, ১৯ বছর ধরে করছেন শিক্ষকতা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে রাশেদা আক্তার নামে এক শিক্ষিকা ১৯ বছর ধরে জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। রাশেদা আক্তার উপজেলার কেল্লাবাড়ী কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন৷

বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৫ সালে রাশেদা আক্তারকে অধ্যক্ষ মোস্তাফিজার রহমান স্বপনের বাবা তৎকালীন সভাপতি মরহুম মোশারফ হোসেন কম্পিউটার শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদান করেন। পরে তিনি ২০১৩ সালে কম্পিউটার শিক্ষার জাল সনদে নবম গ্রেডে এমপিওভুক্ত হন৷ সেসময় তিনি অধ্যক্ষের সহায়তায় নট্রামস কলেজ থেকে অ্যাডভান্সড সার্টিফিকেট কোর্স অন কম্পিউটার ট্রেনিং (৬ মাস মেয়াদী) জাল সনদ প্রদান করেন।

বিজ্ঞাপন

তবে ২০০৫ সাল থেকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক এ পদের জন্য 'শিক্ষক নিবন্ধন সনদ' বাধ্যতামূলক করা হলেও তার শিক্ষক নিবন্ধন প্রত্যয়ন ছিলো না। ২০২০ সালে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ) প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের পরে ২০২২ সালের প্রতিবেদনে তার সদনটি জাল বলে উল্লেখ করেন। পরে অধ্যক্ষের যোগসাজশে অন্য একটি কম্পিউটার সনদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে তা এখনো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানা যায়।

আরও জানা যায়, তিনি এমপিভুক্ত হওয়ার ১১ বছর চাকরির সুবাদে সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন৷

এবিষয়ে কম্পিউটার শিক্ষিকা রাশেদা আক্তার বার্তা২৪কে বলেন, আমাকে অধ্যক্ষ বিপদে ফেলেছিলো। ২০০৫ সালে আমি নিয়োগ পেয়ে ২০১৩ সালে এমপিওভুক্ত হই। সেসময় অডিটে অধ্যক্ষ আমার জাল সনদ পাঠিয়েছে। কিন্তু তিনি সেই জাল সনদটি কোথায় পেয়েছে তা আমি জানিনা। আমি বারবার তাকে অনুরোধ করেছি মূল কাগজ করে দেওয়ার জন্য। অডিটের গুরুত্বপূর্ণ দিনে তিনি আমার জাল সনদ দিয়েছে। পরে ২০২২ সালের অডিট প্রতিবেদনে আমার সনদটি জাল বলে উল্লেখ করা হয়।তখন আমি অধ্যক্ষকে ধরলে তিনি কিছু বলেননি। পরে আবার মন্ত্রণালয়ে আমার একটি সনদ পাঠিয়েছে সেটি যাচাই-বাছাই চলছে এখনো প্রতিবদেন আসেনি।

অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান স্বপন বলেন, ওই শিক্ষিকা যোগদানের সময়ে যে কম্পিউটার সনদ দিয়েছিলো সেটি ভুয়া ছিলো। পরে আমি সেটি অধিদফতরে পাঠিয়ে দিলে সেটি যাচাই-বাছাই করে ভুয়া প্রমাণিত হয়। প্রমাণিত হওয়ার ২২ দিন পরে তিনি আরও একটি সনদ এনে দেন। সেটি পাঠিয়েছি অধিদফতর যাচাই-বাছাই করে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। আমি যদি মনে করতাম তখন তাকে চাকরিচ্যুত করতাম। কিন্তু কয়েকজনের সুপারিশ আর মানবিক দিক ভেবে তাকে রক্ষা করার জন্য আমি অধিদফতরে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছি।


এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেল্লাবাড়ী কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি মৌসুমি হক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।