৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের

৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থেকে মুক্তি ও নিজেদের আলাদাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম. নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রুপান্তর টিমের পক্ষ থেকে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ কর্মসূচি আগামীকাল রোববার (২৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়ে চলবে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) পর্যন্ত। প্রথমদিন নিজ নিজ ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অঙ্কন, সোমবার বিভাগ ভিত্তিক গণসংযোগ এবং মঙ্গলবার ঢাকা কলেজে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এসময় সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রুপান্তর টিমের সদস্যরা বলেন, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে, এ সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত। ফলে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নিয়ে এ কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল সেটি বিগত ৮ বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বিপরীতে এসব কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে নেমে আসে চরম বিশৃঙ্খলা। এক কথায় শিক্ষার মানের উন্নতির পরিবর্তে ঢাবি প্রশাসনের বৈষম্যমূলক বিভিন্ন নীতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার যথাযথ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

আমরা মনে করি, দীর্ঘদিনের অধিভুক্তির পরও যেখানে ঢাবির অধীনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার মানের আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি, সেখানে এমন অধিভুক্তি ধরে রাখা অর্থহীন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এখন বড় সমস্যা হচ্ছে নিজস্ব পরিচয়ের অভাব। এছাড়াও অ্যাকাডেমিক সেশনজটসহ, শ্রেণিকক্ষের তীব্র সংকট, ল্যাব সংকট, আবাসন সমস্যা, পরিবহণ সংকট, ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব, অ্যাকাডেমিক সিলেবাস অসম্পূর্ণ থাকাসহ পরীক্ষা মূল্যায়ণে গণহারে ফেল করিয়ে দেওয়ার মতো সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে সমাধানহীনভাবে চলছে।

শুধু তা-ই নয় বিভাগভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাবের পাশাপাশি, গবেষণার সুযোগের অপ্রতুলতাও বিদ্যমান। এসব থেকে মুক্তি পেতে আমাদের এ দাবিগুলো করা হয়েছে।

এর আগে গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত মুক্তি ও স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের আরেক ফোকাল পার্সন আব্দুর রহমান বলেন, অধিভুক্ত মুক্তি ও নিজেদের অধিকায় আদায়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বারবার রাজপথে নামছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সাত কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে বারবার একে অপরের দিকে দায়িত্ব ঠেলে দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা আর এমন জটিলতার ধারাবাহিকতা চাই না। আমরা সমাধান চাই। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা এখন সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বা স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি তুলেছেন।

এ দাবি বাস্তবায়নের জন্য আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো থেকেই কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাইনি। তাদের এমন নিশ্চুপ অবস্থান আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।

তিনি বলেন, স্বায়ত্তশাসিত বা স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিকভাবে তিনটি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছি।

কর্মপরিকল্পনাগুলো হচ্ছে—

১. সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার অভিপ্রায়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

২. সংস্কার কমিশন অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সাত কলেজের সমন্বয়ে শুধু মাত্র একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবেন। 

৩. সংস্কার কমিশন বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন। যাতে করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার কোনো ধরনের পরিবেশ তৈরি না হয়।