নীলফামারীর ডোমারে বিক্ষোভ মিছিল-প্রতিবাদ সভায় বাধা, অফিসে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রায় ১২ বছর পর আদালতে মামলা দায়ের করেছে জামায়াতে ইসলামী। দায়ের করা এই মামলার আওয়ামী লীগের ৭৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মৃত ব্যক্তিসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর নীলফামারী জেলা জজ আদালতের আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুল হক। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে একজন মৃত ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। মামলার ৭৩ নম্বর আসামি দুলাল হক সরকার (৫৫) চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি মারা গেছেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাগলা বাজার এলাকার তবিবার রহমানের ছেলে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১২ সালে ৫ ডিসেম্বর দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার শিবির কর্মী মুজাহিদুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বাধা দেন ডোমার থানা পুলিশের সদস্যরা। পুলিশের বাধায় সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ায় জামায়াত নেতাকর্মীরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাজার সংলগ্ন জামায়াতের অফিসে গিয়ে নেতাকর্মীদের মারধর করে অফিস ভাঙচুর ও অফিসের ভেতরের মালামাল লুট করেন। সে সময় পুলিশের সহযোগিতা চাইলে উল্টো জামায়াত কর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। অফিস ভাঙচুরের পর আওয়ামী লীগ কর্মীরা স্টেশন সড়কের অবস্থিত শিবিরের অফিস ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় সে সময় জামায়াত মামলা করার আবেদন করলেও থানা সেই মামলা গ্রহণ করেন নি।
মৃত দুলাল হোসেনের ছেলে সাজু বলেন, গত ৫ জানুয়ারি আমার বাবা মারা যান। তিনি তো এখন বেঁচে নেই। একজন মৃত ব্যক্তিকে কেন আসামি করা হয়েছে সেটি বলতে পারবো না।
এদিকে মামলায় ২৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে ডোমার সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আইনুল হককে। তিনি বলেন, জামায়াত নেতা বক্করের সাথে আমার জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিষয়টি আমি জেলা আমিরসহ স্থানীয় জামায়াত নেতাদেরও অবগত করেছি। এখন দেখছি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে সেখানে আমার নাম রয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুল হক বলেন, ঘটনায় পর পরই আমরা মামলা করার আবেদন করেছিলাম কিন্তু সেই মামলা আবেদন নেওয়া হয়নি। উল্টো আমাদের লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই সময় যে মামলার ড্রাফটি সাজানো হয়েছিল সেটা দিয়ে মামলা করা হয়েছে। নতুন করে কোনো সংযোজন-বিয়োজন করা হয়নি। এর মধ্যে একজন ভাই মারা গেছেন সেটা আমাদের জানা ছিল না। জানা থাকলে নামটা আসতো না
ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম বলেন, মামলার কোনো আসামি যদি মারা যায় সেটি তদন্তপূর্বক নাম বাদ যাবে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত খেপুপাড়া রাডার স্টেশনটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে অচল হয়ে রয়েছে। যা উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি গ্রহণে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।
১৯৬৯ সালে জাপানি সংস্থা জাইকার সহযোগিতায় নির্মিত এই রাডার স্টেশনটি ২০০৮ সালে আধুনিকায়ন করা হয়। তবে ২০১৮ সালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায় এবং ২০২১ সালে মেরামত সত্ত্বেও পুনরায় রেডিয়েশন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রাডার স্টেশনের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর জব্বার শরীফ জানান, "ফ্রিকোয়েন্সি ইমেজ শাখার যন্ত্রাংশ মেরামত করা হলেও রেডিয়েশন সমস্যার কারণে ঘূর্ণিঝড়ের গতি ও তীব্রতা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। সমস্যার সমাধানের জন্য জাইকাকে নিয়মিত জানানো হচ্ছে।"
মহিপুর মৎস্য বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন মাসুম বলেন, ‘জেলেরা ঝুঁকি নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। সঠিক সময়ের পূর্বাভাস পেলে তারা নিরাপদে ফিরে আসতে পারত। আমরা দ্রুত রাডার স্টেশনটির মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও দানায় খেপুপাড়া রাডার স্টেশনের প্রয়োজনীয়তা প্রকট হয়ে উঠেছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি, এবং রাডার কর্তৃপক্ষ পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।’
উপকূলীয় জনগণকে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হয়, তাই রাডার স্টেশনটির কার্যকরী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি রাডারটি সচল হয়, তাহলে দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি নিতে এবং ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সহায়তা করবে।
জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে উঠে এসেছে ভারতের দিল্লি। রাজধানী ঢাকার অবস্থান ১১ নম্বরে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৮টা ১২ মিনিটে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
তালিকার শীর্ষে অবস্থান করা দিল্লি শহরের বায়ুর মানের স্কোর হচ্ছে ২২৪ অর্থাৎ সেখানকার বায়ু ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীনের বেইজিং। এই শহরটির দূষণ স্কোর ২১২ অর্থাৎ সেখানকার বাতাসও ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর এবং এই শহরটির দূষণ স্কোরও ২০৪ অর্থাৎ সেখানকার বায়ুর মানও ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে উগান্ডার কামপালা।
রাজধানী ঢাকা রয়েছে ১১ নম্বরে। এই শহরের দূষণ স্কোর ১২০ অর্থাৎ এখানকার বাতাস সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর। বিশেষ করে যাদের অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আছে তাদের জন্য ঢাকার বায়ু ক্ষতিকর অবস্থায় রয়েছে।
স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজবাড়ী জেলায় পদ্মা নদীতে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার করার অপরাধে ২৯ জন জেলেকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় জব্দকৃত ১লাখ ৫১ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং জব্দকৃত ৫৩ কেজি ইলিশ মাছ এতিমখানায় দান করা হয়।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার পদ্মা নদীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর থেকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার অংশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা মৎস্য অধিদপ্তর যৌথ বাহিনী সাথে নিয়ে এ অভিযান চালায়।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারে নামলেই আমরা অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তাদের নিয়মিত জেল, জরিমানাসহ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছি। আগামী ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ই অক্টোবর থেকে গতকাল ২৫শে অক্টোবর পর্যন্ত ১৩দিনে জেলায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে মোট ৯৭ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, ৭২ হাজার ৪০০ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও এই ১৩দিন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারে ব্যবহৃত অবৈধ ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ও ৮৩৫ কেজি ইলিশ মাছ জেলেদের কাছ থেকে জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানায় দান করে দেওয়া হয়েছে।