করোনা যুদ্ধে দ.কোরিয়ার রাষ্ট্রপতির নেতৃত্ব চায় ডব্লিউএইচও
করোনা ভাইরাসকরোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুন জে-ইনকে নেতৃত্ব দিতে আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস।
সোমবার (৬ এপ্রিল) ফোনালাপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান এ আহ্বান জানান বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
টেড্রোস আধানম দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুন জে-ইনকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে আহ্বান জানান, যাতে অন্যান্য দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার নেওয়া পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারে।
মুনের সঙ্গে ২৫ মিনিট ফোনে কথা বলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস।
তিনি বলেন, সবার জন্য করোনা পরীক্ষা, দক্ষিণ কোরিয়ার এই কৌশল ব্যাপকভাবে কার্যকর হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, সারা বিশ্বের নেতাদের দক্ষিণ কোরিয়ার পদ্ধতি থেকে শিখতে উৎসাহিত করা উচিত।
এ সময় বিশ্ব নেতাদের আফ্রিকান দেশগুলোতে টেস্ট কিট এবং অন্যান্য চিকিৎসা ডিভাইস সরবরাহ করার বিষয়ে গভীর মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান টেড্রোস।
আগামী মে মাসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সভায় মূল বক্তব্য দিতে মুন জে-ইনকে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার অভিজ্ঞতা একটি ভালো সুযোগ বলে মন্তব্য করেন টেড্রোস।
ফোনালাপে মুন জে-ইন বলেন, আমাদের সরকার নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং গণতন্ত্রের তিনটি প্রধান নীতি অনুসরণ করে কোভিড-১৯-এর মোকাবিলা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মতে দক্ষিণ কোরিয়া মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেছে।
টেড্রোস আধানমকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি জানান, মহামারি নিয়ে প্রায় ২০ বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে ইতোমধ্যে তার ফোনালাপ হয়েছে। তিনি সেইসব দেশকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মুন বলেন, অভূতপূর্ব বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সঙ্কটের মধ্যে ডব্লিউএইচও’র ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সংস্থাটি এই ভাইরাসকে পরাস্ত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা রাখি।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস পরীক্ষায় সহযোগিতার জন্য ১২১টি দেশের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
কোন কোন দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে সহযোগিতা চেয়েছে, তা অবশ্য বলেননি ওই কর্মকর্তা। তবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট নির্মাতা দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ও ইতালিসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
২০ জানুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়া প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। দেশটিতে মোট ৯ হাজার ৫৮৩ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছে ১৫৮ জন। তবে গত তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ বা তার নিচে রয়েছে।
চীনের পর করোনা ভাইরাস দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু ব্যাপক পরীক্ষাসহ গৃহীত অন্যান্য কার্যক্রমে দেশটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসে।
ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টির আগেই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার নেওয়া কার্যকর পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়।