ফেনীতে ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো সদর উপজেলার কাজীরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের প্রচার সম্পাদক কামরুল হাসান প্রকাশ বোমা কামরুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে সদর উপজেলার কাজীরবাগ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপুর এলাকা থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেনী মডেল থানা পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কাজীরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের প্রচার সম্পাদক কামরুল হাসানের সশস্ত্র হামলার একটি সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হামলার সময় তাকে মুখে কাপড় বেঁধে থাকতে দেখা যায়।
যৌথ বাহিনী সূত্র জানায়, রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর ৪১ মিডিয়াম রেজিমেন্টের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা করা হয়।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, গ্রেফতার কামরুল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে চলতি বছর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ জনে। এছাড়া গত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ১৩৯ জন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৯১৯ জনে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১ হাজার ৩৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এসময়ে নতুন করে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা।
আক্রান্ত ১০৩৯ জনের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছেন ৩৯২ জন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ২১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৭৭ জন, খুলনা বিভাগে ১০১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫১ জন, রংপুর বিভাগে ২৪ জন এবং সিলেট বিভাগে ৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। অপরদিকে এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন। যা দেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সারজিস আলমকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিষদের ২য় সভায় জনাব সারজিস আলমকে সাধারন সম্পাদক এবং জনাব মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সনের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের কল্যাণার্থে তাদের পরিবারকে আর্থিক ও মানবিক সহায়তা, পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থান বা অন্য কোনো উপযুক্ত সুবিধা এবং আহত বা পঙ্গুত্ববরণকারী ব্যক্তিগণের ঔষধপত্রসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান, কর্মসংস্থান, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা বা অন্য কোনো উপযুক্ত সুবিধা প্রদান করা এই ফাউন্ডেশনের প্রধান লক্ষ্য ৷
একইসাথে এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত একটি অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবামূলক এবং জনকল্যাণমূলক বেসরকারি সংস্থা ৷
উল্লেখ্য, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রথম বৈঠকের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া আন্দোলনের নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহতদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা প্রদান করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে এই বৈঠকে।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সারা দেশের দুর্গত এলাকার এক হাজার ৫০০ মানুষকে ঘর করে দেবে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। যেগুলোতে আনুমানিক ৪০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। গৃহায়ন প্রকল্পের পাশাপাশি দুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে বলে জানান তিনি।
রোববার (২১ অক্টোবর) ফেনীর মিজান ময়দানে বন্যার্তদের মাঝে অটোরিকশা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান,বন্যার্তদের জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ৭১ কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু হচ্ছে। আমরা ত্রাণ বিতরণ পরবর্তী কিছুটা সময় নিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের করা হাজার হাজার আবেদন সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এরমধ্যে দুর্গত এলাকার এক হাজার ৫০০ মানুষকে ঘর করে দেয়া হবে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ফাউন্ডেশনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ উত্তরাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্য থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০০ জনকে অটোরিকশা দেওয়া হচ্ছে। আজকে ফেনীতে ৪০টি অটোরিকশা বিতরণের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের শুরু হয়েছে।
উপকারভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সাধারণত তিনটি ধাপে আবেদন যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত উপকারভোগী নির্বাচন করে। এতে প্রায় শতভাগ স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করে। ইতোমধ্যে উপকারভোগী নির্বাচনের কাজ শেষ হয়েছে। আমরা একদম প্রান্তিক পর্যায়ে গিয়ে গ্রামে গ্রামে খোঁজ নিয়ে উপকারভোগী নির্বাচন করি। এ জন্য কিছুটা সময় লাগে।
বন্যায় ফেনীতে কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ফেনীতে বন্যার্ত ২২ হাজার মানুষকে একটি করে ২৫ কেজির চালের বস্তা দেওয়া হয়েছে। কয়েক ধাপে শুকনো খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য বিতরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ের ত্রাণ কার্যক্রমে সবাইকে গণহারে দেওয়া হয়, যেজন্য সঠিক তথ্য-উপাত্ত রাখা সম্ভব হয় না। পরবর্তী সময়ের সকল উপকারভোগীর বিস্তারিত তথ্যই আমাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এ সময় ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) গাজী মীর ইকবাল হোসেন, মাদরাসাতুল হিদায়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলীসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ ও স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ তাদের পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতপ ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।
পরিবারে অপর সদস্যরা হলেন, আনভীরের মা আফরোজা বেগম, ভাই সাদাত সোবহান, সাদাত সোবহানের স্ত্রী সোনিয়া ফেরদৌস সোবহান, সায়েম সোবহান, সাবরিনা সোবহান, সাফিয়াত সোবহান ও সাফওয়ান সোবহান।
দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন সার্বিক) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুদকের উপপরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
আবেদনে বলা হয়, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ তাদের পরিবারের আট সদস্যদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, ভুমি জবরদখল, ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জন, স্থানান্তর, হস্তান্তর, রূপান্তরসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সম্পৃক্ত ধারার অপরাধ করার অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
গোপনসূত্রে জানা গেছে, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ অর্থ পাচার ও দেশত্যাগের পরিকল্পনা করেছেন। এ কারণে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন।