ভোলায় জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কবির হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অসম্মানজনক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করায় প্রতিবাদ সমাবেশ করছে জেলা শ্রমিক দল।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জেলা শ্রমিক দল আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় মো. কবির হোসেনের বহিষ্কারের দাবি জাননো হয়।
সভায় বক্তারা কবির হোসেনকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ উল্লেখ করে প্রকাশিত ভিডিও বার্তার বক্তব্যের জন্য দলের সবার কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।
বক্তারা অভিযোগ করেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কবির হোসেন সম্প্রতি তার ফেইসবুক আইডিতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক, যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক, যুগ্ম আহবায়কসহ সিনিয়ন নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মনগড়া ও অসম্মানজনক বক্তব্য দেন।
জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সহিদুল আলম মানিকেরকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের সেলিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি খন্দকার আল আমিন,যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফকরুল আলম ফেরদৌস, সংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির, জেলা শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ,ভোলা সদর উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আওলাদ হোসেন বাহার, সদস্য সচিব আব্দুল কাদের বিপ্লবসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থেকে মুক্তি ও নিজেদের আলাদাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম. নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রুপান্তর টিমের পক্ষ থেকে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ কর্মসূচি আগামীকাল রোববার (২৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়ে চলবে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) পর্যন্ত। প্রথমদিন নিজ নিজ ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অঙ্কন, সোমবার বিভাগ ভিত্তিক গণসংযোগ এবং মঙ্গলবার ঢাকা কলেজে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
- অধিভুক্ত মুক্তি ও স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে সড়কে অবস্থান শিক্ষার্থীদের
- সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনসহ ৩ দাবি
দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এসময় সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রুপান্তর টিমের সদস্যরা বলেন, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে, এ সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত। ফলে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নিয়ে এ কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল সেটি বিগত ৮ বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বিপরীতে এসব কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে নেমে আসে চরম বিশৃঙ্খলা। এক কথায় শিক্ষার মানের উন্নতির পরিবর্তে ঢাবি প্রশাসনের বৈষম্যমূলক বিভিন্ন নীতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার যথাযথ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
আমরা মনে করি, দীর্ঘদিনের অধিভুক্তির পরও যেখানে ঢাবির অধীনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার মানের আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি, সেখানে এমন অধিভুক্তি ধরে রাখা অর্থহীন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এখন বড় সমস্যা হচ্ছে নিজস্ব পরিচয়ের অভাব। এছাড়াও অ্যাকাডেমিক সেশনজটসহ, শ্রেণিকক্ষের তীব্র সংকট, ল্যাব সংকট, আবাসন সমস্যা, পরিবহণ সংকট, ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব, অ্যাকাডেমিক সিলেবাস অসম্পূর্ণ থাকাসহ পরীক্ষা মূল্যায়ণে গণহারে ফেল করিয়ে দেওয়ার মতো সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে সমাধানহীনভাবে চলছে।
শুধু তা-ই নয় বিভাগভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাবের পাশাপাশি, গবেষণার সুযোগের অপ্রতুলতাও বিদ্যমান। এসব থেকে মুক্তি পেতে আমাদের এ দাবিগুলো করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত মুক্তি ও স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের আরেক ফোকাল পার্সন আব্দুর রহমান বলেন, অধিভুক্ত মুক্তি ও নিজেদের অধিকায় আদায়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বারবার রাজপথে নামছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সাত কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে বারবার একে অপরের দিকে দায়িত্ব ঠেলে দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা আর এমন জটিলতার ধারাবাহিকতা চাই না। আমরা সমাধান চাই। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা এখন সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বা স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি তুলেছেন।
এ দাবি বাস্তবায়নের জন্য আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো থেকেই কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাইনি। তাদের এমন নিশ্চুপ অবস্থান আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।
তিনি বলেন, স্বায়ত্তশাসিত বা স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিকভাবে তিনটি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছি।
কর্মপরিকল্পনাগুলো হচ্ছে—
১. সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার অভিপ্রায়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
২. সংস্কার কমিশন অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সাত কলেজের সমন্বয়ে শুধু মাত্র একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবেন।
৩. সংস্কার কমিশন বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন। যাতে করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার কোনো ধরনের পরিবেশ তৈরি না হয়।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করা এসি ও নন-এসি বাসের ভাড়া কমানোর দাবিতে হরতালসহ নয়টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম নামে নারায়ণগঞ্জের একটি নাগরিক সংগঠন। প্রাথমিক কর্মসূচিতে ভাড়া কমানো না হলে আগামী ১৭ নভেম্বর অর্ধদিবস হরতালের পালন করবে সংগঠনটি।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির কথা জানান সংগঠনটির আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি।
এই রুটে নন-এসি বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা করার দাবি জানানো হয়। একইসাথে শিক্ষার্থীদের ভাড়া অর্ধেক করারও দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।
বাসভাড়া কমানোর দাবিতে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারণা, নাগরিকদের সাথে মতবিনিময়, মিছিল, সমাবেশ ও মশাল মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দাবি মানা না হলে ১৭ নভেম্বর অর্ধদিবস হরতালেরও ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
এ বিষয়ে রফিউর রাব্বি বলেন, যুগ যুগ ধরে সারাদেশে গণপরিবহন নিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতি বহাল রয়েছে। সরকার বদলালেও অরাজকতা দূর হয় না। সরকার তাদের দলীয় লোকজনকে অনৈতিক সুবিধা দিতে এই সেক্টরে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। যে সিন্ডিকেট বছরের পর বছর সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছে। শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে এই অরাজকতা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাব্বি জানান, নারায়ণগঞ্জে পরিবহন নিয়ে অরাজকতা দীর্ঘদিনের। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিভিন্ন সেক্টরের মতো এই পরিবহন খাতটি ছিল ওসমান পরিবারের চাঁদাবাজির অন্যতম উৎস। যথেচ্ছভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করে জনগণের দুর্ভোগ তৈরিতে স্থানীয় বিআরটিএ ও প্রশাসন সবসময় তাদের সহায়তা করেছে। ২০১১ সালের জুন মাসে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের বাস ভাড়া ২২ টাকা থেকে ৩২ টাকা বৃদ্ধি করায় এখানে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল।
তিনি আরও বলেন, 'বিআরটিএ'র ত্রুটিপূর্ণ প্রজ্ঞাপনেই অনিয়ম লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রজ্ঞাপনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব সাড়ে ১৯ কিলোমিটার দেখিয়ে (২ দশমিক ৩২ টাকা কিলোমিটার প্রতি) ভাড়া দেখানো হয় ৪৫ টাকা। প্রজ্ঞাপনে নারায়ণগঞ্জ টার্মিনাল থেকে যাত্রী উঠলে ভাড়া ৫৩ টাকা, চাষাঢ়া থেকে উঠলে ৫০ টাকা, নতুন কোর্ট এলাকা থেকে উঠলে ৪৮ টাকা, শিবু মার্কেট থেকে উঠলে ৪৫ টাকা এবং জালকুড়ি থেকে উঠলে ৩৯ টাকা। কিন্তু সব জায়গা থেকেই ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫৫ টাকা করে।
এছাড়া, প্রজ্ঞাপনে মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে দুরত্ব দেখানো হয়েছে সাড়ে ১৯ কিলোমিটার। কিন্তু বাস্তবতা যাচ্ছে কোন বাসই এখন শাপলা চত্বর ঘুরে যাতায়াত করে না। গত ৩০ আগস্ট সরকার ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১ দশমিক ৫০ টাকা কমালেও ভাড়া কমানোর কোন উদ্যোগ বিআরটিএ প্রশাসন গ্রহণ করেনি। আমরা জেলা প্রশাসনের সভায় এ সব অসঙ্গতি তুলে ধরলেও তা নিরসনে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় নাই। স্থানীয় প্রশাসন পরিবহন মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় যতটা তৎপর, যাত্রী সাধারণের অধিকার রক্ষায় ততটাই উদাসীন।'
বর্তমানে এ রুটে বন্ধন, উৎসব, গ্রীন ঢাকা, আসিয়ানসহ কয়েকটি পরিবহনের এসি ও নন-এসি বাস চলাচল করে। এসব পরিবহনের এসি বাসের ভাড়া ৮০ টাকা এবং নন-এসি বাসের ভাড়া ৫৫ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, খেলাঘর আসরের সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী'র সভাপতি মো. নুরুদ্দিন, জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু সাহা, বাসদের সদস্যসচিব আবু নাঈম খান প্রমুখ।