আবারও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হুমকির বার্তা দেওয়া হয়েছে। বার্তার আদৌ কোনো সত্যতা আছে কি না তা জানার চেষ্টা করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১১টায় এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মালয়েশিয়ার একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে বিমানবন্দরে হুমকির বার্তা পাঠানো হয়। এরপরই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে রোম থেকে ঢাকায় আসার পথে বিমানের একটি ফ্লাইটে বিস্ফোরক দ্রব্য বা বোমা থাকার বার্তা দেওয়া হয়। ফ্লাইটটি বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের জরুরি অবতরণ করে। পরে পুরো প্লেনে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিতে প্লেনে বোমা ও বোমা সদৃশ কিছু পাওয়া যায়নি।

বিমানে ওই বিস্ফোরক থাকার বার্তাটি পাকিস্তানি নম্বর থেকে বিমানবন্দর এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এসেছিল।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লোন্দা দাখিল মাদ্রাসার দীর্ঘ অর্ধশতকের অবহেলা চরম আকার ধারণ করেছে। শিক্ষার্থীরা জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠ গ্রহণ করছে। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নেই, আর ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের অবস্থা আরও শোচনীয়।

১৯৮০ সালে ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও শিক্ষার পরিবেশ নেই বললেই চলে। ১৪ জন শিক্ষক থাকলেও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাবে শিক্ষাদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালে মাদ্রাসার দুটি টিনশেড ঘরের একটি কিছুটা মেরামত করা হলেও অন্যটি ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। ২০০২ সালে নির্মিত পাকা ভবনটিও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গভীর নলকূপ না থাকায় শিক্ষার্থীদের দূর থেকে পানি আনতে হয়। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি বা ল্যাব রুম নেই, ফলে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান মীম অভিযোগ করেন, বিশুদ্ধ পানির জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। মুনিয়া নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হয়ে আসার সময় প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব আকন বলেন, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বন্যায় ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

মাদ্রাসার সুপার মো. আ. গফফার জানান, দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যার কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, সমস্যাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে দফায় দফায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিইপিজেডের ভেতরে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।

পুলিশ জানায়, প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও এখনও এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জানা গেছে, কয়েকটি কারখানার শত শত শ্রমিক নির্মাণাধীন ভবন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে ইপিজেড থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করেন।

ইপিজেড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবসার উদ্দিন রুবেল জানান, নির্মাণাধীন কারখানার মধ্যে তিনজন শিশু ঢুকে পড়ে। নির্মাণ শ্রমিকরা চোর সন্দেহে তাদের মারধর করে। এ সময় দুই শিশু পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও একজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানতে পেরে কাজ শেষে সড়ক দিয়ে যাওয়া পোশাকশ্রমিকরা নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর চড়াও হয় এবং তাদের মারধর করে।

তিনি আরও বলেন, এ সময় নৌবাহিনীর একটি টহল গাড়ি ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। উত্তেজিত শ্রমিকরা নির্মাণ শ্রমিকদের রক্ষা করতে আসা নৌবাহিনীর সদস্যদের গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী ও র‍্যাব সদস্যরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এর আগে গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর আশপাশের কারখানা থেকে শত শত শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসেন। পরিস্থিতি শান্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একাধিকবার চেষ্টা চালায়।

শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সুলাইমান বলেন, ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে থমথমে পরিস্থিতি এখনও বিরাজ করছে।

পেনশন ও আনুতোষিকের মাইলেজ পদ্ধতি পুনর্বহাল এবং নিয়োগপত্রের দুটি শর্ত প্রত্যাহার করা না হলে ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফরা।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের বটতলী পুরাতন রেলস্টেশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মজিবুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ১৬০ বছর ধরে অবসরের পর মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পেয়ে আসছেন। কিন্তু ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেয়। এটি অন্যায় এবং বৈষম্যমূলক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের পক্ষে থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয় জটিলতা সৃষ্টি করছে।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের পর নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের ক্ষেত্রে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়। প্রথমত, তারা চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না। দ্বিতীয়ত, তাদের মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না। এ ছাড়া অবসরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক দেওয়া হবে। কিন্তু এই শর্তগুলো রেলওয়ের কোনো আইনে উল্লেখ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা জানান, এই সমস্যা সমাধানে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনবার সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল বারী, সহ-সভাপতি খুরশিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর এবিএম শফিকুল আলম প্রমুখ।