ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনায় স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ম্যানুয়ালি অপারেট করার কারণে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থেকে ২-৫ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। একই সঙ্গে বাতিলও হয়েছে দুটি ট্রেনের যাত্রা। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়। বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার।
কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ট্রেন লাইনচ্যুতির কারণে চলাচলের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ম্যানুয়ালি সেটি করতে হচ্ছে। ফলে বিলম্ব হচ্ছে ট্রেন চলাচল। শনিবার সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ১০টি ট্রেন কমলাপুর রেল স্টেশন ছেড়ে যায়। এর মধ্যে দুটি নির্দিষ্ট সময়ে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে গেলেও বাকি ৮টি ২ থেকে ৫ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে। এছাড়াও বাতিল হয়েছে জয়ন্তিকা ও অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস নামের দুটি আন্তঃনগর ট্রেন।
জানা যায়, সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কমলাপুর রেল স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেসের। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, গত পরশুদিন রাতে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল তার প্রেক্ষাপটে আমাদের স্বয়ংক্রিয় যে অপারেশন ব্যবস্থা ছিল সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেটি আজ ১২টায় পুনস্থাপন করা হয়েছে। এখন যে ট্রেনগুলো চলছে সেগুলো স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থায় ছেড়ে যাচ্ছে। প্রথমে ম্যানুয়ালি অপারেশন করায় ট্রেন বিলম্ব হয়েছে। যার কারণে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আশা করছি আগামীকালের মধ্যে এটি পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে।
প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে পাবনার কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোট সেবা। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এ স্পিডবোট নিয়ন্ত্রণকারী আ.লীগ নেতারা পলাতক থাকায় এ সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। কাজ না থাকায় সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে স্পিডবোট চালক ও এ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের। তাই দ্রুত সকল সংকট কাটিয়ে দ্রুতগতির এ সেবা চালুর দাবি যাত্রী ও চালক-কর্মচারীদের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লি¬উটিএ) তথ্য বলছে, ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর ও সময় বাঁচানোর লক্ষ্যে ২০১৬ সালের দিকে কাজীরহাট-আরিচা নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরির পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়। ১৩ কিলোমিটার দূরত্বের এই নৌপথে ৪টি ফেরি ও ৯টি লঞ্চ চলাচল করে থাকে। এর সাথে ১২ ও ১৮ সিটের প্রায় একশত স্পিডবোট চলতো দুইপাড়ে (আরিচা ও কাজিরহাট)। এতে করে এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের জলপথ পাড়ি দেয়া যেতো ১৫ থেকে ২০ মিনিটে। একারণে প্রতিদিন হাজারেরও অধিক মানুষ যাতায়াত করতেন স্পিডবোটে।
সড়কপথে ঢাকার সাথে পাবনার দূরত্ব ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার। যানজটের কবলে পড়লে লাগতে পারে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা সময়। সেখানে কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে ঢাকা যেতে সময় লাগে ৪ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা। দীর্ঘ সময় ক্লান্তির যাত্রায় ভোগান্তি কমাতে মানুষ এই নৌপথ বেছে নেন। এ রুট বেছে নেবার সবচেয়ে বড় কারণ দ্রুতগতির স্পিডবোট সেবা। কিন্তু প্রায় দীর্ঘ তিন মাস ধরে এ সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের।
কাজীরহাট ঘাট এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ইঞ্জিনবিহীন স্পিডবোটগুলো যমুনার চরে ও নদীর নালায় পড়ে আছে। কোনো কোনো বোটের রং নষ্ট হয়ে উঠে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে অন্যান্য যন্ত্রাংশ। দু'একজন চালকের দেখা মিলল আশেপাশে। এদিকে অল্প সময়ে যে পথ পারি দেয়া যেতো এ বোট সেবায়, সেটি না বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে মানুষের। বেচাকেনা কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ঘাট এলাকার দোকানিরা। একারণে বোটগুলো পড়ে থাকায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
এব্যাপারে ঘাটের নিয়মিত যাত্রী ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, আমি মানিকগঞ্জে চাকরি করি। সময় বাঁচাতে কুইক সার্ভিস বা স্পিডবোট ব্যবহার করি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সার্ভিস বন্ধ থাকায় অসুবিধায় পড়ে গেছি। বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের।
ঘাটের চায়ের দোকানদার আব্দুল বাতেন জানান, স্পিডবোট বন্ধ হওয়ায় এই নৌপথে যাত্রী সমাগম অনেকটাই কমে গেছে। অল্প কিছু যাত্রী আসেন, তারা লঞ্চ দিয়ে পার হন। ফলে বেচা-বিক্রি কমে গেছে। যখন স্পিডবোট চলতো তখন দিনে ৫/৭ হাজার টাকা বিক্রি হতো। আর এখন বিক্রি হচ্ছে দিনে ৫শ, সর্বোচ্চ হাজার টাকা।
এভাবে চললে দুর্মূল্যের বাজারে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী বলেন, দ্রুত স্পিডবোট চালু করা হোক। এতে সবারই স্বস্তি ফিরবে।
স্পিডবোট চালক বাপ্পী বলেন, এ ঘাটে ৫০/৬০ জন স্পিডবোট চালক রয়েছে। প্রায় তিনমাস বোট চলাচল বন্ধ থাকায় আমাদের উপার্জন একেবারে বন্ধ। জিনিসপত্রের যে দাম, নিয়মিত কাজ করেই সংসার চালানো কঠিন। সেখানে তিনমাস বসে থাকায় খুব অসহায় অবস্থায় পড়েছি আমরা।
ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রইচ উদ্দিন বলেন, এতদিন ঘাটের এই বোটগুলোর নিয়ন্ত্রণে আ.লীগ নেতারা ছিল। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, মানসম্পন্ন যাত্রীসেবা নিশ্চিত না করাসহ নানা অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। এর বাইরেও তারা নিজ নিজ এলাকায় ব্যাপক কুকর্ম করেছেন, একারণেই ভয়ে তারা আত্মগোপনে থাকায় বোটগুলো বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে এগুলোর রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে বলে জেনেছি। এখন কর্তৃপক্ষের উচিত নতুন করে রুট পারমিট দিয়ে দ্রুত এটাকে আবার চালু করা।
এদিকে সরকার পতনের পর স্পিডবোটের সাথে সম্পৃক্ত মালিক, চালক ও কর্মচারীরা পলাতক থাকায় এ সেক্টর দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি গ্রুপ। তিনটি গ্রুপের মধ্যে এ নিয়ে দ্বন্দ চলমান। তবে দ্রুত এ রুটে পূর্বের ন্যায় স্পিডবোট সেবা চালু করতে ইতিমধ্যে বোটগুলোর রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লি-উটিএ)। কাজিরহাট ও আরিচা রুটে ৩০টি করে মোট ৬০ ও কাজিরহাট-দৌলতাদিয়া রুটে ১০টি স্পিডবোট চলাচলের অনুমতি রয়েছে বলেও জানায় এ দপ্তর।
স্পিডবোট চালুর ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ এর নগরবাড়ি-কাজীরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল জানান, স্পিডবোট বন্ধ হওয়ার পর মালিকপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে, কোনো সাড়া না মেলায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে তাদের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে। আগ্রহী স্থানীয় অন্যান্য স্পিডবোট মালিকদের নতুন করে আবেদনের জন্য চিঠি দেয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে দ্রুতই স্পিডবোট চালু করা হবে।
রাষ্ট্র ও রাজনীতির পরিপূরক হচ্ছে অর্থনীতি। দেশ গঠনে রাষ্ট্র ও রাজনীতির সংস্কার করতে চাইলে সবার আগে অর্থনীতি সংস্কার প্রয়োজন। অর্থনীতির সংস্কার ছাড়া সামনের দিকে আগানো সম্ভব নয়।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) কর্তৃক বিআইআইএসএস এ আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ; অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রসঙ্গ’ শীর্ষক সংলাপে বক্তারা একথা বলেন।
সংলাপে বক্তারা বলেন, আমাদের পরিসংখ্যানের ভিত্তি হচ্ছে মিথ্যা। সেখান থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। পরিসংখ্যানকে ঠিক করতে হবে। অর্থনৈতিক কাঠামোকে অটোমেশনের আওতায় আনতে হবে। রফতানি পণ্যের বহুমুখিতা বাড়াতে হবে। আয়কর আদায়ের আওতা বাড়াতে হবে। আর অবশ্যই রাজনৈতিক ঐক্যমত ছাড়া এগুলো সম্ভব না। যদি আমরা রাজনৈতিক ঐক্যমত সৃষ্টি করতে পারি তাহলে মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য সমস্যাগুলোর সমাধানও করতে পারবো।
সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) চেয়ার মুনিরা খান বলেন, দেশ থেকে কিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেল, এখানে আমাদের সংস্কার আনতেই হবে। এখনো পাচার চলছে। মিডিয়া এবং ব্যাংক যখন বলে ১০টা ব্যাংক দুর্বল তখন সে ব্যাংকগুলোর লোকেরা তো টাকা উঠিয়ে নিবেই। টাকা তুলে সে হয় বাড়িতে লুকিয়ে রাখবে আর না হয় দেশের বাহিরে পাচারের ব্যবস্থা করবে।
সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, আস্থার সংকট বিগত সরকারের সময় ছিলো, এখনো আছে। আস্থার সংকট কাটাতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ যেটা এই আলোচনার মধ্যে আসছে। সেটা নিশ্চিত না করা গেলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। আবার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসলে রাজনৈতিক সংকট যাবে না।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের দুটি বিষয় একদম শেষ করে দিচ্ছে- এক ব্যাংকিং সুশাসন, আরেকটি এনার্জি সেক্টর। আমাদের পলিসিগুলোতে সংশ্লিষ্ট যারা আছে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। আমরা এমন পলিসি করি যেখানে সম্পৃক্তদের কোন সম্পর্ক থাকে না। ফলে সে পলিসিও বাস্তবসম্মত হয় না। বাস্তবায়নও হয় না।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আমরা কেউ স্বস্তিতে নাই। আমরা যেখানে আছি সেখান থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি। ইন্ডাস্ট্রিগুলো গ্যাস পাচ্ছে না। ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সুরক্ষা নেই। আমরা কার সঙ্গে কথা বলবো? এমন অনিশ্চয়তা থাকলে কেউ ভাল থাকবো না।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট সবুর খান বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে মূল হচ্ছে পরিসংখ্যান। দেশের সব পরিসংখ্যান সঠিক চাই। আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে পরিসংখ্যান। আমরা ব্যাংক থেকে ঋণ দিয়ে দিচ্ছি কিন্তু যাকে ঋণ দিচ্ছি তার ট্যাক্স ফাইলে সে সম্পদ আছে নাকি সেটা দেখি না। পৃথিবীর সবার ক্রেডিট রেটিং আছে কিন্তু আমাদের নাই।
যারা সুন্দর কথা বলে তাদের দরকার নাই। যারা কথা না বলে কাজ করতে পারে তাদের দরকার বলেও যোগ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন হচ্ছে না। আমাদের মূল কর্মসংস্থান হচ্ছে ইনফরমাল খাতে। ফরমাল খাতে আমাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। আমরা অধ্যাপক ইউনূসের ইমেজকে দেখিয়ে তো সেখানে কোন কাজ করছি না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, আমাদের জিডিপি ও জনসংখ্যার যে তথ্য সে তথ্য নিয়ে কিন্তু অনেক বড় প্রশ্ন আছে। আগে আমাদের তথ্য ঠিক করতে হবে। তাহলে আমরা পরিমাপ করতে পারবো যে খাদ্যের পরিমাণ কত লাগবে। সেজন্য আমাদের তথ্যের জায়গাটা ঠিক করতে হবে।
সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা না আসলে মূল্যস্ফীতিসহ সার্বিক পণ্যমূল্যে প্রভাব পড়ে। আমরা দেখি রাজনীতিবিদরা হয়ে গেছেন আমলাতান্ত্রিক আর আমলারা রাজনীতিবিদ হয়ে গেছেন। সেখান থেকে আমাদের বের হতে হবে। আমাদের এখানে ট্যারিফ কমিশন আছে কিন্তু তারা কোন কিছুর দাম নির্ধারণ করে না, সেখানেও সংস্কার আনতে হবে।
বারভিডার প্রেসিডেন্ট আব্দুল হক বলেন, বাজার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কো অপারেটিভ সোসাইটি করতে পারি কি না সেদিকে আমাদের চিন্তা করতে হবে। জাপানের মত শিল্পোন্নত দেশে এখনো কো-অপারেটিভ চালু আছে। ডলারে ঘুষ নেওয়া হয়েছে। সেটা নিয়ে ব্যাংকের ভোল্টে রাখা হয়েছে। অনেকের বাড়িতেও কোটি কোটি টাকা আছে, সেগুলো কিভাবে ব্যাংকে আনা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা বলেন, ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সরকারি সহায়তার মাধ্যমে সুরক্ষার আওতায় আনতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো তাদের ঋণ দিতে চায় না, সেক্ষেত্রেও আমাদের পলিসিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেনো তারা ঋণ পায়।
তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অল্প শিক্ষিত ও উচ্চশিক্ষিত তরুণদের নিয়ে নির্দিষ্ট কোন রোডম্যাপ এখনো আমাদের নেই। উচ্চশিক্ষিত বেকারদের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। আবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমরা ইকোনমিক জোন তৈরি করে তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করতে পারি।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের সাবেক আবাসিক প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ চাকমা বলেন, উপজাতিদের ক্ষেত্রে শুধু বৈষম্যহীন হলেই হবে না, তাদের ক্ষেত্রে পজিটিভ বৈষম্য করতে হবে। তাদের সেফটিনেটের আওতায় আনতে হবে। তাদের মধ্যে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে। তাদের নানা রকম সহায়তা দিয়ে আমাদের সবার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্সুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে যারা ডিফল্টার তাদের সবাইকে আমরা চিনি, আমরা তাদের আগেও গোপন রাখার চেষ্টা করেছি, এখনো হয়তো করে যাচ্ছি। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
ব্যাংক পুনরুজ্জীবিত করতে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সেজন্য আমরা যাদের ঋণ দিয়েছি তাদের ঋণগুলো নিয়মিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা কম করে হলেও যেনো নিয়মিত ব্যাংকে ফিরে আসে, বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সুপ্রভা সুভা জামান বলেন, ক্রনি ক্যাপিটালিজমকে আমাদের চ্যালেঞ্জ করতে হবে।অন্তর্বর্তী সরকার যতই সংস্কার করুক, সংস্কার ইউনিভার্সাল প্রসেসে না গেলে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক কুক্ষিগত করে নিবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা রহনপুর রেল স্টেশন থেকে কোনো পণ্য ছাড়াই ছেড়ে গেলো সবজি পরিবহনের স্পেশাল ট্রেন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে জেলার রহনপুর রেলস্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে ট্রেনটি। তবে এই ট্রেনে কোনো চাষি তাদের সবজি পরিবহন করেননি। ফলে প্রথমদিন ট্রেনটি ছেড়েছে কোনো প্রকার সবজি ছাড়াই।
রহনপুর এলাকার বাসিন্দা সবুর বলেন, পিকআপের থেকে ট্রেনের ভাড়া কম। তবে ট্রেনে পরিবহন করতে এই ভাড়ার পাশাপাশি কুলি খরচ, ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে মোকামের আলাদা পরিবহনে খরচ পড়ে যাচ্ছে কেজিপ্রতি ৩ টাকার বেশি।
অথচ সড়কপথে ট্রাকে মাল পরিবহন করতে তাদের খরচ হয় কেজিপ্রতি দুই থেকে আড়াই টাকা। রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মামুনুর রশিদ বলেন, রাতে পণ্যবাহী স্পেশাল ট্রেনটি রহনপুর স্টেশনে এসেছিল। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে কোনো কৃষিপণ্য ছাড়াই ট্রেনটি ছেড়ে গেছে। এই ট্রেনে কেউ কোনো সবজি পরিবহন করেননি।
জানা গেছে, জেলার আমনুরা স্টেশন দিয়ে ১৩টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে তেজগাঁও স্টেশনে থামবে ট্রেনটি। এতে প্রতি কেজি কৃষিপণ্যে খরচ পড়বে ১ টাকা ৩০ পয়সা