সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন (গালিব) এর আদালত এই আদেশ দেন।
গত ২১ জানুয়ারি মতিউরকে ৭ দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে দুদক। ওইদিন আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য ২৭ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করা হয়েছিল।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান লিটন এতথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ৬ জানুয়ারি মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এজাহারে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অসৎ উদ্দেশে মিথ্যাও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯০ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অসঙ্গিপূর্ণ ১৩ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১০৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন ও মালিকানা ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এসব সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন মতিউর রহমান।
আরেকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে মতিউরকন্যা ফারজানা রহমান ইস্পিতা, মতিউর রহমান এবং স্ত্রী লায়লা কানিজকে। এই মামলার এজাহারে দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং ৫৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়াও অন্যটি মামলায় মতিউরপুত্র ছাগলকাণ্ডের আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব এবং মতিউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার এজাহারে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যপ্রমাণসহ ৪২ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার ২৭১ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি ভোরে বসুন্ধরার আবাসিক এলাকা থেকে মতিউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
চট্টগ্রামের চকবাজার প্যারেড ময়দানে দীর্ঘ ১৮ বছর পর আজ (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল। পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজন চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এ মাহফিল চট্টগ্রামের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
মাহফিলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হচ্ছেন জনপ্রিয় ইসলামি চিন্তাবিদ ড. মিজানুর রহমান আজহারী। মাহফিলের শেষদিন তিনি প্রধান মুফাসসির হিসেবে তাফসির পেশ করবেন। একইসঙ্গে উপস্থিত থাকবেন আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী। আয়োজকরা জানিয়েছেন, পাঁচ দিনব্যাপী এই মাহফিলে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে।
প্যারেড ময়দান ছাড়াও আশপাশের এলাকায় প্যান্ডেল ও পর্দার মাধ্যমে তাফসির শোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নারী শ্রোতাদের জন্য মহসিন কলেজ মাঠ, কাজেম আলী হাই স্কুল, গুলজার বেগম হাই স্কুল, কিশলয় কমিউনিটি সেন্টার এবং কাপাসগোলা কলেজে বিশেষ প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই মাহফিলের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর স্মৃতি। ১৮ বছর আগে তার উপস্থিতিতে পুরো প্যারেড ময়দান পরিণত হতো জনসমুদ্রে। তার কণ্ঠে তাফসির শুনতে হাজারো মানুষ ভিড় জমাতেন। আল্লামা সাঈদী প্রতি বছর এখানে এসে কুসংস্কার, বেদাতসহ ইসলামবিরোধী নানা বিষয়ের ওপর কোরআন ও হাদিসের আলোকে বক্তব্য দিতেন।
চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, আল্লামা সাঈদী ছিলেন এই মাহফিলের হৃদয়ের স্পন্দন। তিনি এ মাহফিলের মাধ্যমে চট্টগ্রামের মানুষকে কোরআন ও হাদিসের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরতেন। এত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও ১৮ বছর পর আবার এই মাহফিল আয়োজিত হচ্ছে, যা আমাদের জন্য গৌরবের।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, মাহফিল সফল করতে ইতোমধ্যে স্যানিটেশন, খাবার পানি, মেডিকেল টিমসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন চট্টগ্রাম নগর জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। মাহফিলের প্রতিটি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন টিম গঠন করা হয়েছে।
আয়োজক কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ তাহের বলেন, এই মাহফিল কেবল ধর্মীয় আলোচনা নয়, এটি চট্টগ্রামের ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রতীক। আমরা আশা করছি, মাহফিলে লাখো মানুষের সমাগম হবে। সবাই যাতে সুশৃঙ্খলভাবে তাফসির শুনতে পারেন, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
মাহফিলের শ্রোতারা চকবাজার ছাড়াও আশপাশের এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়বেন। আয়োজক কমিটির তথ্যমতে, দক্ষিণে আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ মোড় থেকে উত্তরে মেডিক্যাল কলেজ ও পাঁচলাইশ থানা মোড় পর্যন্ত এবং পূর্বে ধুনির পোল থেকে পশ্চিমে সিজিএস স্কুল মোড় পর্যন্ত শ্রোতাদের অবস্থান থাকবে।
পাঁচ দিনের এই তাফসির মাহফিল শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি চট্টগ্রামের মানুষের হৃদয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আয়োজকরা আশা করছেন, কয়েকলাখ মানুষের উপস্থিতিতে মাহফিল আবারও তার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্ভুদ পরিস্থিতিটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। পরিস্থিতি ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। আমার মনে হয় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে। যদি আমরা অধৈর্য হয়ে যাই তো কোনো কিছুরই সমাধান হবে না। সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।
পুলিশ ধৈর্যের সঙ্গেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশকে ধৈর্যের সঙ্গেই মোকাবেলা নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু অনেক সময় পুলিশ সেটি পারে না।
মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি থাকতে পারে। সেটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ৭০টি কাছিমের মরদেহ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট (বরি)। কাছিমগুলো জলপাই রঙের বা অলিভ রিডলি প্রজাতির।
শনিবার, রোববার ও সোমবার (২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টা পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের টেকনাফ থেকে হিমছড়ি সৈকতের পাড় থেকে মৃত কাছিমগুলো উদ্ধার করে বালিচাপা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিমুল ভূঁইয়া বার্তা২৪.কম-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের গবেষক দল শনিবার টেকনাফ উপজেলার সাবরাং জিরো পয়েন্ট থেকে উখিয়ার রূপপতি এলাকা পর্যন্ত ১২টি কচ্ছপের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন রোববার রূপপতি থেকে সোনারপাড়া পর্যন্ত ৫০টি এবং প্যাঁচার দ্বীপ থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত আটটি কচ্ছপের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তারা।
তিনি জানান, সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকায় কিছু সংখ্যক কচ্ছপের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর দেন স্থানীয় লোকজন। এ তথ্যের ভিত্তিতে ইনস্টিটিউটের একটি গবেষক দলের সদস্যরা শনিবার সকাল থেকে সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম। এ সময় মা কচ্ছপ উপকূলে ডিম দিতে আসে। তখন অনেক কচ্ছপ জেলেদের জালে আটকে, সমুদ্রে চলাচলকারী বড় নৌযানের ধাক্কায় মারা যায়। তবে তদন্তের পর কচ্ছপগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে।
তবে এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, কাছিমগুলো গেলো দুই মাসে মারা গেছে। এক দুদিনে মারা গেছে এমনটি নয়। আমরা অনেকগুলো কঙ্কাল পেয়েছি। অনেকগুলো কয়েকদিন আগেও মারা গেছে।
এদিকে প্রজনন মৌসুমে এভাবে কাছিমের মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)'র কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক এইচ এম এরশাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন এবং সোনাদিয়া দ্বীপ, টেকনাফ, সোনারপাড়া, পেঁচারদ্বীপ, হিমছড়ি এলাকায় আগে কাছিম ডিম পাড়তে আসত। এখন অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকদের কারণে কাছিম ডিম পাড়তে আসতে পারছে না। অন্যদিকে সন্দীপ, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া সহ বিভিন্ন উপকূলে প্রায় ২০ হাজার ট্রলার মাছ ধরতে গভীর সমুদ্র যায়। জেলেরা গভীর সাগরে ভাসমান জাল, ডুবাজাল, যন্ত্রযাপিত ট্রলার সহ ৪০/৬০ ফুট লম্বা বিহুন্দি ও লাইক্ষ্যা জাল পেতে রাখে। যেখানে কাছিম আটকে পড়ে। জেলেরা ঝামেলা এড়াতে বাঁশ, কাঠ, লোহাসহ বিভিন্ন কঠিন জিনিস দিয়ে কাছিমগুলো হত্যা করে। পরে মৃত কাছিমগুলো উপকূলে ভেসে আসে।
সাংবাদিক এইচ এম এরশাদ জানান, আমরা জেলা প্রশাসন, সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং মৎস্য কর্মকর্তাদের এগুলো নিয়ে কিভাবে সমাধান করা যায় সেটির দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানাব। আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর কাছিম বাঁচাতে স্মারকলিপি দেব।